
পদার্থ তৈরি হয় মৌলিক কণিকা দ্বারা। প্রতিপদার্থ তৈরি হয় প্রতিকণিকা দ্বারা। সামনে তাই প্রতিপদার্থ বলতে প্রতিকণিকাকেই বোঝাব।
প্রত্যেকটা চেনাজানা কণিকারই একটা করে প্রতিকণিকা রয়েছে। এদেরকে একে অপরের শত্রু বলা যেতে পারে। ঠিক যেন ছোটবেলার হারিয়ে যাওয়া ভাই, যাদের মধ্যে অনেক মিল আছে, কিন্তু একইসাথে আছে এমন কোনো অমিল যা তাদেরকে চির জীবনের জন্য এমন শত্রু বানিয়ে দিয়েছে যে, কোনো এক সময় যদি একজনের সাথে আরেকজনের দেখা হয়ে যায় তাহলেই আর নিস্তার নেই। দু'জনেই দু'জনকে ধ্বংস করে দেবে!
কোনো কণিকা আর তার প্রতিকণিকার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। যেমনঃ এরা সমভর বিশিষ্ট, এদের চার্জের মান সমান, স্পিনের মান সমান, এরা যদি এমন বৈশিষ্ট্যধারী হয় যে সৃষ্টি হবার সাথে সাথেই ধ্বংস হয়ে যাবে তাহলে কণিকার আয়ু যতটুকু, তার প্রতিকণিকার আয়ুও ঠিক একই সমান হবে।
এবার আসি অমিলে। অমিল হচ্ছে যে এদের চার্জ বিপরীত হবে। যেমনঃ ইলেকট্রনের চার্জ নেগেটিভ, তাই ইলেকট্রনের প্রতিকণিকার চার্জ হবে পজিটিভ। একে পজিটিভ ইলেকট্রন বা পজিট্রন বলে। প্রোটনের চার্জ ধনাত্মক, অ্যান্টিপ্রোটনের চার্জ হবে পজিটিভ। নিউট্রিনোর চার্জ নেই, অ্যান্টিনিউট্রিনোরও চার্জ নেই। কিন্তু একটার স্পিনের চিহ্ন আরেকটার বিপরীত।


একটা ব্যাপার না বললেই না যে আমরা যদি বিপুল পরিমাণ প্রতিকণিকা কোনোভাবে তৈরি করতে পারতাম এবং কণিকা ও প্রতিকণিকার সাথে সংঘর্ষ করাতে পারতাম তাহলে কিন্তু শক্তির একটা উৎস পেয়ে যেতাম।ভবিষ্যতের সম্ভাব্য শক্তির একটি উৎস হতে পারে এটি। কিন্তু বলে রাখা ভাল যে আমাদের বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত যতটুকু প্রতিকণিকা আবিষ্কার করতে পেরেছেন তা দ্বারা এমন কিছু করা সম্ভব না। European Organization for Neuclear Research বা CERN এ এক বছরে যতটুকু প্রতিকণিকা তৈরি করা সম্ভব, তাকে কণিকার সাথে সংঘর্ষ করিয়ে যে শক্তি পাওয়া যাবে তা দিয়ে একটা ১০০ ওয়াটের বাল্বকে হয়ত কয়েক সেকেন্ড জ্বালানো যাবে!
কিছু প্রশ্ন এক্ষেত্রে রয়েই যায় যে যদি বিগ ব্যাঙ্ এর সময় সমান সংখ্যক কণিকা ও প্রতিকণিকা তৈরি হয়ে থাকে তাহলে কেন আমাদের জগতে আমরা শুধু কণিকাই দেখতে পাই? প্রতিকণিকা এত দুর্লভ কেন? তবে কি বিগ ব্যাঙ্গের সময় কণিকা আর প্রতিকণিকার সংখ্যা সমান ছিল না?

সূত্রঃ
http://scienceblogs.com/startswithabang/2010/11/22/why-making-neutral-antimatter/
http://en.wikipedia.org/wiki/Antimatter
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন