আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!!

আমরা কোন স্প্যাম পাঠাবোনা। ওয়াদা।

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৩

মহাবিশ্ব


পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সীসমূহ, তাদের অন্তর্বর্তী স্থানের মধ্যে অন্যান্য পদার্থ এবং শূণ্যস্থান (মহাকাশ), এবং তাত্ত্বিক ভাবে নির্ধারিত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয় এমন সব কিছু মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড। মহাবিশ্বের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়কে বলে বিশ্বতত্ত্ব। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সুদূরতম প্রান্তের পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন তাত্ত্বিক গবেষণায় মনে হয় মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রক্রিয়াই তার সৃষ্টি থেকেই একই ধরণের প্রাকৃতিক নিয়ম ও কয়েকটি নির্দিষ্ট ধ্রুবক দ্বারা নির্ধারিত হয়। বিগ ব্যাং (Big Bang) তত্ত্ব অনুসারে এর আয়তন ক্রমবর্ধমান। সম্প্রতি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন তত্ত্বে আমাদের এই দৃশ্যমান মহাবিশ্বের পাশাপাশি আরো অনেক মহাবিশ্ব থাকার অর্থাৎ অনন্ত মহাবিশ্ব থাকার সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে।

ইতিহাস

হাবল দুরবীন মহাশূন্যের একটি মোটামুটি খালি অংশকে তাক করে বেশ কিছুদিন ধরে এই উচ্চ রেজলুশানের ছবিটি ধারণ করে। এই অংশটির মোট আকার চাঁদের কৌণিক ব্যাসের (আধ ডিগ্রী) সমান। নিচের বাঁদিকের বাক্সে সেটা দেখানো হয়েছে। এই ছবিতে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সবচেয়ে দূরবর্তী অঞ্চলের গ্যালাক্সীসমূহ দেখা যাচ্ছে। এখানে প্রতিটি গ্যালাক্সিতে অন্ততঃ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি তারা রয়েছে। এছাড়া এই ছবিতে প্রায় ১০০টি খুবই ছোট লাল গ্যালাক্সি আছে যাদের দূরত্ত্ব হয়তো আমাদের জানা মতে সবচেয়ে বেশী, সেগুলো বিগ ব্যাং হবার পরে কয়েক শো মিলিয়ন বছরের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছিল।বর্তমান মহাবিশ্বের উপাদান সমূহ
মহাবিশ্বের আকার বিশাল। বর্তমান বিশ্বতত্ত্বের মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের বর্তমান বয়েস ১৩.৭৫ বিলিয়ন বা ১,৩৭৫ কোটি বছর। এই মহাবিশ্বের দৃশ্যমান অংশের "এই মুহূর্তের" ব্যাস প্রায় ৯৩ বিলিয়ন আলোক বছর। যেহেতু মহাবিশ্বের প্রতিটি বিন্দু প্রতিটি বিন্দু থেকে প্রতি মুহূর্তে আরো দ্রুত সরছে, মহাবিশ্বের ব্যাস ১৩.৭৫ x ২ = ২৭.৫০ বিলিয়ন আলোক বছরের চাইতে বেশী। দেশ বা স্থানের প্রতিটি বিন্দু বহু দূরের কোন বিন্দুর তুলনায় আলোর গতির উর্ধে ভ্রমণ করে, যতক্ষণ না সেই বিন্দুগুলির মাঝে তথ্য আদানপ্রদান না হচ্ছে এই গতি বিশেষ বা সাধারণ আপেক্ষিকতার কোন নিয়ম ভঙ্গ করে না। কাজেই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বকে যদি একটা গোলক কল্পনা করা হও তবে তার ব্যাসার্ধ হবে প্রায় ৪৬ বিলিয়ন আলোক বর্ষ। যদিও সেই দূরত্ত্বে অবস্থিত গ্যালাক্সি থেকে এই মুহূর্তে যে বিকিরণ বার হচ্ছে তা আমরা কখনই দেখতে পাব না।জ্যোতির্বিদরা মনে করছেন দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ১০০ বিলিয়ন (১০−১১) গ্যালাক্সি আছে। এই গ্যালাক্সিরা খুব ছোট হতে পারে, যেমন মাত্র ১০ মিলিয়ন (বা ১ কোটি) তারা সম্বলিত বামন গ্যালাক্সি অথবা খুব বড় হতে পারে, দৈত্যাকার গ্যালাক্সিগুলিতে ১০০০ বিলিয়ন (১০−১২) তারা থাকতে পারে (আমাদের গ্যালাক্সি ছায়াপথের ১০ গুণ বেশী)। দৃশ্যমান মহাবিশ্বে আনুমানিক ৩ x ১০−২৩টি তারা থাকতে পারে।