আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!!

আমরা কোন স্প্যাম পাঠাবোনা। ওয়াদা।

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০১৪

LHCডেকে আনবে কি পৃথিবীর ধ্বংস নাকি সমাধান::[পর্ব--৪] সমাপ্ত



LHC : Large Hadron Collider। এর মধ্যে আমরা মোটামুটি প্রথম শব্দ আর শেষ শব্দ নিয়ে কথা বলেছি। এই মধ্যপদটির মানে কি?
নিউক্লিয়াসের মাঝে যারা ঘাপটি মেরে আছেন---প্রোটন আর নিউট্রন----তারা আবার ছোট ছোট কিছু কণা দিয়ে তৈরী, যাদের Quark বলে। তো, যারা কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি(প্রোটন, নিউট্রন) তাদের একটা সাধারন নাম হল Hadron (গ্রীক adros থেকে এসেছে যার মানে 'ভারী')। নিউক্লিয়াসের বাইরে যারা আছেন--- ইলেক্ট্রন এবং  আরো কিছু কণিকা যেমন মিউওন,যেগুলো কসমিক রশ্মি তে পাওয়া যায়---এরা আবার কোয়ার্ক দিয়ে তৈরী নয়। এদের তাই অন্যনাম---Lepton(গ্রীক leptos মানে,----ঠিক ধরেছেন 'হালকা')।
আমাদের LHC তে প্রোটন ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই জন্য নামের মাঝে Hadron। নামকরনের সার্থকতা বোঝা গেল?

LHCডেকে আনবে কি পৃথিবীর ধ্বংস নাকি সমাধান::[পর্ব--২]

আগের পর্বে লিখেছিলাম---পরমানুর ঘরে উঁকি দিতে হলে বা সেটার ঘরে সিঁদ কাটতে হলে আমাদের দরকার বিশেষ অস্ত্র----আর সেই অস্ত্র হল Particle Accelerator।
নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এইটা এমন এক যন্ত্র যেটা ইলেক্ট্রন বা প্রোটন কে ত্বরন দেয়। ত্বরন বা Acceleration জিনিসটাই বা কি? ধরুন, আপনি এক পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামছেন। আপনি দেখবেন যে আপনার নামার গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। একটা সময় প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে নামবেন। এই যে ধীরে ধীরে ছুট লাগানো---একেই আমরা বলি ত্বরন। আপনি যত দীর্ঘ সময় ধরে বা যত উঁচু পাহাড় থেকে নামবেন---আপনার 'অধঃপতনের' বেগ ততই বাড়বে(অবশ্য এর মধ্যে যদি হুমড়ি খেয়ে না পড়েন)।
আমরা আগেই জেনেছি যে পরমানু ভাঙ্গতে দরকার ক্ষিপ্র গতির মৌলিক কণিকা। যত জোরে আমরা তাকে

LHCডেকে আনবে কি পৃথিবীর ধ্বংস নাকি সমাধান::[পর্ব--১]

আমাদের চারপাশের এই অতিপরিচিত জগতে অনেক রহস্য আছে, আছে অনেক জটিল ধাঁধা। মানবজাতির একটা অংশ, সভ্যতার প্রত্যুষেই শপথ নিয়েছিল এই সব রহস্যের নিগড় ছিড়ে বেরিয়ে আসার। তারা শপথ নিয়েছিল রহস্য কে বুঝতে হলে যুক্তি দিয়ে বুঝতে হবে।
এরাই আমাদের আজকের বিজ্ঞানীদের পুর্বসূরী। বিভিন্ন যুগে তারা নিজেদের জীবন বাঁজি রেখেছেন---না অর্থ প্রাপ্তির কথা মনে রেখে নয়। নিছক কৌতুহল মেটানোর জন্যে আর পরে যুক্তির মশাল ধরে রাখতে অনেকে প্রান পর্যন্ত দিয়েছেন।
আজ আমরা অ-নে-ক দূর এগিয়ে এসেছি। প্রযুক্তি আমাদের নিত্য সহায়। আমাদের অনেকে প্রেমিকা ছাড়া বাঁচতে পারি কিন্তু, ইন্টারনেট/পিসি/মোবাইল ফোন ছাড়া নয়। In fact অনেকে এই সবের সহায়তায়ই সম্পর্ক ছেদ করেন 

LHCডেকে আনবে কি পৃথিবীর ধ্বংস নাকি সমাধান::[পর্ব--৩]

ইতোমধ্যে প্রায় সকলেই জেনে গেছেন সুখবরটি.....
যারা জানেন না তাঁদের জন্যে সংক্ষেপে জানিয়ে দিই--- বহু আরাধ্য হিগস কণিকার দেখা খুব সম্ভবত আমরা পেতে যাচ্ছি। আজ মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে অবস্থিত এই পৃথিবীর অন্যতম প্রধান কণা-ত্বরণায়ক (Particle accelerator) LHC এর বিজ্ঞানীরা এক আনুষ্ঠানিক ঘোষনায় জানিয়েছেন--তাঁরা হিগস বোসনের মত 'একটা কিছু'র দেখা পেয়েছেন। এবং তাঁরা বেশ ভাল রকম নিশ্চিত তাঁদের এই আবিষ্কারের ব্যাপারে। সাদা কথায় এই হল গিয়ে খবর। এই বার খবরের পেছনের খবর আর সঙ্গে রয়েছে কিছু তাফসীর ও (ক্ষেত্রবিশেষে) তর্জমা।

