আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!!

আমরা কোন স্প্যাম পাঠাবোনা। ওয়াদা।

বিজ্ঞান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিজ্ঞান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, মার্চ ১৭, ২০১৪

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের পরমানু রাজ্য::[পর্ব--৩]

 ২।
আলোর গল্পটা অনেক পুরানো। এককালে মানুষ ভাবত যে, মানুষ চোখ থেকে আলো বের করে তবেই দেখে। কি সর্বনেশে কথা, নাক দিয়ে সর্দি বের করছি, মুখ দিয়ে থুতু বের করছি, পেছন দিয়ে হাগু বের করছি, ইয়ে দিয়ে... ... নাহ, থাক। মানে বলছিলাম কি, এত কিছুর পরে চোখ দিয়ে আবার সুপারম্যানের মত আলোও বের করতে হবে? কাভি নেহি! কথাটা বলেছিলেন আল হাজেন নামে এক বিজ্ঞানী। শের শাহের আগে যেমন ঘোড়া ডাকত না, প্রিস্টলীর আগে যেমন মানুষ অক্সিজেন ছাড়াই বেশ নিঃশ্বাস নিত, আল হাজেনের আগে মানুষ তেমনি চোখ থেকে আলো বের করে তবে দেখত। যাহোক, তখন থেকেই বস্তু থেকে চোখে আলো এসে পড়তে লাগল। সেই সঙ্গে আসল নিত্য নতুন তত্ত্ব। নিউটন যেমন ভাবতেন আলো হল গিয়ে বিলিয়ার্ড বল কিংবা বুলেটের মত। আরো বললেন বিভিন্ন আকারের বুলেটের জন্য আমরা বিভিন্ন রঙ দেখি। মানে, গোল বুলেটের জন্য লাল আলো হলে চারকোণা বুলেটের জন্য সবুজ আলো, এমন। আলোর আবার নানান খেলা দেখাবার অভ্যাস আছে। যেমন দেয়ালে বলের মত ড্রপ খেয়ে ফিরে আসা (বা প্রতিফলন), অথবা বাতাস থেকে পানিতে ডুব দেবার সময় দিক বদলে বেকে যাওয়া (বা প্রতিসরণ)। কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে টিকে থাকতে হলে তাকে পরীক্ষায় মানে ব্যাবহারিক পরীক্ষায় পাস করতে হয়। আবার আশে-পাশে যা ঘটে তাকে ব্যাখ্যা করতেও পারতে হয়। এখন, আলো নতুন খেলা দেখানোর আগ পর্যন্ত এই তত্ত্ব বহুদিন টিকে ছিল, কারন তা দিয়ে আলোর দেখানো সব প্রচলিত খেলাই ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল। গোল বাধালেন বিজ্ঞানী ইয়ং। 
৩।
পানিতে একটা আঙ্গুল চোবালে কি হয়? ঢেউ, ঠিক ধরেছেন। কিভাবে? যেখানে আঙুল চোবাচ্ছেন সেখান থেকে বৃত্তের মত গোল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে না? একটা উচু বৃত্ত তারপর একটা নিচু বৃত্ত। আবার উঁচু, আবার নিচু, কুচকাওয়াজের লেফট-রাইট-লেফট-রাইটের মত এই উঁচু-নিচু-উঁচু-নিচু বৃত্তকাওয়াজ চলতেই থাকে। কিন্তু দুটো আঙুল চোবালে? তখন? তখন দেখা যাবে দু’আঙ্গুলের মাথা থেকে দুটো বৃত্ত ছড়িয়ে পড়ছে। এই পর্যন্ত কোনই সমস্যা নেই। সমস্যা হল যেখানে বৃত্তকাওয়াজের দুই দল একজনের ওপর দিয়ে আরেকজন পার হতে যায়, ঠিক সেখানে। কোথাও দেখা যায় দুই দলই এক যোগে উঁচুর ধাতে ছিল, সেখানটা আরও বেশি উঁচু হয়ে ওঠে। কোথাও আবার দেখা যায় দুই দলই এক যোগে নিচুর ধাতে ছিল, সেখানটা আরও বেশি নিচু হয়ে ওঠে। মুশকিল হয় সেই সব জায়গায়, যেখানে এক দল উঁচু আরেক দল নিচু হতে চাচ্ছে। সেখানটাতে দেখা যায় পানি উঠছেও না, নামছেও না- ঢেউ আসার আগে পানির লেভেল যেখানে ছিল, ওই অংশেও পানির লেভেল সেখানেই আছে, অথচ বৃত্তকাওয়াজ ঠিকই পার হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ দুটো ঢেউ মুখোমুখি হয়ে গেলে শিবিরের মত মারামারি না করে একটার মধ্যে দিয়ে আরেকটা চলে যায়, যাবার সময় কোথাও বেশি উঁচু, কোথাও বেশি নিচু বা কোথাও সমান হয়ে যায়। ঢেউয়ের এই অভ্যাসের পোশাকি নাম ব্যাতিচার। ঢেউয়ের সমবর্তন বা অপবর্তন ইত্যাদি বাহারি নামের এমন আর কিছু অভ্যাস আছে। মুশকিল হল ইয়ং তাঁর এক পরীক্ষায় আলোর ব্যাতিচার দেখে ফেললেন। হাইগেনস নামের আরেক বিজ্ঞানী আবার সেজন্য ঠেলেঠুলে একটা তত্ত্বও দাঁড় করিয়ে ফেললেন।
৪।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের বিজ্ঞান বইগুলোতে বড় বড় করে লেখা থাকে অমুক বিজ্ঞানী বলেছেন “আলো এক প্রকার কণা” কিংবা তমুক বিজ্ঞানী বলেছেন “আলো এক প্রকার তরঙ্গ”। ব্যাস মাথা খাওয়া শেষ। জোকাই লামার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের চাইতে এই সব বিভ্রান্তিকর কথাগুলোও কম ক্ষতিকর নয়। আসল কথাটা হল, আলো কখনও কখনও কণার মত আচরন করে কখনও বা তরঙ্গের মত। তার মানে এই নয় যে আলোকে পুরোপুরি “কণা” বা “তরঙ্গ” হয়ে যেতে হবে। সাহানা বাজপেয়ী’র রবীন্দ্রসঙ্গীত আমার চমৎকার লাগে, এখণ কি বলব যে “সাহানা বাজপেয়ী এক প্রকার রবীন্দ্রসঙ্গীত”? কিংবা মেসি দুর্দান্ত ফুটবল খেলে বলে কি বলতে হবে যে “মেসি এক প্রকার ফুটবল”? মোটেই না! তবে আলোর ওপর কেন এই মিছে অত্যাচার। যাহোক, এটা ঠিক যে, আলো বড়ই অদ্ভুদ! ক্যারমের স্ট্রাইকার যেমন অন্য গুটিদের ছিটকে দিতে পারে, আলোও তেমন গুঁতো দিয়ে ইলেকট্রন ইত্যাদিকে ছিটকে দিতে পারে- এটা “আলোর কণাধর্ম”। আবার কখনও বা দুটো আলো মিলেমিশে কোথাও বেশি আলো কোথাও কম আলোর চমৎকার নকশাও (ঠিক যেমনটা ঢেউয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তেমনটা) বানাতে পারে- এটা হল “আলোর তরঙ্গধর্ম”। এককালে বিজ্ঞানীরা ভাবতেন একটা তত্ত্ব দিয়েই বুঝি বা আলোর সব খেলা ব্যাখা করা যাবে। পরে ধীরে ধীরে দেখা গেল যে- আলো আসলে বলের মতও আবার ঢেউয়ের মতও। বেশি জটিল হয়ে গেল? আচ্ছা, মনে করেন এই যে আমাদের হিমু ভাই- হাড় কাঁপানো হড়ড় লেখেন, মন ছোঁয়া গল্প লেখেন, দুর্দান্ত স্যাট্যায়ার লেখেন, চমৎকার ছড়া লেখেন, কুকিলদের সাথে গানও গান। তারমানে কখনও তিনি ছড়াকার, কখনও গাতক, কখনও চিন্তক ইত্যাদি ইত্যাদি। এখণ সবগুলো গুন তাকে তো একই সাথে দেখাতে হচ্ছেনা। একেকটা, একেক দিন, একেক সময়ে প্রকাশিত হচ্ছে। যেদিন গান গাচ্ছেন ঐ মুহূর্তে ছড়াকারত্ব প্রযোজ্য হচ্ছে না, আবার ছড়া লিখলে গাতক পরিচয় খারিজও হয়ে যাচ্ছে না। আলোও ঠিক হিমু ভাইয়ের মত। যখন তার ফুটবল খেলার কথা তখন হয়ত সে “কণার মত আচরণ” করে, কিংবা যখন গান গাইতে ডাক পড়ে তখন আবার “তরঙ্গের মত আচরণ” করে। 