[৭]বর্তমানের মহাজাগতিক মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের মূল উপাদান মূলতঃ কৃষ্ণ বা অন্ধকার শক্তি। ধরা হচ্ছে যে এই শক্তি সারা মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে এবং মহাবিশ্বের প্রসারণের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করছে। কৃষ্ণ শক্তির পরিমাণ যেখানে ৭৪% ভাগ ধরা হয়, মোট বস্তুর পরিমাণ সেখানে ২৬%। কিন্তু এই বস্তুর মধ্যে ২২% কৃষ্ণ বস্তু ও ৪% দৃশ্যমান বস্তু। কৃষ্ণ বস্তুর অস্তিত্ব পরোক্ষভাবে গ্যালাক্সির ঘূর্ণন, গ্যালাক্সিপুঞ্জ, মহাকর্ষীয় লেন্সিং, ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। কৃষ্ণ বস্তু যেহেতু মহাকর্ষ ছাড়া অন্য কোন বলের সংঙ্গে পারতপক্ষে কোন মিথষ্ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না, সেই জন্য তাকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা কঠিন।মহাবিশ্বের সংঙ্গে আমাদের পরিচয় দৃশ্যমান বস্তুর আঙ্গিকে। পরমাণু ও পরমাণু দ্বারা গঠিত যৌগ পদার্থ দিয়ে এই দৃশ্যমান বিশ্ব গঠিত। পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে গঠিত। প্রোটন ও নিউট্রনকে ব্যারিয়ন বলা হয়। ব্যারিয়ন তিনটি কোয়ার্ক কণা দিয়ে গঠিত। অন্যদিকে দুটি কোয়ার্ক কণা দিয়ে গঠিত কণাদের মেজন বলা হয়। অন্যদিকে লেপটন কণা কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত নয়। সবেচেয়ে পরিচিত লেপটন কণা হচ্ছে ইলেকট্রন। প্রমিত মডেল বা স্ট্যান্ডার্ড মডেল কোয়ার্ক, লেপটন ও বিভিন্ন বলের মিথষ্ক্রিয়ায় সাহায্যকারী কণাসমূহ (যেমন ফোটন, বোজন ও গ্লুয়োন) দিয়ে তৈরি। বর্তমানের কণা পদার্থবিদ্যাকে ব্যাখ্যা করতে এই মডেল সফল হয়েছে।মহাবিশ্বের গঠন ও আকার
সূর্য আমাদের নিকটবর্তী নক্ষত্র। সূর্য থেকে আলো আসতে ৮ মিনিট মত সময় লাগে, কাজেই সূর্যের দূরত্ত্ব হচ্ছে আনুমানিক ৮ আলোক মিনিট। আমাদের সৌর জগতের আকার হচ্ছে ১০ আলোক ঘন্টার মত। সূর্যের পরে আমাদের নিকটবর্তী তারা হচ্ছে ৪ আলোক বর্ষ দূরত্বে। নিচের চিত্রে ১৪ আলোক বর্ষের মধ্যে অবস্থিত সমস্ত তারাদের দেখানো হয়েছে।

আমাদের ১৪ আলোকবর্ষের মধ্যে যে সমস্ত তারা আছেআমাদের গ্যালাক্সি ছায়াপথনিচের ছবিতে ছায়াপথ গ্যালাক্সির বাহুসমূহ দেখানো হয়েছে। সূর্য থেকে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০,০০০ আলোক বর্ষ। গ্যালাক্সির ব্যাস ১০০,০০০ বা এক লক্ষ আলোক বর্ষ। কেন্দ্রের উল্টোদিকের অংশকে আমরা দেখতে পাই না।

আমাদের গ্যালাক্সির সর্পিল বাহুসমূহস্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জনিচের চিত্রে ছায়াপথের ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত গ্যালাক্সিগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্থানীয় গ্যালাক্সি দলের মধ্যে বড় তিনটি সর্পিল গ্যালাক্সি - ছায়াপথ, অ্যান্ড্রোমিডা বা M31 এবং M33 একটি মহাকর্ষীয় ত্রিভুজ তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের নিকটবর্তী বড় গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব হচ্ছে ২.৫ মিলিয়ন বা ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ। স্থানীয় দলের মধ্যে বেশীর ভাগ গ্যালাক্সিই বড় ম্যাজিল্লান মেঘের মত অনিয়মিত গ্যালাক্সি।
স্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জস্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জডান দিকের চিত্রে স্থানীয় গ্যালাক্সি দল থেকে স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জের অন্যান্য দলের দূরত্ত্ব দেখানো হয়েছে। এই মহাপুঞ্জের কেন্দ্র কন্যা গ্যালাক্সি দল হওয়াতে তাকে কন্যা মহাপুঞ্জ বা মহাদল বলা হয়। কন্যা গ্যালাক্সি পুঞ্জ আমাদের থেকে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বা ৬.৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই ধরণের মহাপুঞ্জগুলো ফিতার আকারের মত। সাবানের বুদবুদ দিয়ে এই ধরণের গ্যালাক্সিপুঞ্জ গঠনের মডেল করা যায়। দুটো বুদবুদের দেওয়াল যেখানে মেশে সেখানেই যেন গ্যালাক্সির ফিতা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জ বা সুপারক্লাস্টার।নিচের চিত্রে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখানো হচ্ছে। এই চিত্রে বুদবুদগুলোর মাঝের শূন্যতা (void) খুব ভাল করেই বোঝা যাচ্ছে। কন্যা গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জসহ ৫০ মেগাপার্সেকের (৫০ মিলিয়ন পার্সেক বা ১৬৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)মধ্যে সমস্ত পদার্থ ৬৫ মেগাপার্সেক দূরের নর্মা পুঞ্জের (Abell 3627)দিকে ৬০০ কিমি/সেকেন্ডে ছুটে যাচ্ছে। বৃহত্তর স্কেলে গ্যালাক্সি সৃষ্টির জন্য ব্যারিয়ন ধ্বনি স্পন্দন (Baryon Acoustic Oscillation) যথেষ্ট সফল হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী গ্যালাক্সি পুঞ্জ মোটামুটি ১০০ মেগাপার্সেক (~৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)স্কেলে বা স্থান জুড়ে সৃষ্টি হবে। স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের ডাটাতে ব্যারিয়ন স্পন্দন ২০০৫এ ধরা পড়ে।[৮]

আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে
হাবল দুরবীন মহাশূন্যের একটি মোটামুটি খালি অংশকে তাক করে বেশ কিছুদিন ধরে এই উচ্চ রেজলুশানের ছবিটি ধারণ করে। এই অংশটির মোট আকার চাঁদের কৌণিক ব্যাসের (আধ ডিগ্রী) সমান। নিচের বাঁদিকের বাক্সে সেটা দেখানো হয়েছে। এই ছবিতে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সবচেয়ে দূরবর্তী অঞ্চলের গ্যালাক্সীসমূহ দেখা যাচ্ছে। এখানে প্রতিটি গ্যালাক্সিতে অন্ততঃ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি তারা রয়েছে। এছাড়া এই ছবিতে প্রায় ১০০টি খুবই ছোট লাল গ্যালাক্সি আছে যাদের দূরত্ত্ব হয়তো আমাদের জানা মতে সবচেয়ে বেশী, সেগুলো বিগ ব্যাং হবার পরে কয়েক শো মিলিয়ন বছরের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছিল।বর্তমান মহাবিশ্বের উপাদান সমূহ
মহাবিশ্বের আকার বিশাল। বর্তমান বিশ্বতত্ত্বের মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের বর্তমান বয়েস ১৩.৭৫ বিলিয়ন বা ১,৩৭৫ কোটি বছর। এই মহাবিশ্বের দৃশ্যমান অংশের "এই মুহূর্তের" ব্যাস প্রায় ৯৩ বিলিয়ন আলোক বছর। যেহেতু মহাবিশ্বের প্রতিটি বিন্দু প্রতিটি বিন্দু থেকে প্রতি মুহূর্তে আরো দ্রুত সরছে, মহাবিশ্বের ব্যাস ১৩.৭৫ x ২ = ২৭.৫০ বিলিয়ন আলোক বছরের চাইতে বেশী। দেশ বা স্থানের প্রতিটি বিন্দু বহু দূরের কোন বিন্দুর তুলনায় আলোর গতির উর্ধে ভ্রমণ করে, যতক্ষণ না সেই বিন্দুগুলির মাঝে তথ্য আদানপ্রদান না হচ্ছে এই গতি বিশেষ বা সাধারণ আপেক্ষিকতার কোন নিয়ম ভঙ্গ করে না। কাজেই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বকে যদি একটা গোলক কল্পনা করা হও তবে তার ব্যাসার্ধ হবে প্রায় ৪৬ বিলিয়ন আলোক বর্ষ। যদিও সেই দূরত্ত্বে অবস্থিত গ্যালাক্সি থেকে এই মুহূর্তে যে বিকিরণ বার হচ্ছে তা আমরা কখনই দেখতে পাব না।জ্যোতির্বিদরা মনে করছেন দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ১০০ বিলিয়ন (১০−১১) গ্যালাক্সি আছে। এই গ্যালাক্সিরা খুব ছোট হতে পারে, যেমন মাত্র ১০ মিলিয়ন (বা ১ কোটি) তারা সম্বলিত বামন গ্যালাক্সি অথবা খুব বড় হতে পারে, দৈত্যাকার গ্যালাক্সিগুলিতে ১০০০ বিলিয়ন (১০−১২) তারা থাকতে পারে (আমাদের গ্যালাক্সি ছায়াপথের ১০ গুণ বেশী)। দৃশ্যমান মহাবিশ্বে আনুমানিক ৩ x ১০−২৩টি তারা থাকতে পারে।[৭]বর্তমানের মহাজাগতিক মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের মূল উপাদান মূলতঃ কৃষ্ণ বা অন্ধকার শক্তি। ধরা হচ্ছে যে এই শক্তি সারা মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে এবং মহাবিশ্বের প্রসারণের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করছে। কৃষ্ণ শক্তির পরিমাণ যেখানে ৭৪% ভাগ ধরা হয়, মোট বস্তুর পরিমাণ সেখানে ২৬%। কিন্তু এই বস্তুর মধ্যে ২২% কৃষ্ণ বস্তু ও ৪% দৃশ্যমান বস্তু। কৃষ্ণ বস্তুর অস্তিত্ব পরোক্ষভাবে গ্যালাক্সির ঘূর্ণন, গ্যালাক্সিপুঞ্জ, মহাকর্ষীয় লেন্সিং, ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। কৃষ্ণ বস্তু যেহেতু মহাকর্ষ ছাড়া অন্য কোন বলের সংঙ্গে পারতপক্ষে কোন মিথষ্ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না, সেই জন্য তাকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা কঠিন।মহাবিশ্বের সংঙ্গে আমাদের পরিচয় দৃশ্যমান বস্তুর আঙ্গিকে। পরমাণু ও পরমাণু দ্বারা গঠিত যৌগ পদার্থ দিয়ে এই দৃশ্যমান বিশ্ব গঠিত। পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে গঠিত। প্রোটন ও নিউট্রনকে ব্যারিয়ন বলা হয়। ব্যারিয়ন তিনটি কোয়ার্ক কণা দিয়ে গঠিত। অন্যদিকে দুটি কোয়ার্ক কণা দিয়ে গঠিত কণাদের মেজন বলা হয়। অন্যদিকে লেপটন কণা কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত নয়। সবেচেয়ে পরিচিত লেপটন কণা হচ্ছে ইলেকট্রন। প্রমিত মডেল বা স্ট্যান্ডার্ড মডেল কোয়ার্ক, লেপটন ও বিভিন্ন বলের মিথষ্ক্রিয়ায় সাহায্যকারী কণাসমূহ (যেমন ফোটন, বোজন ও গ্লুয়োন) দিয়ে তৈরি। বর্তমানের কণা পদার্থবিদ্যাকে ব্যাখ্যা করতে এই মডেল সফল হয়েছে।মহাবিশ্বের গঠন ও আকার
সূর্য আমাদের নিকটবর্তী নক্ষত্র। সূর্য থেকে আলো আসতে ৮ মিনিট মত সময় লাগে, কাজেই সূর্যের দূরত্ত্ব হচ্ছে আনুমানিক ৮ আলোক মিনিট। আমাদের সৌর জগতের আকার হচ্ছে ১০ আলোক ঘন্টার মত। সূর্যের পরে আমাদের নিকটবর্তী তারা হচ্ছে ৪ আলোক বর্ষ দূরত্বে। নিচের চিত্রে ১৪ আলোক বর্ষের মধ্যে অবস্থিত সমস্ত তারাদের দেখানো হয়েছে।
আমাদের ১৪ আলোকবর্ষের মধ্যে যে সমস্ত তারা আছেআমাদের গ্যালাক্সি ছায়াপথনিচের ছবিতে ছায়াপথ গ্যালাক্সির বাহুসমূহ দেখানো হয়েছে। সূর্য থেকে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০,০০০ আলোক বর্ষ। গ্যালাক্সির ব্যাস ১০০,০০০ বা এক লক্ষ আলোক বর্ষ। কেন্দ্রের উল্টোদিকের অংশকে আমরা দেখতে পাই না।

আমাদের গ্যালাক্সির সর্পিল বাহুসমূহস্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জনিচের চিত্রে ছায়াপথের ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত গ্যালাক্সিগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্থানীয় গ্যালাক্সি দলের মধ্যে বড় তিনটি সর্পিল গ্যালাক্সি - ছায়াপথ, অ্যান্ড্রোমিডা বা M31 এবং M33 একটি মহাকর্ষীয় ত্রিভুজ তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের নিকটবর্তী বড় গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব হচ্ছে ২.৫ মিলিয়ন বা ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ। স্থানীয় দলের মধ্যে বেশীর ভাগ গ্যালাক্সিই বড় ম্যাজিল্লান মেঘের মত অনিয়মিত গ্যালাক্সি।