ডার্ক এনার্জীর মাথা মুণ্ডু

ধরা যাক একটা ক্লাশে আপনি বসে আছেন এবং সাবজেক্টটা ধরা যাক সার্জারীর এর উপর।তো যিনি পড়াচ্ছেন সে পড়াতে পড়াতে বেসিকের জায়গায় বলে বসলেন,"আসলে এটা ভালো বোধগম্য নয় কেন এমন হয়!" এ অবস্হায় আপনি কি আশা করতে পারেন?যাই হোউক, আজকে আমি একটু ডার্ক এনার্জি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।আজকে আমি কিছু বলার সাহস করবো না কারন আমি নিজেই এটা ভালো বুঝি না।তাই আমি সবার কাছে ফিডব্যাক চাইবো যাতে করে তারা তাদের আইডিয়া গুলো একটু শেয়ার করবেন, যাতে এটা বোধগম্যতার মাঝে পড়ে!প্রথমে একটা প্রশ্ন আসতে পারে ডার্ক এনার্জি কি?আসলে ডার্ক এনার্জি ধরা যাক একটা হাইপোথেটিক্যাল এনার্জি যা সর্বক্ষেত্রে সমানভাবে বিরাজমান, তবে এটা দৃশ্যবান নয়।এখন এটা কি আলো শুষে নেয় নাকি এক্স-রে নির্গমন করে সেটার ব্যাপারে আমি আসবো না।কারন আমি এই লেখা নিয়ে ভয়ে আছি কোথাও কোনো ভুল হলো কিনা! যাই হোক, ১৯৯৮ সালে বিজ্ঞানীরা ধরতে পারলেন আসলে মহাবিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ বস্তুই নাকি আমাদের দৃস্টি গোচরে থাকে।একে তখন থেকে ডার্ক এনার্জি নামে প্রয়াস করা হয়।আরো আশ্চর্য বিষয় হলো এই এনার্জি নাকি আমাদের চারপাশে সমভাবে বিস্তৃত যার ঘনত্ব ১০ টু দি পাওয়ার -২৬ কিলোগ্রাম পার সেন্টিমিটার যা অনেকটা একটা হাইড্রোজেন অনুর সমান।আমরা এডউইন হাবল সাহেবের নাম অনেকেই শুনেছি।উনার মতে যে গ্যলাক্সির দূরত্ব তার দূরে সরে যাওয়া গতির সমানুপাতিক, তবে এই দূরে সরে যাওয়াটা এমন নয় যে দৌড়ে চলে যাওয়া, এটা অনেকটা এরকম একটা বেলুনের ভিতর থাকা বস্তু গুলো দূরে সরে যাচ্ছে একে অপরের থেকে যখন বেলুনটা প্রসারিত হচ্ছে, অনেকটা রাবারের মতো!আর সেজন্যই আমাদের মহাবিশ্বের আকার হয়তো হবে অনেকটা রাগবি বলের মতো। এখন আরেকটু ডীপে যাই, ডার্কএনার্জী কি রকম বা জিনিসটা কি?আচ্ছা, এ ব্যাপারে একটু যে বলেছিলাম মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে এটার সাথে এর একটা সম্পর্ক আছে, যেটাকে আমরা কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট হিসেবে বলতে পারি যেটাকে ডার্ক এনার্জীর একটা অনন্য ফর্ম।যদি আমরা হাবল সাহেবের সমীকরন বিবেচনা করি।এর একটা ক্যালকুলেশন আছে যেটা লেখার জন্য হাত নিশপিশ করছে, কিন্তু কিভাবে দেবো বুঝতে পারছি না। তবে এটাই শুধু বলি এই কনস্ট্যান্ট দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় যে ডার্ক এনার্জীর ঘনত্ব সর্বত্র এরকম হোমোজিনিয়াস বা সমান কেন! ডার্ক এনার্জীর আরেকটা ফর্ম হলো এটা এমন একটা স্কেলার ফিল্ড যেটা তখনই ডার্ক ম্যাটারে পরিণত হবে যখন এটা বেরিয়োনিক পার্টিক্যলগুচ্ছের দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হবে যার ফলে একটা ডায়নামিক ফিল্ডের সৃস্টি হবে।এখানে বেরিয়োনিক পার্টিক্যাল হলো তিন ধরনের কোয়ার্কের সমস্টি আর ডায়নামিক ফিল্ড হলো স্পেস ডাইমেনশনে সৃস্ট কোনো স্কেলার ফিল্ড।বোধ হয় জিনিসটা পেচিয়ে ফেললাম।যাই হোউক সোজা বাংলায় এটাকে আমরা এমন একটা এনার্জি ফিল্ড ধরি যেটা স্কেলার ফিল্ডের চরিত্র প্রাপ্ত! এখন ডার্ক এ্যানর্জীর কিছু প্রমান নিয়ে আলোচনা করি!

সুপারনোভা বিস্ফোরন

সদাপ্রসারমান মহাবিশ্বে গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে যেটার গতি নির্ভর করছে তার দূরত্বের উপর (হাবলের সূত্রানুসারে)।সুপারনোভার মাধ্যমে আমরা এর ইফেক্টটা এভাবে মাপতে পারি: এদের নিঃসরিত আলোর বর্ণালীর রেডশিফ্ট বলে দিতে পারে তারা কত গতিতে তার কাছের পারিপার্শ্বিক জগত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে আর এভাবে তাদের উজ্জলতাই প্রমান করে দেয় তাদের গতি।এটা দেখা গেছে গ্যালক্সীগুলো বিলিয়ন বছর আগে যে গতি নিয়ে ছোটা শুরু করেছিলো একে অপরের থেকে সেটা এখনকার নিকট অতীতের গতি থেকে বেশ কম, যার উপর জোর দেয়া যায়।তার মানে এখনকার এক্সপানশন রেট আগের চেয়ে বেশী- এটাকে আমরা ডার্ক এনার্জির একটা চরিত্র বা সিগন্যাচার ধরতে পারি।আজ এটুকুই! কসমিক মাইক্রোওয়েভের মূল বিকিরন!

সন্ধান মিললো ঘূর্ণায়মান তারার কেন্দ্রে কৃষ্ণ গহ্বরের

আমাদের মহাবিশ্বের জোড়াতারাদের কথা আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি। মহাবিশ্বে তারা বেশ সহজলভ্যই বটে। এই যেমন আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথেই এরকম প্রায় ৮০টি জোড়াতারা ব্যবস্থার সন্ধান মিলেছে। এদের সবচেয়ে বড় যে বৈশিষ্ট্য তা হলো এরা পরষ্পর মিলে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ গতিতে আবর্তন করতে থাকে। ফলে কেন্দ্রবিমুখী বলের পরিমাণও থাকে বিশাল। 

তো এই ব্যবস্থার মাঝে যদি কোনো একটি সাধারণ একটি নক্ষত্র হয় এবং অন্যটি একটি কৃষ্ণবিবর হয় তবে এ ব্যবস্থাকে Be তারকা ব্যবস্থা বলে। জ্যোতির্বিদদের খাতা-কলমে তাত্ব্বিকভাবে এতদিন পড়ে ছিল এই Be তারকাব্যবস্থা। সম্প্রতি স্প্যানিশ জ্যোতির্বিদদের দুরবিনে প্রথমবারের মতো ধরা পড়লো এই ব্যবস্থাটি। 

আবিষ্কৃত এই কৃষ্ণবিবরটি যে নক্ষত্রকে কেন্দ করে ঘুরে তার নাম MWC 656 লাসেরটা (লিজার্ড) তারকামণ্ডলে অবস্থিত এই তারকাব্যবস্থা পৃথিবী থেকে প্রায় ৮৫০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই তারাটি এত দ্রুত ঘুরছে যে যদি এর পৃষ্ঠের গতি মাপা হয় তবে তা হবে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১০ লক্ষ কিলোমিটার! 

উল্লেখ্য ২০১০ সাল থেকে বিজ্ঞানীরা এই অঞ্চল থেকে আগত স্বচ্ছ গামা রশ্মি পর্যবেক্ষণ করে আসছিলেন। বর্ণালী বিশ্লেষণ করে তারা এর সঙ্গী তারকাটিকে প্রথম থেকেই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে আসছিলেন। কারণ ৩.৮ থেকে ৬.৯ গুণ সৌরভর বিশিষ্ট কোনো নিউট্রন তারার অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয় (৩ সৌরভরের উপরে নিউট্রন তারা থাকা অসম্ভব), তবে অবশ্যই এটা একটা কৃষ্ণবিবর। আর সেটাই ধরা পড়লো স্প্যানিশদের লিভারপুল এবং মারকেটর দুরবিনে।

তথ্যসূত্রঃ সায়েন্স ডেইলি।

হকিং বিকিরণ

কৃষ্ণগহ্বর হতে নিঃসৃত বিকিরণ হকিং বিকিরণ হিসেবে পরিচিত। শুনতে অবাক লাগার কথা, কারণ কৃষ্ণগহ্বরকে আমরা অন্ধকূপ বলেই চিনি। যা সবকিছু নিজের ভিতর টেনে নেয় আর কোনো কিছুই এর থেকে বের হতে পারে না। তাহলে সেখান থেকে বিকিরণ কীভাবে সম্ভব? বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেন যে কৃষ্ণগহ্বরের নির্দিষ্ট এন্ট্রপি আছে। সুতরাং এর নির্দিষ্ট তাপমাত্রাও আছে। যে কোনো বিশেষ তাপমাত্রায় বস্তু নির্দিষ্ট হারে বিকিরণ করে থাকে। তপ্ত লৌহদন্ড যে বিকিরণের ফলে লাল হয়ে যায় তা আমরা চোখেই দেখতে পারি, তবে কম তাপমাত্রায়ও বিকিরণ হয়, সেটা দৃষ্টিগ্রাহ্য নয় পরিমাণে কম বলে। সুতরাং কৃষ্ণগহ্বরের তাপমাত্রা শূন্য না হলে তার থেকে বিকিরণ হওয়া উচিৎ।

কৃষ্ণগহ্বরের তাপমাত্রা এর ভরের উপর নির্ভর করে। ভর যত কম হবে, তাপমাত্রা ও বিকিরণের হার তত বেশি হবে। এক সৌরভরবিশিষ্ট একটি কৃষ্ণগহ্বরের তাপমাত্রা মাত্র ৬০ ন্যানোকেলভিন, অর্থাৎ এরূপ কৃষ্ণগহ্বর যে পরিমাণ নিঃসরণ বা বিকিরণ করে তার চেয়ে অনেক বেশি মহাজাগতিক ক্ষুদ্রতরঙ্গ শোষণ করে। এক চন্দ্রভরবিশিষ্ট (৪.৫ × ১০২২ কিলোগ্রাম) কৃষ্ণগহ্বর -২৭০.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস (২.৭ কেলভিন) তাপমাত্রায় সাম্যাবস্থায় আসে অর্থাৎ যতখানি শোষণ করে ততটুকু বিকিরণ করে। আর এর চেয়ে ছোট আদি কৃষ্ণগহ্বরগুলি শোষণের চেয়ে বেশি বিকিরণ করে এবং ভর হারায়।

এই বিকিরণ একপ্রকার কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ যা ঘটনা দিগন্তের নিকটে কোয়ান্টাম ইফেক্টের কারণে কৃষ্ণবিবর হতে নিঃসৃত হয় বলে মনে হয়। পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং এর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে যিনি গাণিতিক উপায়ে এর তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দান করেন। এছাড়া পদার্থবিদ জ্যাকব বেকেনস্টাইন বলেন যে কৃষ্ণবিবরের একটি নির্দিষ্ট অশূন্য তাপমাত্রা ও এন্ট্রপি থাকা উচিৎ। হকিং ১৯৭৩ সনের সেপ্টেম্বরে মস্কো যান, সেখানে সোভিয়েত বিজ্ঞানী ইয়াকভ জেল্ডোভিচ এবং অ্যালেক্স স্ট্র্যাবিনস্কি তাকে বলেন যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার নীতি অনুযায়ী ঘূর্ণায়মান কৃষ্ণগহ্বর কণা সৃষ্টি করবে এবং বিকিরণও করবে। হকিং তাদের তাত্ত্বিক যুক্তি মানলেও তাদের গাণিতিক প্রক্রিয়াটি পছন্দ করেন নি। নভেম্বরে অক্সফোর্ডে একটি বেসরকারি সেমিনারে তিনি একটি উন্নত গাণিতিক নীতি সহ বিকিরণ পদ্ধতির বিবরণ দেন। এই গাণিতিক গণনায় তিনি লক্ষ্য করেন, কেবল ঘূর্ণায়মান কৃষ্ণগহ্বরই নয়, বরং অঘূর্ণায়মান কৃষ্ণগহ্বরও কণা সৃষ্টি করে স্থির হারে বিকিরণ করতে পারে। হকিং বিকিরণ কৃষ্ণগহ্বরের ভর ও শক্তি হ্রাস করে এবং এটি black hole evaporation নামে পরিচিত। এর কারণে কৃষ্ণগহ্বর যে ভর আত্মসাৎ করে তার চেয়ে বেশি হারায় এবং এতে করে এটি সঙ্কুচিত ও শেষপর্যন্ত বিলীন হবার আশঙ্কা দেখা দেয়! বিজ্ঞানীরা মনে করেন ক্ষুদ্র কৃষ্ণবিবরগুলি বড়গুলোর চেয়ে অধিক হারে নিঃসরণ করে এবং দ্রুত সঙ্কুচিত ও শেষ হয়ে যায়।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে কৃষ্ণগহ্বরের হকিং বিকিরণ সম্পর্কিত একটি সিগন্যাল পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল যার ফলাফল ছিল বিতর্কিত আর ঠিকভাবে যাচাই করা যায় নি। অন্যান্য প্রজেক্টগুলো framework of analog gravity এর মধ্যে এই বিকিরণ খোঁজার চেষ্টা করেছিল। ২০০৮ এর জুনে নাসা bvmv(NASA) GLAST স্যাটেলাইট প্রেরণ করে যা কৃষ্ণগহ্বর নিঃসৃত গামা রশ্মির প্রবাহ অনুসন্ধান করবে। যদি অতিবৃহৎ মাত্রা তত্ত্ব (large extra dimension thiories) সত্য হয় তবে সার্ন (CERN)এর বৃহৎ হ্যাড্রন কলাইডরে ক্ষুদ্র কৃষ্ণবিবর সৃষ্টি হতে পারে যার বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

কৃষ্ণগহ্বরগুলো প্রচণ্ড মহাকর্ষীয় আকর্ষণের প্রত্যক্ষ প্রতিরূপ। সাধারণভাবে এই মহাকর্ষশক্তি এত শক্তিশালী যে কোনো তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গও (যেমন দৃশ্যমান আলো) তা হতে মুক্ত হতে পারে না বা বেরিয়ে আসতে পারে না। কীভাবে মহাকর্ষকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় নিয়ে আসা যায় এটা এখনও অজানা, যদিও কৃষ্ণগহ্বর হতে দূরে গেলে মহাকর্ষের প্রভাব, স্থানকালের বক্রতায় কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্বে মহাকর্ষের ভূমিকার তুলনায় প্রায় উপেক্ষণীয় হয়। হকিং দেখান যে কোয়ান্টাম ইফেক্ট কৃষ্ণগহ্বরকে এর মহাকর্ষ কাটিয়ে বিকিরণে সমর্থ করে যা আদর্শ তাপীয় উৎস (কৃষ্ণবস্তু) হতে নিঃসৃত গড় তাপীয় বিকিরণের অনুরূপ। এই তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ কৃষ্ণবস্তু তথা কৃষ্ণবিবরের তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।