৫।
এবার আইনস্টাইনের গল্প। ভদ্রলোক বিখ্যাত হয়েছিলেন “আপেক্ষিকতার তত্ত্ব” আর “ই ইকুয়েলস টু এম সি স্কয়ার” এর জন্য। ঐ সময় সেটা দুইশ’ বছর পরে নিউটনের সারা জীবনের কাজকর্মকে প্রায় ছুঁড়েই ফেলেছিল আরকি। কিন্তু সেগুলো পরীক্ষা করে দেখার মত সূক্ষ্ম যান্ত্রিক সামর্থ্য সেই সময় ছিলনা। ১৯১০ সাল থেকে শুরু করে প্রায় এক দশক নোবেল কমিটির আলোচনার টেবিল আর ফাইলেই আটকা পড়ে ছিলেন তিনি। শেষমেশ বিজ্ঞানীরা প্রায় ধরে বেধেই তাকে নোবেল প্রাইজ দিয়ে দিলেন। তখন একজন বিজ্ঞানী, ব্রিলোঁয়া বলেই ফেলেছিলেন- “আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর, মানুষ কি ভাববে- যদি আইনস্টাইনের নাম নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় না থাকে”। অবশেষে তিনি নোবেল পুরস্কার পেলেন ১৯২১ সালে, সেশন জটের কারনে যা দেয়া হয় ১৯২২ সালে। তবে সে অনুষ্ঠানে আইনস্টাইন যোগ দিতে পারেননি। মজার ব্যাপার হল তিনি পুরস্কারটি পান “আলোর তড়িৎ ক্রিয়া” সংক্রান্ত একটি গবেষণা পত্রের জন্য। প্রকৃতি জুয়ো খেলুক আর নাই খেলুক, তাঁর মত মহাবিজ্ঞানীকে নিয়ে তামাশা করতে ছাড়েনি। কারন এই বিশেষ গবেষণাপত্রটির জন্য আইনস্টাইন সাহায্য নিয়েছিলেন “কোয়ান্টাম তত্ত্বের”, যা তিনি সারাজীবন মেনে নিতে পারেননি। 
৬। 
আলোক তড়িৎ ক্রিয়া আবিষ্কার করেন লেনার্ড নামে এক বিজ্ঞানী। আমরা তো জানিই ইলেকট্রন (যেকোনো কারনেই হোক) যখন দৌড়ের উপর থাকে তখন তাকে বলে তড়িৎ বা ইলেকট্রিসিটি; এখন, আলোর গুঁতোয় যদি ইলেকট্রন দৌড়াদৌড়ি করে তবে সেটাই হবে আলোক তড়িৎ বা ফোটো-ইলেকট্রিসিটি। [ইলেকট্রন যদি পেন্সিলের গুঁতোয় দৌড়ুত তবে তার নাম হত পেন্সিল-ইলেকট্রিসিটি।] এই আলোর গুঁতোগুঁতি নিয়ে অন্য উদ্দেশ্য গবেষণা করতে গিয়ে আরেক বিজ্ঞানী হার্জ অদ্ভুত কিছু ঘটনা দেখেন। হার্জ নামটা কি চেনা চেনা লাগে? তাঁর নাম থেকেই কিন্তু কম্পাঙ্কের এককের নাম হার্জ রাখা হয়েছে। কম্পাঙ্ক মানে হল- এক সেকেন্ডে কোন ঢেউ যতবার লাফায়, সেই সংখ্যাটা। এক সেকেন্ডে গোলাম আজম যদি ৫টা খুন করতে পারে- তবে গোলাম আজমের খৌনিক* কম্পাঙ্ক হবে ৫ হার্জ। সচলের “দৈনিক” কবিরা যদি এক সেকেন্ডে ১০টা কবিতা লিখতে পারে তবে তাদের কাব্যিক কম্পাঙ্ক হবে ১০ হার্জ, এমন। এই হল কম্পাঙ্ক আর হার্জ। মজার ব্যাপার হল হার্জ যে পরীক্ষাটা করছিলেন তাঁর উদ্দেশ্য ছিল আলো যে তরঙ্গধর্মী সেটা প্রমাণ করা, ঠিক সেসময় প্রকৃতি জানিয়ে দিল গল্প শেষ হয়নি। প্রকৃতি বড়ই রসিক, হিমু ভাই যেমন গল্পকে ক্লাইম্যাক্সে তুলে দিয়ে চা খেতে যান, প্রকৃতিও কখনও কখনও ঠিক তাই করে। 
[ * কোণ থেকে কৌণিক হতে পারলে, খুন থেকে খৌনিক নয় কেন? ] 
৭।
ধরেন, সাগরপারে লাইন ধরে কয়েকটা কোকের বোতল রাখা আছে। এমন সময় একটা ঢেউ আসলে সেগুলো একেকটা একেক দিকে ছিটকে পড়বে এটাই প্রত্যাশিত। আরো প্রত্যাশিত যে ঢেউ যত বড় হবে, ছিটকে তত বেশিদূরে যাবে- তাই তো? কিন্তু যদি তা না হয়, তখন? ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছিল হার্জের করা পরীক্ষায়। সাধারণ মানুষ এমন কিছুর দেখা পেলে নিশ্চয় “অলৌকিক” ভেবে পূজো করতে বসে যেত। কিন্তু ওই যে বলেছিলাম, বিজ্ঞানীরা বড় ঘাড়ত্যারা, আর আইনস্টাইন তো রীতিমত গুন্ডাসর্দার। তিনি ঠিকই ভেবে বার করলেন এর ব্যাখা। অবশ্য তার আগে ম্যাক্সপ্ল্যাঙ্কের কথামত মেনে নিলেন আলো জিনিস্টা মোটেই বস্তায় রাখা আলুর মত আস্ত নয়; বরং ভাজির জন্য কুচিকুচি করা আলুর মত টুকরো করা। আসেন, এবার রূপকথার দেশ থেকে একটু ঘুরে আসি। ধরেন, সেই দেশে তিনটা সাগর আছে। প্রথমটা টিটি বলের, দ্বিতীয়টা টেনিস বলের, তৃতীয়টা ফুটবলের। এখন, কোকের বোতলগুলি তিন সাগরের পাড়ে সাজিয়ে রাখলে কি হতে পারে? টিটি বল জিনিসটা এতই হালকা পাতলা, দেখা যাবে বিশাল একটা ঢেউ ভাঙ্গলেও বোতলের কিচ্ছু হবেনা। টেনিস বলের সাগরে দেখা যাবে লড়াই প্রায় সমানে সমান- কোকের বোতল কেঁপে উঠবে, কয়েকটা কাত হবে, কিন্তু ছিটকে পড়বে না। আর ফুটবলের সাগরতীরে দেখা যাবে একেবারে পল্টনের লাঠিচার্জের মত দশা, কোন বোতল যে কোনদিকে ছিটকে পড়বে তাঁর কোন ঠিক ঠিকানা নেই। টিটি বলের সাগরে বিশাল একটা ঢেউও যেখানে কোন কাজ করতে পারেনা, ফুটবলের সাগরে ছোট্ট একরত্তি ঢেউই সেখানে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে দিতে সক্ষম। এবার কোকের বোতল গুলো সরিয়ে ইলেকট্রনের কথা ভাবুন। আর টিটি বলের বদলে ভাবুন অল্প কম্পাঙ্কের অর্থাৎ অল্প শক্তির আলোর কথা। টেনিস বল আর ফুটবল কেটে লিখুন মাঝারী ও বড় কম্পাঙ্ক অর্থাৎ মাঝারী ও বড় শক্তির আলো। যে আলোর কম্পাঙ্ক যত বেশি, তাঁর শক্তিও তত বেশি। তাই, অল্প কম্পাঙ্কের অনেকখানি আলো যা পারেনা, বেশি কম্পাঙ্কের অল্প একটু আলোই সে কাজটা খুব সহজে করে ফেলে। এই শেষ লাইনটাই ছিল আইনস্টাইনের নোবেল প্রাইজ পাওয়া গবেষণাপত্রের মূল কথা।

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০১৪

কোয়ান্টাম বিচ্যুতির মাধ্যমে সনাক্ত করা গেল একটি একক ফোটনের বৈশিষ্ট্য

আজ থেকে দুইশ বছর আগে বিজ্ঞানী ফ্রনহফার সূর্য রশ্মির বর্ণালিতে অন্ধকার অঞ্চল (ডার্ক লাইন) খুঁজে পান। এই আবিষ্কারের পরবর্তীতে এটা আবিষ্কার করা হয় যে এই বর্ণালি থেকে, বর্ণালি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সূর্যের আবহাওয়া, রাসায়নিক গঠন, এবং তার অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। 


অ্যান্টিম্যাটার বা প্রতিপদার্থ বলতে যা বোঝায়.........

বিগ ব্যাং যখন ঘটে, যখন বিস্ফোরণের মাধ্যমে সূচনা হয় মহাবিশ্বের; ধারণা করা হয় ঠিক তখনি সৃষ্টি হয়েছিল আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যা দেখে অভ্যস্ত সেসব কিছু (পদার্থ বা ম্যাটার) এবং প্রতিপদার্থ(অ্যান্টিম্যাটার). আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু দেখে থাকি তা পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত, আর এই পরমাণুই প্রথম তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাঙ্গের সময়। পরমাণুর গঠন সবারই জানা। নিচে উদাহরণ হিসেবে একটা মডেল দেওয়া হল।

সৃষ্টির ইতিকথা ও অন্যান্য

বিশাল এই মহাবিশ্বের ছোট এই পৃথিবীর বাসিন্দা আমরা। এখন পর্যন্ত মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণী আমারই। প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি আমাদের এই নিবাসের। আর মা্নুষ সর্বদা তার এই শেকড়ের সন্ধান করেছে চলেছে। কিভাবে সৃষ্টি হল এই পৃথিবী নামের গ্রহটির? যুগে যুগে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে নানান সময়ে তৈরি হয়েছে নানান মতবাদ। পুরাতন একটি মতবাদের উপর ভিত্তি করে কিংবা বাতিল করে তৈরি করা হয়েছে নতুন মতবাদ। তারপরেও সন্তুষ্ট হয়নি মানুষ। আবার এসেছে নতুন মতবাদ। এখনও এসব নিয়ে চলছে বিতর্ক। আমি আমার এই লেখায় দুই পর্বের মাধ্যমে আমাদের এই

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৩

মহাবিশ্ব


পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সীসমূহ, তাদের অন্তর্বর্তী স্থানের মধ্যে অন্যান্য পদার্থ এবং শূণ্যস্থান (মহাকাশ), এবং তাত্ত্বিক ভাবে নির্ধারিত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয় এমন সব কিছু মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড। মহাবিশ্বের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়কে বলে বিশ্বতত্ত্ব। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সুদূরতম প্রান্তের পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন তাত্ত্বিক গবেষণায় মনে হয় মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রক্রিয়াই তার সৃষ্টি থেকেই একই ধরণের প্রাকৃতিক নিয়ম ও কয়েকটি নির্দিষ্ট ধ্রুবক দ্বারা নির্ধারিত হয়। বিগ ব্যাং (Big Bang) তত্ত্ব অনুসারে এর আয়তন ক্রমবর্ধমান। সম্প্রতি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন তত্ত্বে আমাদের এই দৃশ্যমান মহাবিশ্বের পাশাপাশি আরো অনেক মহাবিশ্ব থাকার অর্থাৎ অনন্ত মহাবিশ্ব থাকার সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে।

ইতিহাস

সোমবার, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩

দি ইলিগ্যান্ট ইউনিভার্সঃ সুপারস্ট্রিংস,হিডেন ডাইমেনশনস অ্যান্ড দ্যা কোয়েস্ট ফর দি আলটিমেট থিউরি -২

স্ট্রিং তত্ত্বের প্রাথমিক ধারনাগুলো দেখে নেয়া যাক।
গত পাঠে দেখানো আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে উদ্ভূত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে জন্ম নেয়া প্রথম ফ্রেমওয়ার্ক হল স্ট্রিং তত্ত্ব।
গত পাঠে আমরা যেসকল মৌলিক কণিকা দেখেছি, তাদেরকে হয়ত গ্রীকদের দেয়া অ্যাটম উপাধি দেয়া যেতে পারে কারণ আধুনিক পদার্থবিদ্যা অনুসারে এরা বস্তুসমূহের মৌলিক কণিকা, যাদের আর ভাগ করা যায়না। কিন্তু স্ট্রিং তত্ত্ব অন্য কথা বলে। স্ট্রিং তত্ত্ব বলে এরাও মৌলিক নয়, এরাও অবিভাজ্য নয়। আজকের সবচেয়ে সূক্ষ্মতম প্রযুক্তির চেয়ে আরও অনেক শক্তিশালী প্রযুক্তি দিয়ে পরীক্ষা করা গেলে ঠিকই আরও সূক্ষ্মতর কণিকা আবিষ্কার সম্ভব হবে যাদের দিয়ে ইলেকট্রন, কোয়ার্ক ইত্যাদি গঠিত। তবে এখানে কণিকা বললে আপত্তি আছে কারণ স্ট্রিং তত্ত্ব অনুসারে এরা কণিকা নয় বরং এরা একমাত্রিক আঁকাবাঁকা আকারের ফিতা (loop)। এদেরকে পদার্থবিদরা নামকরণ করেছেন স্ট্রিং। স্ট্রিং হল অসীম পাতলা। প্রতিটি কণিকা এরকম কম্পনশীল, দোদুল্যমান ও নৃত্যরত স্ট্রিং দিয়ে গঠিত।
Untitled
বিঃদ্রঃ ছবিটি অভিজিৎ রায়ের ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ থেকে নেয়া।

মহাবিশ্বের অন্যতম বিষ্ময় "সোপারনোভা"


পরিবর্তশীল মহাবিশ্বের একটা সুসঙ্গত কোন অবস্থা বা কোন প্রকৃতি নেই ।উপরের আকাশে তাকালে আমরা রিতীমত বিষ্মিত হয় । অনেক কিছু আছে যা আগে ছিলনা পাশে । একটা ভিতীকর কথা বলেই প্রথমে স্নায়ু উদ্দীপনা সৃষ্টি করি যে আমাদের আকাশে নাকি ঘুড়া হাতি আর নাকি কাল দেবের অবস্থান ? আমরা তো হাটা চলা করি, খাওয়া দাওয়া করি, সর্বশেষ একটা জীবন ধারণ করি ।আমরা কখনো খেয়াল করেছি কেমন করে আমাদের উৎপত্তি ? আর কিজন্যই বা পৃথিবী গ্রহ নক্ষত্রের সৃষ্টি ? সৃষ্টি রহস্যের আদিতে যত সব রহস্য ছিল তার মধ্যে সুপারনোভা অন্যতম । আজ এর সম্পর্কে কিছু সাধারণ তথ্য দিচ্ছি । উপরের ছবিটা

দি ইলিগ্যান্ট ইউনিভার্সঃ সুপারস্ট্রিংস, হিডেন ডাইমেনশনস অ্যান্ড দ্যা কোয়েস্ট ফর দি আলটিমেট থিউরি


পদার্থবিজ্ঞানের দিগন্তে ‘দুখন্ড মেঘ জমেছে। আধুনিক (কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা বুঝাতে নয়) পদার্থবিজ্ঞান দাঁড়িয়ে আছে দু'টি মৌলিকস্তম্ভের উপর। একটি হচ্ছে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা আরেকটি হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স। আপেক্ষিকতা এখন শুধুমাত্র একটা থিউরিই নয় বরং বৃহৎ আকারের বস্তু যেমন নক্ষত্র, নীহারিকা, নীহারিকাগুচ্ছ এমনকী পুরো মহাবিশ্বের সম্প্রসারনশীলতা ব্যাখ্যা করার জন্য একটা ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। একই কথা প্রযোজ্য কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর বেলাতেও, তবে সেটা ক্ষুদ্রতর বস্তুর বেলায় যেমন অনু, পরমানু ও অন্যান্য আন্তঃআনবিক কণিকাগুলো। মজার ব্যাপার হলো দুটো স্তম্ভই একটুও নড়বড়ে নয় বরং আধুনিককালের পরীক্ষাগুলোতে খুব ভাল ভাবেই পাশ করেছে দুটোই। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে বিবেচনা করলে দুটোই একসাথে ঠিক হতে পারেনা!
হয়তো অবাক হচ্ছেন ‘কেন'? উত্তরটা খুব কঠিন কিছু নয়। বিজ্ঞানীরা এখনো কোনকিছু ব্যাখ্যা করতে গেলে দ্বারস্থ হচ্ছে হয় আপেক্ষিকতার নইলে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কিন্তু একই সাথে দুইটার নয়। আমরা বিবেচনা করছি বস্তুটি বৃহদাকার নইলে খুব ক্ষুদ্রাকার, কিন্তু মহাবিশ্বে যখন একই বস্তু দুইটা অবস্থায় দেখা দিবে তখন?

রবিবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৩

1=2! হতে পারে কি?

1=2! কি আকাশ থেকে পরলেন।না এতে অবাক হবার কিছু নেই।
এটা নিতান্তই একটা মজার গানিতিক সমস্যা। বলতে পারেন এ আবার কেমন কথা,এটা কি কখনো সম্ভব?আমিও বলি সম্ভব নয়।যদি হতো তাহলে কি হতো!কার কাছ থেকে একটা কিছু নিলে তাকে দুইটা ফেরত দিতে হত।কত ঝামেলাই না তাহলে হত।তবে মজার ব্যাপার হোল অনেকে এটা প্রমান করেছে বলে দাবি করে থাকেন।তো চলুন আজ আমরা এটা একটু প্রমান করে দেখি সম্ভব কি না।
মনে করি,

             X=Y

               =>X2=XY                   (উভয়পক্ষকে  X  দিয়ে গুন করে )

               => X2-Y2=XY-Y2        (উভয়পক্ষ থেকে Y2 বিয়োগ করে)

               =>(X+Y)(X-Y)=Y(X-Y)

              =>X+Y=Y              (উভয়পক্ষকে (X-Y) দিয়ে ভাগ করে)

              =>2Y=Y              (যেহেতু X=Y)

              =>2=1

কি? কিছু বুঝলেন।হ্যাঁ, এখানে একটা ভুল হয়েছে । আর তা হল উভয়পক্ষকে (X-Y) দিয়ে ভাগ করা। কারন X=Y হওয়ায় (X-Y)=0। আর কোন কিছুকে 0 দিয়ে ভাগ করলে তার মান হয় অনির্ণেয় ।তাই 1=2 হওয়া অসম্ভব।আর যারা এটা প্রমান করেছে বলে দাবি করে তারা হয়ত বিষয়টা লক্ষ করেনাই।

এই আজব প্রমাণটি 'মোঃ জাফর ইকবাল' এবং 'মোহাম্মদ কায়কোবাদ' এর "নিউরনে অনুরণন" নামক বই হতে সংকলিত।

ধন্যবাদ সবাইকে টিউনটা পরার জন্য।

গণিতবিদদের গনিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজন ……

আজকে অজানা একজন বিখ্যাত গনিতবিদের জিবনী আপনাদের জানাব।তাকে ইংরেজ গণিতবিদ
 জিএইচ হার্ডি গণিতবিদের গনিতবিদ বলেছেন।আর সে হল রামানুজন।
রামানুজন অসামান্য প্রতিভাবান একজন ভারতীয় গণিতবিদ।পুরো নাম শ্রীনিবাস রামানুজন । রামানুজন ১৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দের ২২ শে ডিসেম্বরভারতের মাদ্রাজ এর
তাঞ্জোর জেলার ইরেভদ শহরের এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শ্রীনিবাস ইয়েঙ্গার ছিলেন

মঙ্গলবার, অক্টোবর ০১, ২০১৩

নতুন ৫০৩টি সম্ভাব্য পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান লাভ .................

নাসা'র কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ আরও ৫০৩টি নতুন সম্ভাব্য পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান দিয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৩ হাজার ২ শ ১৬টি এমন গ্রহের সন্ধান দিয়েছে কেপলার। কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র ১৩২টির ব্যাপারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা আশা প্র
কাশ করেছেন এক সময় তারা এই বিশাল সংখ্যক গ্রহের অন্তত ৯০ শতাংশের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন।

সদ্য সনাক্ত গ্রহগুলোর ব্যাপারে কেপলার মিশনের ম্যানেজার রজার হান্টার বলেন, "এই গ্রহগুলো আকারে ছোট এবং তাদের তারার বসবাস যোগ্য সীমার মধ্যে অবস্থিত। কিন্তু তবুও আমাদেরকে আরও অনেক হিসেব-নিকেশের জন্যে অপেক্ষা করতে হবে।"

কেপলার মিশন শুরু হবার তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৯ সালের মে মাস থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত কেপলার যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে সেগুলো থেকেই এই নতুন ৫০৩টি গ্রহকে বেছে নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত মাস থেকে কেপলার তার সাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছে না। অর্থাৎ পৃথিবীসদৃশ গ্রহ খুঁজার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। অরিয়েন্টেশান মেইন্টেইনিং সিস্টেমে গোলযোগের কারণে এ সমস্যাটি দেখা দিয়েছে।

উৎক্ষেপণের সময় কেপলারের ৪টি ফাংশানিং রিএকশান হুইল ছিল। এদের ৩টি নিয়মিত ব্যবহারের জন্যে এবং একটি জরুরী ব্যবহারের জন্যে। ২০১২ সালের জুলাইয়ে দ্বিতীয় হুইলটি বিকল হয়ে যাওয়ায় বাড়তি হুইলটি অর্থাৎ চতুর্থটি ব্যবহার করা শুরু হয়। কিন্তু গত মাসে সেই চতুর্থ হুইলটিও অকেজো হয়ে যায়। আর এই সমস্যার সমাধান না করতে পারলে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের কেপলার মিশনের এখানেই সমাপ্তি অবধারিত।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা অভয় দিয়ে বলছেন তারা খুব দ্রুতই বিকল হুইলটির জায়গায় একটি সচল হুইল প্রতিস্থাপনের কাজে নাম্বেন। আর অন্য দিকে কেপলার মিশনের প্রধান পরিদর্শক, নাসা'র বিজ্ঞানী বিল বরুকি উদ্ভূত সমস্যাটিকে একে বারেই পাত্তা না দিয়ে বলেন, "আমাদের কাছে কেপলারের উপহার হিসেবে এখনও এত বেশি তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষিত আছে যে ওগুলোর রহস্য সমাধান এবং বিশ্লেষণ করতে আগামী ২ বছর পর্যন্ত গবেষনা চালিয়ে যেতে হবে।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমি নিশ্চিত আগামী দুই বছরে চমৎকার এবং অবশ্যই বিস্ময়কর কিছু আবিষ্কার দেখবে পৃথিবী।"

বলা বাহুল্য গোটা পৃথিবী, কিংবা বলা যায় অন্তত মহাকাশপ্রেমী মানুষেরা সেই বিস্ময়কর আবিষ্কারগুলোর জন্যেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ স্পেস ডট কম

বাংলাদেশী গবেষক দ্রুত ইন্টারনেটের পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন

বাংলাদেশী গবেষক মনির মোরশেদ অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে দ্রুত তথ্য পরিবহনের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। অপটিক্যাল ফাইবার হল তথ্য আদান প্রদান করার একটি মাধ্যম যা আলোর মাধ্যমে তথ্য পাঠায়। মনির মোরশেদ ননলিনিয়ারিটি পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখান যে ৮০০ কিলোমিটার দূরে ১ টেরাবাইট তথ্য পাঠাতে সময় লাগবে প্রায় এক সেকেন্ড। তার উদ্ভাবিত এই পদ্ধতির কল্যাণে ইন্টারনেট আরও দ্রুত হতে পারে। তার এই নতুন আবিষ্কার জাপানের ওইসিসি কনফারেন্সে উপস্থাপন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। বাংলাদেশের ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনির মোরশেদ ২০১১ সনে পিএইচডি করবার জন্য অস্ট্রেলিয়াতে যান। মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোফেসর আর্থর লোরি (Professor Arthur J. Lowery) এর তত্ত্বাবধানে তিনি গবেষণা করছেন। 

সোমবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৩

যুক্তরাষ্ট্রেই ফাটতে পারত পরমাণু বোমা

easy_buster

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ফাটতে পারত পরমাণু বোমা। আর এটি হতে পারত হিরোশিমার বিস্ফোরণের থেকে ২৬০ গুণ বেশি শক্তিশালী। নতুন করে লিখতে হতো ইতিহাস। কিন্ত্ত বোমার একটিমাত্র স্যুইচ কাজ না করায় অনাকাঙ্ক্ষিত সেই বিপর্যয়ের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এতদিন মার্কিন প্রশাসনের চরম গোপনীয়তায় সংরক্ষিত ছিল ওই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি। কিন্ত্ত নিজের লেখা বই ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’-এ সেই দুর্ঘটনার কথা প্রকাশ করলেন এরিক স্লোসার। এরিক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সানডিয়া গবেষণাগারে পরমাণু অস্ত্রের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কর্মরত।
এরিকের দেয়া তথ্য মতে- সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ তখন চরমে। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চলছে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। ১৯৬১ সালের ২৩ জানুয়ারি দু’টি মার্ক-৩৯ হাইড্রোজেন বোমা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে নর্থ ক্যারোলিনার উপর দিয়ে উড়ছিল মার্কিন বায়ুসেনার একটি বি-৫২ বিমান। হঠাত্ৎ সেটি গোল্ডসবোরো এলাকায় ভেঙে পড়। সেই সঙ্গে পড়ে ওই বোমাদু’টিও। প্রথম বোমাটি নিষ্ক্রিয় থাকলেও, ঝামেলা বাধে দ্বিতীয় বোমাটিকে নিয়ে। বিস্ফোরণ ঘটার পর্যায়ক্রমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় এটির বোমাটির মধ্যে। বিস্ফোরণের জন্য প্রয়োজনীয় চারটি ধাপের মধ্যে তিনটিই পূর্ণ হয়ে যায়। প্রক্রিয়ার শেষ প্রান্তে ছিল ডায়নামো-চালিত কম ভোল্টেজের একটি স্যুইচ। ভাগ্যক্রমে সেটি কাজ করতে ব্যর্থ হয়, বেঁচে যায় যুক্তরাষ্ট্র। নইলে ভয়াবহ পরমাণু বিস্ফোরণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত নর্থ ক্যারোলিনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল!
১৯৬১ সালেই এক সরকারি সংস্থার প্রাক্তন বিজ্ঞানী রাল্ফ ল্যাপ একটি বইয়ে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনার ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিলেন। স্লোসারের লেখা বই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সায়েন্সটেক24.কম/ ডেস্ক নিউজ/ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩

সোমবার, আগস্ট ১৯, ২০১৩

মিনি বিগ ব্যাংগ পরীক্ষা (২০১০)