স্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জস্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জডান দিকের চিত্রে স্থানীয় গ্যালাক্সি দল থেকে স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জের অন্যান্য দলের দূরত্ত্ব দেখানো হয়েছে। এই মহাপুঞ্জের কেন্দ্র কন্যা গ্যালাক্সি দল হওয়াতে তাকে কন্যা মহাপুঞ্জ বা মহাদল বলা হয়। কন্যা গ্যালাক্সি পুঞ্জ আমাদের থেকে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বা ৬.৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই ধরণের মহাপুঞ্জগুলো ফিতার আকারের মত। সাবানের বুদবুদ দিয়ে এই ধরণের গ্যালাক্সিপুঞ্জ গঠনের মডেল করা যায়। দুটো বুদবুদের দেওয়াল যেখানে মেশে সেখানেই যেন গ্যালাক্সির ফিতা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জ বা সুপারক্লাস্টার।নিচের চিত্রে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখানো হচ্ছে। এই চিত্রে বুদবুদগুলোর মাঝের শূন্যতা (void) খুব ভাল করেই বোঝা যাচ্ছে। কন্যা গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জসহ ৫০ মেগাপার্সেকের (৫০ মিলিয়ন পার্সেক বা ১৬৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)মধ্যে সমস্ত পদার্থ ৬৫ মেগাপার্সেক দূরের নর্মা পুঞ্জের (Abell 3627)দিকে ৬০০ কিমি/সেকেন্ডে ছুটে যাচ্ছে। বৃহত্তর স্কেলে গ্যালাক্সি সৃষ্টির জন্য ব্যারিয়ন ধ্বনি স্পন্দন (Baryon Acoustic Oscillation) যথেষ্ট সফল হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী গ্যালাক্সি পুঞ্জ মোটামুটি ১০০ মেগাপার্সেক (~৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)স্কেলে বা স্থান জুড়ে সৃষ্টি হবে। স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের ডাটাতে ব্যারিয়ন স্পন্দন ২০০৫এ ধরা পড়ে।[৮]

আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে
আমাদের ১৪ আলোকবর্ষের মধ্যে যে সমস্ত তারা আছেআমাদের গ্যালাক্সি ছায়াপথনিচের ছবিতে ছায়াপথ গ্যালাক্সির বাহুসমূহ দেখানো হয়েছে। সূর্য থেকে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০,০০০ আলোক বর্ষ। গ্যালাক্সির ব্যাস ১০০,০০০ বা এক লক্ষ আলোক বর্ষ। কেন্দ্রের উল্টোদিকের অংশকে আমরা দেখতে পাই না।
আমাদের গ্যালাক্সির সর্পিল বাহুসমূহস্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জনিচের চিত্রে ছায়াপথের ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত গ্যালাক্সিগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্থানীয় গ্যালাক্সি দলের মধ্যে বড় তিনটি সর্পিল গ্যালাক্সি - ছায়াপথ, অ্যান্ড্রোমিডা বা M31 এবং M33 একটি মহাকর্ষীয় ত্রিভুজ তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের নিকটবর্তী বড় গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব হচ্ছে ২.৫ মিলিয়ন বা ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ। স্থানীয় দলের মধ্যে বেশীর ভাগ গ্যালাক্সিই বড় ম্যাজিল্লান মেঘের মত অনিয়মিত গ্যালাক্সি।