ভৌতভাবে ঘটনাটি এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় যেন এটি ঘটনা দিগন্ত (কৃষ্ণবিবরের সীমানা, ঐ স্থান হতে কোন আলো না আসায় এর অপরপ্রান্তের কোন ঘটনা জানা যায় না বলে এক ঘটনাদিগন্ত বলা হয়) হতে নিঃসৃত কণা-প্রতিকণা বিকিরণ। বিকিরণটি সরাসরি কৃষ্ণবিবর হতে বের হয় না, বরং এটা ভার্চুয়াল কণাগুলো কৃষ্ণবিবরের মহাকর্ষ দ্বারা প্রকৃত কণায় পরিণত হওয়া বোঝায়।

একটু সরল ভাষায় বলতে গেলে, শূন্যস্থানের ওঠানামা কৃষ্ণগহ্বরের ঘটনাদিগন্তের কাছে কণাপ্রতিকণার জোড়াকে আবির্ভূত করায়। জোড়ার একটি গহ্বরে পতিত হয়, অন্যটি মুক্তি পায়। শক্তির সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী, গহ্বরে পতিত কণাটি ঋণাত্মক হওয়ার কথা (কৃষ্ণগহ্বর হতে দূরবর্তী পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে)। এই প্রক্রিয়ায় কৃষ্ণবিবর ভর হারায় এবং বহিঃস্থিত পর্যবেক্ষকের কাছে মনে হয় কৃষ্ণগহ্বরটি একটি কণা নিঃসরণ করল। অন্য একটি মডেল অনুযায়ী, প্রক্রিয়াটি হচ্ছে কণার সুড়ঙ্গযাত্রা বা quantum tunneling effect যেখানে বলা হয় কণাপ্রতিকণা জোড়া শূন্যস্থান হতে উদ্ভূত হয় এবং জোড়ার একটি টানেল দিয়ে ঘটনাদিগন্তের বাইরে বেরিয়ে আসে। 
হকিং এর হিসাবকৃত কৃষ্ণবিবরবিকিরণ এবং কৃষ্ণবস্তুনিঃসৃত তাপীয় বিকিরণের পার্থক্য হচ্ছে দ্বিতীয়টির সংখ্যাবাচক পরিমাণ সম্ভব। তাপীয় বিকিরণ এর উৎসবস্তু সম্পর্কে তথ্যপ্রদান করে, অন্যদিকে হকিং বিকিরণ এমন কোন তথ্যই বহন করে না বলে মনে হয় এবং কেবল কৃষ্ণগহ্বরের ভর, কৌণিক ভরবেগ ও আধানের উপর নির্ভর করে। এটাকে কৃষ্ণগহ্বরের তথ্য সংক্রান্ত প্যারাডক্স ধরা যায়।

gauge gravity duality ধারণানুযায়ী, কতিপয় ক্ষেত্রে কৃষ্ণগহ্বরকে অশূন্য তাপমাত্রায় কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরির সমাধানের সমতুল্য ধরা যায়। এর অর্থ, আমরা আশা করতে পারি কৃষ্ণগহ্বরে পতিত বস্তুর কোন তথ্যই বিনষ্ট হয় না (কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরি অনুযায়ী) এবং কৃষ্ণবিবরনিঃসৃত বিকিরণ সম্ভবত সাধারণ তাপীয় বিকিরণ। এই ধারণা ঠিক হলে হকিং এর হিসাবও ঠিক হওয়ার কথা। 
যখন কণাগুলো মুক্তি পায় বা নির্গত হয়,তখন কৃষ্ণগহ্বর এর কিছুটা শক্তি তথা ভর হারায় (আইনস্টাইনের ঊ=সপ২ সমীকরণ অনুযায়ী ভর আর শক্তি একই তা বোঝায়). গ ভরের একটি অঘূর্ণনশীল আধানবিহীন স্কোয়ার্জচাইল্ড কৃষ্ণবিবর হকিং বিকিরণ করে যে ক্ষমতা হারায় তা নিচের সমীকরণ হতে হিসাব করা যায়।

একে স্টেফান-ব্যোলৎজম্যান-স্কোয়ার্জচাইল্ড-হকিং ক্ষমতা সূত্র বলা হয়।
এখানে P = নির্গত শক্তিপ্রবাহ, c = শূন্যস্থানে তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গের দ্রুতি, ħ = প্লাঙ্ক ধ্রুবক, G = সার্বজনীন মহাকর্ষ ধ্রুবক।
যদি M এর মান এক সৌরভর হয় তবে P এর মান হয় ৯ ×১০-২৯ ওয়াট (খুবই অল্প!)।
যদি আমরা এমন একটা মহাবিশ্ব চিন্তা করি যেখানে একটি কৃষ্ণগহ্বর ব্যতীত অন্য কোন গ্রহ নক্ষত্র গ্রহাণু ধূমকেতু বা জ্যোতিষ্ক কিছুই নেই; অর্থাৎ কোন কিছু উদরপূর্তি করে কৃষ্ণগহ্বরের দেহায়তন বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা থাকছে না, সেই ক্ষেত্রে হকিং বিকিরণের ফলে কৃষ্ণগহ্বরটি লুপ্ত হতে কত সময় লাগবে? বিজ্ঞানীরা সেটাও হিসাব করে দেখেছেন। এক সৌরভরের (১.৯৮৮৯ × ১০৩০ কিলোগ্রাম) কৃষ্ণগহ্বরের জন্য এই আয়ু হবে ২.১ × ১০৬৭ বছর! এই আয়ুষ্কাল বর্তমান মহাবিশ্বের ধারণাকৃত বয়সের (১৩.৭৩ ± ০.১২ × ১০৯ বছর) চেয়ে বহুগুণ বেশি!
কিন্তু কৃষ্ণগহ্বর অনবরত নানা মহাজাগতিক বস্তু গ্রাস করে নিজের ভর বাড়িয়ে চলেছে। সুতরাং বড়সড় কৃষ্ণগহ্বরের মৃত্যু হবার কোনো আপাত সম্ভাবনাই দেখা যায় না। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘ধূমকেতু’ কবিতায় লিখেছেন “আমি সৃষ্টির অনাসৃষ্টি/ আমি একটা বিশ্ব গ্রাসিয়াছি, পারি গ্রাসিতে এখনো ত্রিশটি!” কবি ভাবার্থে প্রয়োগ করলেও কৃষ্ণগহ্বরের জন্য কথাটি আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করা যায়। বিশ্ব তো কেবল গ্রহ, কৃষ্ণবিবর নক্ষত্রকেও নিজের ভিতর টেনে নিতে পারে। 
আবার এর অন্যপিঠও আছে। ক্ষুদ্র ভর যেমন ১০১১ কিলোগ্রাম ভরের কৃষ্ণগহ্বরের জন্য এই সময় হবে ২.৬৭ বিলিয়ন বছর মাত্র। আর তাই জ্যোতির্বিদেরা ক্ষয়িষ্ণু এসব কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান করছেন।

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০১৪

কোয়ান্টাম বিচ্যুতির মাধ্যমে সনাক্ত করা গেল একটি একক ফোটনের বৈশিষ্ট্য

আজ থেকে দুইশ বছর আগে বিজ্ঞানী ফ্রনহফার সূর্য রশ্মির বর্ণালিতে অন্ধকার অঞ্চল (ডার্ক লাইন) খুঁজে পান। এই আবিষ্কারের পরবর্তীতে এটা আবিষ্কার করা হয় যে এই বর্ণালি থেকে, বর্ণালি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সূর্যের আবহাওয়া, রাসায়নিক গঠন, এবং তার অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। 


নক্ষত্রের জীবনকথা - লোহিত দানব, শ্বেত বামন ও নবতারা কি ???

লাল দানব ও লাল অতি দানবঃ
আমাদের সূর্যের সমস্ত হাইড্রোজেন পুড়ে শেষ সময় লাগবে ১০০০ কোটি বছর। ৫০০ কোটি বছর ইতিমধ্যেই অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। এখন থেকে ৫০০ কোটি বছর পর সূর্যের কেন্ত্রমন্ডলের ৯/১ অংশ হিলিয়ামে পরিণত হবে। কেন্ত্রে হিলিয়াম জ্বারাবার মত যথেষ্ট তাপ না থাকায় কেন্ত্রাঞ্চল অভিকর্ষের টানে সংকুচিত হতে শুরু করবে। সংকোচনের ফলে কেন্দ্রের উত্তাপ পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রাঞ্চলের বাইরে হাইড্রোজেন দহন শুরু হবে। 




৫০ বছরের মধ্যেই মানব ক্লোনিং হবে !! সম্ভব কি?

দুর্ঘটনায় নিজের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন? মানব ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে সেই প্রিয়জনের স্থান পূরণ করে দিতে পারে তার মতোই আরেকজন। এই পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে। এমন আশার কথা বলেছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার জন গার্ডন। বিজ্ঞানী জন গার্ডন গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ব্যাঙের ক্লোন করেছিলেন। ওই গবেষণার সূত্র ধরেই ১৯৯৬ সালে ক্লোন করে ‘ডলি’ নামের একটি ভেড়াশাবকের জন্ম দিয়ে বিশ্বব্যাপী হইচই ফেলে দেন। ব্রিটিশ এই জীববিজ্ঞানীর

অ্যান্টিম্যাটার বা প্রতিপদার্থ বলতে যা বোঝায়.........

বিগ ব্যাং যখন ঘটে, যখন বিস্ফোরণের মাধ্যমে সূচনা হয় মহাবিশ্বের; ধারণা করা হয় ঠিক তখনি সৃষ্টি হয়েছিল আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যা দেখে অভ্যস্ত সেসব কিছু (পদার্থ বা ম্যাটার) এবং প্রতিপদার্থ(অ্যান্টিম্যাটার). আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু দেখে থাকি তা পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত, আর এই পরমাণুই প্রথম তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাঙ্গের সময়। পরমাণুর গঠন সবারই জানা। নিচে উদাহরণ হিসেবে একটা মডেল দেওয়া হল।

নিউট্রিনো কথা

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কথা, তখনকার সময়ে নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকার সাপ্তাহিক বিজ্ঞান পাতার মাঝে খোঁজাখুঁজি করে বেড়াতাম। সেই সময়ে এমন একটা খবর বেরোল যেটিতে সারা দুনিয়া হুলস্থূল পড়ে গেল। খবরটি ছিল এরকম "নিউট্রিনো ছোটে আলোর চেয়ে বেশি গতিতে". যারা বিজ্ঞান নিয়ে নানা রকম খোঁজখবর রাখে, তাদের জন্য তো অবাক করা কাণ্ডই সাথে সাথে যারা বিজ্ঞানের ছাত্র নয়, তাদেরও যেন অবাক করা অবস্থা। কি হলো কিনা? কি দেখা যায় কিনা? এসব শুনছি? সত্যি বলছে তো? কারণ এই তথ্য সঠিক হয়ে থাকলে বিজ্ঞানের অনেক সূত্রই লিখতে হবে নতুন করে। উচ্চ শ্রেণির আইনস্টাইনীয় বিজ্ঞানের অনেক কিছুর সাথেই এই তথ্য বিরোধ অবস্থানে যায়। তার মানে আইনস্টাইন ভুল। 

আইনস্টাইনের সূত্রানুসারে আলোর চেয়ে বেশি বেগ অর্জন করা সম্ভব নয়। কোনো বস্তুই আলোর বেগের অধিক বেগে ছোটতে পারে না। কিন্তু এত নির্ভরযোগ্য স্বয়ং সার্নের বিজ্ঞানীরা দাবী করছে এই কথা, তাই ফেলেও দেয়া যায় না। মনে হয় সম্ভবত সারা দুনিয়ার সকল পত্রিকাই এক খবরটা ফলাও করে ছাপিয়েছে। ছাপাবে না কেন পুরো বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়েই টান দেয় যেন! পরে অবশ্য আরও পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে যে এটা আসলে ভুল ছিল, পরীক্ষার ফলাফলে সামান্য ত্রুটি ছিল। এজন্য অপেরার (সার্নের নিউট্রিনো গবেষণা নিয়ে একটি প্রজেক্ট) প্রধানকে অপসারণও করা হয়। এই হুলস্থূল পাকানো জিনিসটি একটি কণা, নিউট্রিনো। আসলেই সে একটি ভুতুড়ে কণা। নিউট্রিনো তাঁর আবিষ্কারের জন্মলগ্ন থেকেই ভুতুড়ে আচরণ করে যাচ্ছে। এই নিউট্রিনোর সাথে সাথে এত সব কণা আবিষ্কার হয়েছে তাদের নাড়ি-নক্ষত্র সব জানা হয়েছে কিন্তু এই হতচ্ছাড়া নিউট্রিনো সম্বন্ধে তেমন ভালো কিছু জানা যায় নি এখনো। এ নিয়ে পদার্থবিদদের মাঝে যেন একটা স্থায়ী অসন্তোষ। 