মিনি বিগ ব্যাংগ পরীক্ষা (২০১০) জগতের উৎপত্তি নিয়ে আয়োজিত এক বিশাল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা যার উদ্দেশ্য ছিল জগৎ সৃষ্টির বিগ ব্যাংগ তথা "মহাবিস্ফোরণ" তত্ত্ব যাচাই করা। এই তত্ত্ব অনুসারে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বৎসর পূর্বে একটি মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে জগতের সৃষ্টি হয়েছিল। বিগ ব্যাংগ বা মহাবিস্ফোরণের অব্যবহিত পরে জগৎ ঠিক যে অবস্থায় ছিল অনুরূপ একটি অবস্থা কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করাই এই পরীক্ষার মূল লক্ষ্য। পরীক্ষাটি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর তারিখে সংঘটিত হয়। বিশ্বের ৩০টি দেশের ১০০টি প্রতিষ্ঠানের এক হাজার পদার্থ বিজ্ঞানী সম্মিলিত ভাবে এই পরীক্ষার আয়োজনে অংশ গ্রহণ করে। ফ্রান্স এবংসুইজারল্যান্ড সীমান্তে, জেনিভা শহরের অদূরে মাটির ৩২৮ ফুট (গড়ে ১০০ মিটার) নিচে স্থাপিত লার্জ হেইড্রন কোলাইডার নামে পরিচিত বৃহদাকার একটি যন্ত্র ব্যবহার করে প্রায় আলোর গতিতে ধাবমান আয়নপ্রবাহের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটানো হয়েছে।[১] কার্যত এটি একটি কৃত্রিম মহাবিস্ফোরণ। এই পরীক্ষায় সীসার পরমাণু থেকে ইলেক্ট্রন অপসারণপূর্ব্বক উদ্ভূত সীসার "আয়ন" ব্যবহার করা হয়েছে। আয়নসমূহের মধ্যকার সংঘর্ষের ফলে যে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে তার তাপমাত্রা সূর্যের কেন্দ্রস্থলের চেয়ে ১ মিলিয়ন গুণ বেশী। এই তাপমাত্রায় পরমাণুন ক্নেদ্র অবস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রন বিগলিত হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হয়।[২] ধারণা করা হয় এই বিগলিত কণা দুটির সমন্বয়ে তৈরী হবে "কোয়ার্ক গ্লুয়োন প্লাজমা" যা কি-না বিগ ব্যাংগের ঠিক পরে উদ্ভূত হয়ে থাকবে।[৩]এই পরীক্ষায় ব্যবহৃত লার্জ হেইড্রন কোলাইডার (ইংরেজি ভাষায়: Large Hadron Collider) অদ্যাবধি পৃথিবীর বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী "কণা ত্বরক" বা particle accelerator । এটি উদ্ভাবন করেছে ইউরোপের বিজ্ঞান সংস্থা ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, সংক্ষেপে "সার্ন" (ইংরেজি ভাষায়: CERN)। এর অবস্থান ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ড সীমান্তে, জেনিভা শহরের অদূরে মাটির ৩২৮ ফুট (গড়ে ১০০ মিটার) গভীরে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি উপবৃত্তাকার সুড়ঙ্গের অভ্যন্তরে।[৪] ৯ টেরা ইলেকট্রন ভোল্টের প্রোটন সমৃদ্ধ রশ্মির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটানোর জন্য এটা তৈরি করা হয়েছে। এ ধরণের সংঘর্ষ ঘটানোর মূল উদ্দেশ্য জগৎ সৃষ্টির প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ই সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মত পুরো লার্জ হেইড্রন কোলাইডারে প্রোটন রশ্মি প্রবাহ চালনা করা হয়। এর আগে ৮-১১ই আগস্টের মধ্যে এতে প্রাথমিক কণা রশ্মি ঢোকানো হয়, তাপমাত্রা ধীরে ধীরে ১.৯ কেলভিনে (-২৭১.২৫° সেলসিয়াস) নামিয়ে আনা হয়। এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম উচ্চশক্তির সংঘর্ষ ঘটানো হবে ২১শে অক্টোবর। তাই ২১শে অক্টোবরকেই এর উদ্বোধন দিবস আখ্যায়িত করা হয়েছে।শুরু থেকে লার্জ হেইড্রন কোলাইডার প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষ ঘটানো হয়ে আসছে। কিন্তু ৭ নভেম্বর ২০১০ তারিখের পরীক্ষায় প্রোটনের পরিবর্তে সীসার আয়ন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে উৎপন্ন হয়েছে ঘনীভূত অগ্নিগোলকের যাদের তাপমাত্রা ১০ ট্রিলিয়ন সেলসিয়াসের বেশী। অগ্নি গোলকগুলোকে বলা হয় "কোয়ার্ক গ্লুয়োন প্লাজমা"। এগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে পদার্থ বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন বিগ ব্যাংগের অব্যবহিত পরে জগতের অবস্থা কীরূপ ছিল।[৫]