স্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জস্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জডান দিকের চিত্রে স্থানীয় গ্যালাক্সি দল থেকে স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জের অন্যান্য দলের দূরত্ত্ব দেখানো হয়েছে। এই মহাপুঞ্জের কেন্দ্র কন্যা গ্যালাক্সি দল হওয়াতে তাকে কন্যা মহাপুঞ্জ বা মহাদল বলা হয়। কন্যা গ্যালাক্সি পুঞ্জ আমাদের থেকে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বা ৬.৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই ধরণের মহাপুঞ্জগুলো ফিতার আকারের মত। সাবানের বুদবুদ দিয়ে এই ধরণের গ্যালাক্সিপুঞ্জ গঠনের মডেল করা যায়। দুটো বুদবুদের দেওয়াল যেখানে মেশে সেখানেই যেন গ্যালাক্সির ফিতা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জ বা সুপারক্লাস্টার।নিচের চিত্রে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখানো হচ্ছে। এই চিত্রে বুদবুদগুলোর মাঝের শূন্যতা (void) খুব ভাল করেই বোঝা যাচ্ছে। কন্যা গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জসহ ৫০ মেগাপার্সেকের (৫০ মিলিয়ন পার্সেক বা ১৬৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)মধ্যে সমস্ত পদার্থ ৬৫ মেগাপার্সেক দূরের নর্মা পুঞ্জের (Abell 3627)দিকে ৬০০ কিমি/সেকেন্ডে ছুটে যাচ্ছে। বৃহত্তর স্কেলে গ্যালাক্সি সৃষ্টির জন্য ব্যারিয়ন ধ্বনি স্পন্দন (Baryon Acoustic Oscillation) যথেষ্ট সফল হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী গ্যালাক্সি পুঞ্জ মোটামুটি ১০০ মেগাপার্সেক (~৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)স্কেলে বা স্থান জুড়ে সৃষ্টি হবে। স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের ডাটাতে ব্যারিয়ন স্পন্দন ২০০৫এ ধরা পড়ে।[৮]

আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে
আমাদের গ্যালাক্সির সর্পিল বাহুসমূহস্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জনিচের চিত্রে ছায়াপথের ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত গ্যালাক্সিগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্থানীয় গ্যালাক্সি দলের মধ্যে বড় তিনটি সর্পিল গ্যালাক্সি - ছায়াপথ, অ্যান্ড্রোমিডা বা M31 এবং M33 একটি মহাকর্ষীয় ত্রিভুজ তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের নিকটবর্তী বড় গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব হচ্ছে ২.৫ মিলিয়ন বা ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ। স্থানীয় দলের মধ্যে বেশীর ভাগ গ্যালাক্সিই বড় ম্যাজিল্লান মেঘের মত অনিয়মিত গ্যালাক্সি।
স্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জস্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জডান দিকের চিত্রে স্থানীয় গ্যালাক্সি দল থেকে স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জের অন্যান্য দলের দূরত্ত্ব দেখানো হয়েছে। এই মহাপুঞ্জের কেন্দ্র কন্যা গ্যালাক্সি দল হওয়াতে তাকে কন্যা মহাপুঞ্জ বা মহাদল বলা হয়। কন্যা গ্যালাক্সি পুঞ্জ আমাদের থেকে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বা ৬.৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই ধরণের মহাপুঞ্জগুলো ফিতার আকারের মত। সাবানের বুদবুদ দিয়ে এই ধরণের গ্যালাক্সিপুঞ্জ গঠনের মডেল করা যায়। দুটো বুদবুদের দেওয়াল যেখানে মেশে সেখানেই যেন গ্যালাক্সির ফিতা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জ বা সুপারক্লাস্টার।