শুরুর কথা
অগ্রসরমান বিজ্ঞানে আজ আমরা জানি প্রোটন ও নিউট্রন কোনো মৌলিক কণা নয়। এ দুটোই গঠিত কোয়ার্ক দিয়ে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল যে পরমাণু বা মহাবিশ্বের সকল কিছু শুধু ইলেকট্রন, প্রোটন আর নিউট্রন দিয়ে গঠিত। তিরিশের দশকের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা নিউট্রন নিয়ে গবেষণা করতে করতে এক সময় একটি অজানা কণার ধারণা পান। তারা আঁচ করতে পারেন এই তিনটি কণা ছাড়াও একটি কণা থাকতে পারে। যদি কল্পনায় একটি কণাকে ধরে নেয়া না হয় তাহলে দেখা যায় ভোরের ও শক্তির নিত্যতা সূত্র ভুল হয়ে যায়। পরমাণু থেকে নিউট্রনকে অবমুক্ত করে রাখলে দেখা যায় নিউট্রনটি আর নিউট্রন থাকছে না। সেটি নিজেকে পাল্টে নিচ্ছে ইলেকট্রন ও প্রোটনে। এই পাল্টানোর সাথে সাথে তাঁর ভরেরও পরিবর্তন হয়। আদি অবস্থায় যে ভর ছিল তা থাকে না, কমে যায়। যদি কমেই যায় তবে সে গেল কই? ভর ও শক্তির নিত্যতা সূত্র অক্ষুণ্ণ রাখতে বাধ্য হয়েই ধরে নিতে হলো একটি অজানা কণার অস্তিত্ব। তখনকার পর্যন্ত বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে হয়তো তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। পরের বছর আরেক দিকপাল এনরিকো ফারমি এই অজানা কণাটির নাম দেন নিউট্রিনো। এই গড়বড়ে অবস্থা দিয়েই নিউট্রিনোর শুরু। 

আজব আজিব! 
নিউট্রিনোর সবচেয়ে রহস্যময় জিনিসটা মনে হয় তার গতি। শুধু গতি বললেই শেষ হবে না বলতে হবে দুর্দমনীয় গতি। এটি আলোর বেগে ছুটে চলে। সাধারণ কোনো আলোর কণা যখন ছুটে চলে তখন পথিমধ্যে কোনো অস্বচ্ছ বাধা/প্রতিবন্ধকতা পড়লে আর আলো আর তা ভেদ করে যেতে পারে না। সেখানেই ঘটে তার যাত্রার সমাপ্তি। বড়জোর প্রতিফলিত হয়। কিন্তু নিউট্রিনো এমন এক আজিব জিনিস যেটার সামনে হাজার প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তা ভেদ করে অনায়াসে চলে যেতে পারে। পৃথিবীর মাটির ভেতর দিয়ে এক প্রান্ত থেকে কোনো নিউট্রিনোকে অপর প্রান্তে ছুড়ে মারলে তা এক সেকেন্ডের লক্ষ ভাগের এক ভাগেই অতিক্রম করে যাবে। পৃথিবী যে এত্ত বড় বাধা, প্রতিবন্ধকতা তাকে যেন বুড়ো আঙ্গুলই দেখিয়ে দেয়! শীতের কুয়াশার ভিতর দিয়ে একটু বুলেট যেমন অনায়াসেই তা পার হয়ে বনবন করে ছুটে যেতে পারে নিউট্রিনোও যেন তেমনই ভাবে পুরো পৃথিবীকে ভেদ করে যেতে পারে। আর সে নিউট্রিনো প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে এরকম অতিক্রম করে যাচ্ছেই, বিরামহীনভাবে। আমরা যে পৃথিবীর মাটিতে হাঁটছি সে হাটার সময় আমাদের পায়ের পাতা দিয়ে কি বিশাল পরিমাণ নিউট্রিনো যে ছুটে যাচ্ছে তাঁর আনুমানিক সংখ্যাটা শুনলে বিশ্বাস হতে চায় না। পায়ের পাতা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন পরিমাণ নিউট্রিনো ছুটে যাচ্ছে। আমরা বুঝতেও পারছি না, অথচ আমাদের এফোঁড় ওফোঁড় করে চলেছেই। এমন কি এই মুহূর্তে আমাদের হাতে ধরা কোনো বই কিংবা ম্যাগাজিনের মধ্যে দিয়েও ছুটে যাচ্ছে। ছুটে যাচ্ছে আলোর বেগে। 

এই বেগ নিয়েও একটা ধাঁধায় পড়তে হয় বিজ্ঞানীদের। যদি নিউট্রিনোর ভর থাকে তবে সে আলোর বেগে ছুটে কি করে? ভর থাকলে তো আলোর বেগে ছুটা সম্ভব নয়। কোনো কণার ভর যদি শূন্য হয় তবে তাকে অবশ্যই আলোর বেগে ছুটতে হবে, এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। ঠিক এই কথাটাকেই উল্টে বলা যায় কোনো কিছু যদি আলোর বেগে ছুটতে চায় তবে তাকে অবশ্যই ভরশূন্য হতে হবে। রাজনীতিবিদরা যেমন মাঝে মাঝে নাকানি চুবানি খায় বিজ্ঞানীদেরও তেমন নাকানি চুবানি খেতে হল এই নিউট্রিনোর বদৌলতে। পরে অবশ্য এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। কয়েক প্রকারের নিউট্রিনো আবিষ্কার হয়েছে। কারো ওজন আছে কারো নেই। 

সম্ভাবনা
যোগাযোগ ব্যবস্থায় পৃথিবীকে ছোট করে ফেলাই যেন পৃথিবীর অন্যতম এজেন্ডা। সেকেন্ডের ভেতরেই তথ্য আদান প্রদান করা চাই। যেহেতু নিউট্রিনো এমন বাঁধাহীনভাবে চলে তাই এই নিউট্রিনোর মাঝে তথ্য দিয়ে প্রেরণ করা যেতে পারে না? ধরা যাক পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে কোনো মেসেজ অপর প্রান্তে পাঠানো লাগবে, তাঁর জন্য যেটা করতে হবে সেটা হল স্যাটেলাইটের সাহায্য নেয়া, কিংবা তারের / সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্য নেয়া। মোটামুটি বেশি সময় না লাগলেও ভালোই সময় লাগে তাতে। এখানে যদি নিউট্রিনো দিয়ে কাজটা করা যায় তবে কতই না সহজ হয়ে যায়। নিউট্রিনো মাটি ভেদ করে ফেলে যেতে পারবে সেকেন্ডের লক্ষ ভাগের এক ভাগে। লাগবে না কোনো তার। উপযোগী একটা ট্রান্সমিটার আর রিসিভার হলেই হলো। আমরা যে টেলিফোন, মোবাইল ব্যবহার করি সেখানেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই নিউট্রিনো প্রযুক্তি। 

কিন্তু ওই যে বিজ্ঞানীদের নাকানি চুবানি খাওয়ানো কণা সে কি আর সহজে ধরা দিবে? এখানেও আছে ঝামেলা। নিউট্রিনো সে অনায়াসেই ভেদ করে যাবে রিসিভার। রিসিভারকে সাড়াই দিবে না। সামান্য একটা কণাকে ধরতে নিচের চিত্রের মত এত বিশাল সাইজের ভৌতিক ডিটেক্টর তৈরি করতে হয়। 


চিত্র: নিউট্রিনোকে দেখার জন্য তৈরি করা বিশাল ডিটেক্টর। 

কোথা থেকে আসে এরা? 
নিউট্রিনোর সবচেয়ে বড় আধার বলা যায় সকল নক্ষত্রকে। তার মাঝে আমাদের সূর্যও তো একটা নক্ষত্র। এই সূর্যেও প্রতিনিয়ত অসংখ্য নিউট্রিনো তৈরি হচ্ছে। আমরা জানি সূর্যে প্রতিনিয়ত আগুন জ্বলছে আর সে আগুনে কোনো প্রকার অক্সিজেন লাগে না। যেটা হয় সেখানে তা হলো নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় অসংখ্য নিউট্রন মুক্ত হচ্ছে, আর নিউট্রন থেকেই তৈরি হয় নিউট্রিনো। প্রতিনিয়ত সেই নিউট্রিনো ছুটে আসছে আমাদের দিকেও। একেকটা সুপারনোভা বিস্ফোরণে কি পরিমাণ নিউট্রিনো অবমুক্ত হয় তার সংখ্যা কল্পনা করে নেয়াও সাধ্যের অতীত। কথায় বললে মোটামুটি এরকম দাড়ায় একশ বিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন... আমাদের পৃথিবীর মাঝে যে নিউক্লিয়ার বোমা ফাটানো হয় তাতেও তৈরি হয় অনেক নিউট্রিনো। নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রেও তাই। তাছাড়াও কণা ত্বরকে সংঘর্ষের মাধ্যমেও তৈরি হয় নিউট্রিনো। প্রত্যেকটা নক্ষত্রের মৃত্যুতে হয় নিউট্রিনো। সুপারনোভার বিস্ফোরণে হয় নিউট্রিনো। সেই মহাবিশ্বের জন্মলগ্ন থেকেই নানান মহাজাগতিক ঘটনার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে এই মহাবিশ্ব। সেই আদি মহাবিশ্বের (Baby universe) সাক্ষীরূপে পাওয়া যায় এই নিউট্রিনোকে। কত কাল কত বছর ধরে তারা ছুটেই চলছে এবং চলতে চলতে একসময় কোনো কোনোটি আমাদের পৃথিবীর মাঝে দিয়েও যাচ্ছে। যেটা পটভূমি বিকিরণ (Background Radiation) নামে পরিচিত। এর চেয়ে অবাক করা জিনিস আর কিই বা হতে পারে যে আমরা এমন একটা জিনিসের সংস্পর্শে আসতে পারছি যা কিনা সৃষ্টির শুরুর প্রতিনিধিত্ব করে। 

নিউট্রিনো কী? 
আমরা আগেই দেখেছি প্রোটন ও নিউট্রন কোনো মৌলিক কণা নয়। যে তিনটি কণা ইলেকট্রন, প্রোটন, ও নিউট্রন নিয়ে মহাবিশ্বের সকল কিছু গঠিত বলে ধরা হতো তার মাঝে ইলেকট্রনই শুধু আজ পর্যন্ত মৌলিক কণা হিসেবে টিকে আছে। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের আদর্শ মডেল বা স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুসারে মহাবিশ্ব গঠিত হয়েছে তিনটি কণা দিয়েই। 

সেগুলো হচ্ছে 
১. কোয়ার্ক
২. বোসন
৩. লেপটন 

এর মাঝে তিন নম্বর প্রকারভেদ লেপটন আবার দুই প্রকার। এক প্রকার ইলেকট্রন আরেক প্রকার নিউট্রিনো। নিউট্রিনোর কোনো চার্জ নেই। যেহেতু কোনো চার্জ নেই তাই সে কোনো প্রকার চুম্বক ক্ষেত্র, দ্বারাও প্রভাবিত হয় না। আর সেজন্য এই নিউট্রিনো নিয়ে গবেষণা করতে বিজ্ঞানীদের নানান হ্যাপা পোহাতে হয়। চার্জহীন বলেই তার এরকম নাম। নিউট্রিনো নামটার সরল বাংলা তর্জমা করলে এরকম দাঁড়ায় চার্জহীন অতি ক্ষুদ্র কণা। এই কণাটিকে প্রকাশ করা হয় গ্রীক বর্ণ ν (নিউ) দিয়ে। এই কণা কারো সাথে বিক্রিয়াও করে না। এই মুহূর্তে এই বকবকানি যার দ্বারা পড়া হচ্ছে তার শরীরের ভেতর দিয়েও সেকেন্ডে হাজার কোটি নিউট্রিনো পার হয়ে যাচ্ছে। কই? কেউ কি টের পাচ্ছে? নিউট্রিনো তিন প্রকার। হিসাবের মাঝে তিন প্রকার নিউট্রিনোর দরকার পড়ে তিন প্রকার ইলেকট্রনের জন্য। যেমন করে হাইড্রোজেনের আইসোটোপ আছে তিনটি তেমনি ইলেকট্রনর প্রকার আছে তিনটি। 

১. ইলেকট্রন-ইলেকট্রন। যাকে বলে "ইলেকট্রন" (সত্যিকারের ইলেকট্রন)
২. মিউ-ইলেকট্রন। যাকে বলে "মিউওন"
৩. টাউ-ইলেকট্রন।যাকে বলে "টাউওন"

এই প্রতিটি কণার সাথে আছে একটি করে নিউট্রিনো। 
ইলেকট্রন নিউট্রিনো
মিউ নিউট্রিনো
টাউ নিউট্রিনো 

এক পলকে নিউট্রিনোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
১৯৩১- বিজ্ঞানী উলফগ্যাং পাউলি নিউট্রিনোর অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করেন ও ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ইলেকট্রনের ভর, শক্তি, ভরবেগ ইত্যাদি মিলাতে গিয়ে তিনি এটি লক্ষ করেন। 

১৯৩২- এনরিকো ফারমি এর নাম দেন নিউট্রিনো।
১৯৩৪- এনরিকো ফারমি নিউট্রিনোকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি তত্ত্ব দাড় করান। 
১৯৫৬- পরীক্ষার মাধ্যমে সর্ব প্রথম নিউট্রিনো আবিষ্কার করা হয়। 
১৯৬২- নিউট্রিনোর অন্য একটি জাত 'মিউওন নিউট্রিনো' আবিষ্কার। 
১৯৬৮- সূর্য থেকে আগত নিউট্রিনো খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা প্রথম কোনো পরীক্ষা চালায়।
১৯৭৮- স্ট্যানফোর্ড লিনিয়ার এসিলারেটরে টাউ লেপটন আবিষ্কৃত হয়। তাতে টাউ নিউট্রিনোর অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করা হয়। এবং তাতে সে কণার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। 