নিচের চিত্রে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখানো হচ্ছে। এই চিত্রে বুদবুদগুলোর মাঝের শূন্যতা (void) খুব ভাল করেই বোঝা যাচ্ছে। কন্যা গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জসহ ৫০ মেগাপার্সেকের (৫০ মিলিয়ন পার্সেক বা ১৬৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)মধ্যে সমস্ত পদার্থ ৬৫ মেগাপার্সেক দূরের নর্মা পুঞ্জের (Abell 3627)দিকে ৬০০ কিমি/সেকেন্ডে ছুটে যাচ্ছে। বৃহত্তর স্কেলে গ্যালাক্সি সৃষ্টির জন্য ব্যারিয়ন ধ্বনি স্পন্দন (Baryon Acoustic Oscillation) যথেষ্ট সফল হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী গ্যালাক্সি পুঞ্জ মোটামুটি ১০০ মেগাপার্সেক (~৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)স্কেলে বা স্থান জুড়ে সৃষ্টি হবে। স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের ডাটাতে ব্যারিয়ন স্পন্দন ২০০৫এ ধরা পড়ে।[৮]

আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে
স্থানীয় গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জ বা সুপারক্লাস্টার।নিচের চিত্রে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখানো হচ্ছে। এই চিত্রে বুদবুদগুলোর মাঝের শূন্যতা (void) খুব ভাল করেই বোঝা যাচ্ছে। কন্যা গ্যালাক্সি মহাপুঞ্জসহ ৫০ মেগাপার্সেকের (৫০ মিলিয়ন পার্সেক বা ১৬৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)মধ্যে সমস্ত পদার্থ ৬৫ মেগাপার্সেক দূরের নর্মা পুঞ্জের (Abell 3627)দিকে ৬০০ কিমি/সেকেন্ডে ছুটে যাচ্ছে। বৃহত্তর স্কেলে গ্যালাক্সি সৃষ্টির জন্য ব্যারিয়ন ধ্বনি স্পন্দন (Baryon Acoustic Oscillation) যথেষ্ট সফল হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী গ্যালাক্সি পুঞ্জ মোটামুটি ১০০ মেগাপার্সেক (~৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ)স্কেলে বা স্থান জুড়ে সৃষ্টি হবে। স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের ডাটাতে ব্যারিয়ন স্পন্দন ২০০৫এ ধরা পড়ে।[৮]
আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে
আমাদের ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের মধ্যের মহাবিশ্ব। নিকটবর্তী গ্যালাক্সি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে

প্রাচীন কালে মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করার জন্য নানাবিধ বিশ্বতত্ত্বের আশ্রয় নেওয়া হত। পুরাতন গ্রীক দার্শনিকরাই প্রথম এই ধরণের তত্ত্বে গাণিতিক মডেলের সাহায্য নেন এবং পৃথিবী কেন্দ্রিক একটি মহাবিশ্বের ধারণা প্রণয়ন করেন। তাঁদের মডেলে পৃথিবীই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সমস্ত গ্রহ, সূর্য ও নক্ষত্ররা ঘুরছে। গ্রীকদের এই মডেলে মহাবিশ্বের মোট আয়তন বর্তমানে জ্ঞাত বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথের মধ্যেই ছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন আকাশের তারারা আমাদের থেকে খুব বেশী দূরে অবস্থিত নয়।বেশ কয়েক জন জ্যোতির্বিদ পৃথিবীকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করলেও যতদিন না চৌদ্দশো শতকে কোপের্নিকাস সৌরকেন্দ্রিক মহাবিশ্বকে যৌক্তিক ভাবে তাঁর বইয়ে উপস্থাপনা করলেন ততদিন পৃথিবীকেন্দ্রিক ধারণা মানুষের মনে দৃঢ়ভাবে গেঁড়ে ছিল। পরবর্তীকালে নিউটনের গতি ও মহাকর্ষ সংক্রান্ত গভীর ধারণা পর্যবেক্ষণের সাথে সৌরকেন্দ্রিক জগতের সামঞ্জস্য নির্ধারণ করে। ধীরে ধীরে জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করেন সূর্যের মতই কোটি কোটি তারা দিয়ে একটি গ্যালাক্সি গঠিত। কয়েক শত বছর বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল সমগ্র মহাবিশ্ব মানে শুধুমাত্র আমাদের এই ছায়াপথ গ্যালাক্সিটিই। ১৯২০র দশকে উন্নত দুরবীনের কল্যাণে জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করলেন