১৯৮৫- নিউট্রিনোর ভর শূন্য নয় এমন ফলাফল প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় ছিল আই.বি.এম. ও রাশিয়ান টিম। 
১৯৮৭- ক্যামিওক্যান্ড ও রাশিয়ান টিম সুপারনোভা থেকে আগত নিউট্রিনো শনাক্ত করে। 
১৯৮৮- ৬২ সালের আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীদের নোবেল পুরস্কার প্রদান। 
১৯৮৯- ক্যামিওক্যান্ড আরেকটি গবেষণায় সূর্য থেকে আগত নিউট্রিনো পরিমাপ করে এবং দেখতে পায় সূর্য থেকে যে পরিমাণ নিউট্রিনো ছুটে আসার কথা সে পরিমাণ আসে না। কম আসে। তিন ভাগের এক ভাগ। 

১৯৯০- আই.বি.এম. সূর্যের আগত তিন ভাগের এক ভাগ নিউট্রিনো বিষয়ক সমস্যার সঠিক কারণ খুঁজে পায়। 
১৯৯৮- এই সময়ে বিজ্ঞানীরা একেবারে নিশ্চিত হয়ে ঘোষণা করলেন যে নিউট্রিনোর ভর আছে। 
২০০০- ভবিষ্যদ্বাণী করা টাউ নিওট্রিনোকে খুঁজে পাওয়া যায়। 
২০০২- সূর্যের নিউট্রিনো সমস্যার সমাধানের জন্য বিজ্ঞানীদের নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়। 

তথ্যসুত্র:
1. Ghost of the Universe; Frank Close 
2. Neutrino Experiments Light the Way to New Physics; Martin Hirsch
3. অপ্রকাশলোকের সন্ধানে; ড. এ. এম. হারুন-অর-রশিদ
4. বিজ্ঞান প্রজন্ম; প্রথম আলো
5. নিউট্রিনো ছোটে আলোর চেয়ে বেশি গতিতে? ; তানভীর আহমেদ ভুঁইয়া
6. Wikipedia : Neutrino
7. আরও একটুখানি বিজ্ঞান: মু.জা.ই. 
8. আগামী প্রজন্মের বিজ্ঞান: ভবেশ রায় 
9. Neutrinos not faster than light : Nature Magazine

আবিষ্কৃত কণাটিই হিগস বোসন

লার্জ হাড্রন কোলাইডার (এলএইচসি)- পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক প্রজেক্ট। সুইজারল্যান্ড-ডেনমার্কের সিমান্তেরে ভূগর্ভে ২৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থাপিত হয়েছে এই প্রজ্ক্টে। উদ্দেশ্য মহবিশ্বের সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করা। এরই অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীরা হিগস-বোসন কণার তালাশ শুরু করে। ২০১২ সালে এজন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এলএইচসি’র সাইক্লোট্রোনে। ২০১২ সালের ৪ জুলাই সেই বিস্ফোরণে হিগস বোসনের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সন্দেতীত ভাবে নিশ্চিত করতে পারেন নি। শুরু হয় নানা গুঞ্জন, সন্দেহ। বিজ্ঞানীরা আরো ভালোভাবে গবেষণা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি শেষ হয়েছে সেই গবেষণা।অবসান ঘটেছে সেই অনিশ্চয়তার। এলএইচসি বিজ্ঞানীরা এখন ১০০ ভাগ নিশ্চিত তাদের আবিষ্কৃত কণাটিই হিগস বোসন। আর এ ঘোষণাটা

একটি সফল বাণিজ্যিক রহস্য - বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

মানুষ স্বভাবগত ভাবেই রহস্য প্রিয়। রহস্য প্রিয় মানুষেরা রহস্যের খোঁজে বের হয়ে যুগে যুগে পৃথিবীর জন্য অনেক কিছু করেছেন তাই রহস্যপ্রিয়তাকে মানুষের স্বভাবগত দূর্বলতা হিসেবে দেখার অবকাশ নেই। কিন্তু এই রহস্যপ্রিয়তাকে পুঁজি করে পৃথিবীতে অনেক ধরনের বাণিজ্য হয়েছে। বারমুডাও কি সেরকম একটি পণ্য? সেটাই খোঁজার চেষ্টা করবো...

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল যা শয়তানের ত্রিভুজ নামেও পরিচিত এলাকাটি আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ ত্রিভুজাকার অঞ্চল যেখান বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রচারিত আছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ভৌগলিক অবস্থান নির্দিষ্ট নয়। কেউ মনে করেন এর আকার ট্রাপিজয়েডের মত, যা ছড়িয়ে আছে স্ট্রেইটস অব ফ্লোরিডা, বাহামা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপূঞ্জ

সৃষ্টির ইতিকথা ও অন্যান্য

বিশাল এই মহাবিশ্বের ছোট এই পৃথিবীর বাসিন্দা আমরা। এখন পর্যন্ত মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণী আমারই। প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি আমাদের এই নিবাসের। আর মা্নুষ সর্বদা তার এই শেকড়ের সন্ধান করেছে চলেছে। কিভাবে সৃষ্টি হল এই পৃথিবী নামের গ্রহটির? যুগে যুগে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে নানান সময়ে তৈরি হয়েছে নানান মতবাদ। পুরাতন একটি মতবাদের উপর ভিত্তি করে কিংবা বাতিল করে তৈরি করা হয়েছে নতুন মতবাদ। তারপরেও সন্তুষ্ট হয়নি মানুষ। আবার এসেছে নতুন মতবাদ। এখনও এসব নিয়ে চলছে বিতর্ক। আমি আমার এই লেখায় দুই পর্বের মাধ্যমে আমাদের এই

শনিবার, ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০১৪

অ্যান্ড্রয়েড গেমস জোন [পর্ব-০৯]::ছোট সাইজের কিছু গেম(পেইড গেম)

আজ আপনাদের জন্য যে দুটো গেমস রয়েছে তা হল Eternity Warriors 2 এবং Razor Salvation।প্রথম গেমটা জনপ্রিয় গেম নির্মাতা কম্পানি গেমলফট।তো কথা না বারিয়ে দেখে নেয়া যাক গেমগুলো ---------->

# Eternity Warriors 2

আপনার ফোনে ফ্লাশিং করুন উবুন্টু [অ্যাডভান্স ইউজার Only]

এতদিন শুনেছেন যে মোবাইলের জন্য উবুন্টু আসছে।আর জন্য অনেকে অনেক অপেক্ষা করেছেন।কিন্তু এখন সেই অপেক্ষার পালা শেষ।আমি আপনাদের দেখাব কিভাবে আপনার ফোনে আপনি উবুন্টু ইন্সটল করবেন।প্রথমেই বলে রাখি যে আপনি শুধু Nexus এবং Nexus 4 এ উবুন্টু ইন্সটল করতে পারবেন।তবে নতুন রিলিজ হওয়া Nexus7 এ তা এখনো ব্যবহার