ছায়াপথের বাইরে অন্য গ্যালাক্সিদের। [১][২]সেই কোটি কোটি গ্যালাক্সিদের মধ্যে ছায়াপথের মতই কোটি কোটি তারাদের অবস্থান। সেই সমস্ত গ্যালাক্সিদের থেকে আগত আলোর বর্ণালী বিশ্লেষণে বোঝা গেল সেই গ্যালাক্সিগুলি আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। [৩]এর সহজতম ব্যাখ্যা হল গ্যালাক্সিদের মধ্যে স্থানের প্রসারণ হচ্ছে এবং প্রতিটি গ্যালাক্সিই অন্য গ্যালাক্সি থেকে দূরে সরছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা হল সুদূর অতীতে সমস্ত গ্যালাক্সিগুলি বা তাদের অন্তর্নিহিত সমস্ত পদার্থই একসাথে খুব ঘন অবস্থায় ছিল এবং কোন মহা বিস্ফোরণের ফলে বস্তুসমূহ একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই বিস্ফোরণের নাম দেওয়া হল বিগ ব্যাং। ১৯৬০এর দশকে বিজ্ঞানীরা বিগ ব্যাংএ সৃষ্ট উষ্ণ বিকিরণের শীতল অবশেষের সন্ধান পেলেন।[৪] এই তরঙ্গ বিগ ব্যাং ঘটনার প্রায় ৪০০,০০০ বা চার লক্ষ বছর পরে, বস্তু ঘনত্বের হ্রাসের পর, মুক্ত হয়েছিল। এই মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ মহাবিশ্বের প্রতিটি জায়গাতেই পাওয়া যায়। এক অর্থে বলা যায় এই তরঙ্গ দৃশ্যমান মহাবিশ্বের শেষ প্রান্ত থেকে আসছে। বিংশ শতাব্দীর শেষে এসে জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করলেন মহাবিশ্বের প্রসারণ ত্বরাণ্বিত হচ্ছে।[৫] এই আবিষ্কারটি বিশ্বতত্ত্বের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিল।বিগ ব্যাং মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল একটা ভীষণ ঘন ও উষ্ণ দশা থেকে। এই সময় বা অবস্থাকে প্ল্যাঙ্ক ইপোখ বলে অভিহিত করা যায়। সেই সময় থেকে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ হয়ে চলেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা শুরুর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই (১০−-৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই) মহাবিশ্বের অতি স্ফিতী (inflation) হয় যা কিনা দেশ বা স্থানের প্রতিটি অংশে প্রায় একই তাপমাত্রা স্থাপন করতে সাহায্য করে।[৬] এই সময়ে সুসম ঘনত্বের মাঝে হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ভবিষ্যত গ্যালাক্সি সৃষ্টির বীজ তৈরি হয়। মহাকর্ষ শক্তি মাধ্যমে সম্প্রসারণের বিরূদ্ধে বস্তুজগতকে আকর্ষিত করে গ্যালাক্সি সৃষ্টির পেছনে কৃষ্ণ বা অন্ধকার বস্তুর বিশেষ ভূমিকা আছে। অন্যদিকে মহাবিশ্বের বর্তমান প্রসারণের মাত্রার ত্বরণের জন্য কৃষ্ণ বা অন্ধকার শক্তি বলে একটি জিনিসকে দায়ী করা হচ্ছে। তাত্ত্বিক ভাবে কৃষ্ণ বস্তু মহাকর্ষ ছাড়া অন্য বলগুলোর সাথে (তড়িৎ-চুম্বকীয়, সবল ও দুর্বল) খুব অল্পই বিক্রিয়া করে সেইজন্য ডিটেকটর দিয়ে তাকে দেখা মুশকিল। বর্তমান মহাবিশ্বের মূল অংশই হচ্ছে কৃষ্ণ শক্তি, বাকিটা কৃষ্ণ বস্তু। আমরা চোখে বা ডিটেকটর মাধ্যমে যা দেখি তা মহাবিশ্বের মাত্র ৫ শতাংশের কম। এই মডেলে মহাবিশ্বের বর্তমান বয়েস ১৩.৭৫ বিলিয়ন বা ১,৩৭৫ কোটি বছর। এই মহাবিশ্বের দৃশ্যমান অংশের "এই মুহূর্তের" ব্যাস প্রায় ৯৩ বিলিয়ন আলোক বছর। যেহেতু মহাবিশ্বের প্রতিটি বিন্দু প্রতিটি বিন্দু থেকে প্রতি মুহূর্তে আরো দ্রুত সরছে, মহাবিশ্বের ব্যাস ১৩.৭৫ x ২ = ২৭.৫০ বিলিয়ন আলোক বছরের চাইতে বেশী। দেশ বা স্থানের প্রতিটি বিন্দু বহু দূরের কোন বিন্দুর তুলনায় আলোর গতির উর্ধে ভ্রমণ করে, যতক্ষণ না সেই বিন্দুগুলির মাঝে তথ্য আদানপ্রদান না হচ্ছে এই গতি বিশেষ বা সাধারণ আপেক্ষিকতার কোন নিয়ম ভঙ্গ করে না।