রবিবার, আগস্ট ১৮, ২০১৩

আলোক তড়িৎ ক্রিয়া

আলোক তড়িৎ ক্রিয়া কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের একটি প্রক্রিয়া, যেখানে কোন বস্তুর ওপর রঞ্জন রশ্মি বা দৃশ্যমান আলো পড়লে তা থেকে শক্তি শোষন করে ইলেক্ট্রনের নির্গমনকে ব্যাখ্যা করা হয়।[১] নির্গত ইলেকট্রনকে বলা হয় আলোক-ইলেকট্রন। এর আবিষ্কারকহেনরিখ হার্টজের নামানুসারে এই ক্রিয়াকে বলা হয় হার্টজ ক্রিয়া[২][৩], যদিও এই নামের ব্যবহার অনেক কম। আলোক তড়িৎ ক্রিয়া আলোর কোয়ান্টাম আচরণ বোঝার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাপ। আলোর এই ধর্ম থেকে তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা ধারণার সূত্রপাত ঘটেছে।[১]
একটি ধাতব পাতের উপর তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ আপতিত হলে তাতে ফোটনগুলো শোষিত হয় এবং ইলেকট্রন নির্গত হয় যা তড়িতের সৃষ্টি করে। অবশ্য আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক অবশ্য সূচন কম্পাঙ্কের সমান বা বেশী হতে হবে। বিভিন্ন পদার্থের জন্য সূচন কম্পাঙ্কের মান ভিন্ন ভিন্ন। বিকিরণের কম্পাঙ্ক সূচন কম্পাঙ্কের চেয়ে কম হলে কোন ইলেকট্রন নির্গত হয়না কারণ সেক্ষেত্রে ইলেকট্রনগুলো তাদের স্থির বৈদ্যুতিক বাঁধা অতিক্রম করার মত শক্তি অর্জন করতে পারেনা। পদার্থের কেলাসিত তলের শক্তি তথা এর কার্য অপেক্ষকের কারণেই এই স্থির বৈদ্যুতিক শক্তির সৃষ্টি হয়। আইনস্টাইনের আলোক তড়িৎ সমীকরণের কল্যানে ১৯০৫ সালেই বিশ্বাস করা হতো আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক বৃদ্ধি পেলে নির্গত আলোক ইলেকট্রনের শক্তিও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ১৯১৫ সালের আগে শক্তির এ ধরণের বৃদ্ধির পক্ষে কোন পরীক্ষণমূলক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বছর বিজ্ঞানী রবার্ট অ্যান্ড্রুজ মিলিকান পরীক্ষা করে দেখেন যে আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক বৃদ্ধির সাথে সাথে নির্গত ইলেকট্রনের শক্তি রৈখিকভাবে বৃদ্ধি পায়। বোঝা যায় আইনস্টাইনের ধারণাই সঠিক ছিল।
একটি পরীক্ষার মাধ্যমে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়। এ পরীক্ষার বায়ুশূন্য একটি কোয়ার্টজ নলের মধ্যে দস্তার তৈরি দুটি পাত যুক্ত করা হয়। একটি পাতে ক্ষার ধাতু বা ক্ষার ধাতুবিশিষ্ট পদার্থের প্রলেপ থাকে। ধরা যাক লিথিয়াম ডাই অক্সাইডের প্রলেপ রয়েছে। অন্য পাতটি প্রলেপবিহীন অবস্থায় থাকে। ক্ষারকীয় প্রলেপযুক্ত পাতটিকে একটি তড়িৎ কোষ তথা ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয় আর অন্য পাতটিকে একটি গ্যালভানোমিটারের মাধ্যমে ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয়। এবার প্রলেপযুক্ত পাতের উপর আলোক আপতিত হতে দিলে সেখানকার ধাতু থেকে ইলেকট্রন নির্গত হবে। ইলেকট্রন নির্গত হয়ে অপর পাতের দিকে যাবে যেহেতু তা ধনাত্মক। ফলে বদ্ধ বর্তনীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হবে যা গ্যালভানোমিটারের কাঁটার বিক্ষেপ থেকে বোঝা যাবে। তড়িৎ প্রবাহের মাত্রা আপতিত আলোকের প্রাবল্যের উপর নির্ভর করে। আলোকের প্রাবল্য বৃদ্ধি পেলে তড়িঃ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে আর প্রাবল্য কমলে তড়িঃ প্রবাহও কমবে।
এই প্রাথমিক পরীক্ষাটি শেষে প্রলেপযুক্ত পাতটিকে ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তের সাথে এবং প্রলেপবিহীন পাতকে ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হল। এবার প্রলেপযুক্ত পাতে আলোক রশ্মি আপতিত হলে সেখান থেকে ইলেকট্রন নির্গত হবে, কিন্তু এ প্রান্তের আধান ধনাত্মক হওয়ায় নির্গত ইলেকট্রন পুনরায় এই পাত দ্বারাই আকৃষ্ট হবে। ফলে তড়িৎ প্রবাহ হ্রাস পাবে। প্রলেপযুক্ত পাতের একটি নির্দিষ্ট বিভবের জন্য তড়িৎ প্রবাহমাত্রার মান হবে শূন্য। প্রলেপযুক্ত পাতে বিভবের যে মানের জন্য বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা শূন্য হয়ে যায় তাকে নিবৃত্তি বিভব (stopping potential) বলা হয়। এই নিবৃত্তি বিভব আলোকের প্রাবল্যের উপর নির্ভর না করলেও তার কম্পাঙ্ক বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। আবার পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে আপতিত আলোর কম্পাঙ্কর একটি নির্দিষ্ট মানের কম হলে তা ধাতব তল থেকে ইলেকট্রন নিঃসরণ করাতে সক্ষম হয়না। আলোক রশ্মির কম্পাঙ্কের এই নির্দিষ্ট মানকে সূচন কম্পাঙ্ক (threshold frequency) বলে। বিভিন্ন পদার্থের জন্য সূচন কম্পাঙ্কের মান ভিন্ন ভিন্ন হয়।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন তার আলোক তড়িৎ সমীকরণের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার একটি ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছিলেন ১৯০৫ সালে। ব্যাখ্যাটা এরকম। ধাতব পাতের উপর আলোক রশ্মি আপতিত হলে মূলত ইলেকট্রন আলোক শক্তি তথা ফোটন দ্বারা আঘাতগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে ইলেকট্রন ফোটনের শক্তি সম্পূর্ণভাবে শোষণ করে নেয়। এই শোষিত শক্তি ব্যবহার করে ইলেকট্রন পদার্থের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়। মুক্ত হওয়ার পর ফোটনের শক্তির যে পরিমাণ অবশিষ্ট থাকে সে পরিমাণ গতিশক্তিতে ইলেকট্রন ছড়িয়ে পরে। তাহলে ইলেকট্রন নিজে মুক্ত হতে ব্যায়িত শক্তি এবং ইলেকট্রনের গতিশক্তি যোগ করলে তা আঘাতকারী ফোটনের শক্তির সমান হয়। এভাবে শক্তির নিত্যতা সূত্র রক্ষিত হয়। উল্লেখ্য একটি ফোটন কেবল একটি ইলেকট্রনকেই মুক্ত করতে পারে কারণ একটি ফোটনের শক্তি কেবল একটি ইলেকট্রন দ্বারাই শোষিত হতে পারে। নিঃসরিত ইলেকট্রনকে সাধারণত আলোক ইলেকট্রন নামে আখ্যায়িত করা হয়।

ফিনিক্স (নভোযান)

ফিনিক্স একটি রোবট নিয়ন্ত্রিত নভোযান যাকে মঙ্গল গ্রহে একটি বিশেষ অভিযানে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি মার্স ফিনিক্স প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত।

কোন নভোযানের নির্জীব যাত্রীদের সাধারণত পেলোড বলা হয়। তাই মঙ্গল গবেষণার জন্য প্রেরিত এই যন্ত্রপাতিগুলোকেও পেলোড বলা যায়। ফিনিক্সের পেলোডগুলো হচ্ছে:
  • রোবোটিক বাহু - ভূপৃষ্ঠের ০.৫ মিটার পর্যন্ত খনন করতে পারে। এর কাজ মাটি ও ধূলির নমুনা সংগ্রহ করা।
  • রোবোটিক বাহুর ক্যামেরা - রোবোটিক বাহুর হাতার সাথে যুক্ত। এটা দিয়ে প্রথমেই নমুনা সংগ্রহের অঞ্চলের ছবি তোলা হয়, সেখান থেকে কি ধরণের নমুনা পাওয়া যাবে তা এই ছবির মাধ্যমেই বিশ্লেষণ করা হয়।
  • সার্ফেস স্টেরিও ইমেজার - নভোযানের মূল ক্যামেরা। পাথফাইন্ডারের সাথে যুক্ত ক্যামেরার চেয়ে এর রিজলিউশন অনেক বেশী। এর মাধ্যমে মঙ্গলের আর্কটিক অঞ্চলের উচ্চ রিজলিউশন ছবি তোলা হয়।
  • থার্মাল অ্যান্ড ইভল্‌ভ্‌ড গ্যাস অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম টেগা (TEGA)। এতে উচ্চ তাপমাত্রার চুল্লীর সাথে ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্র যুক্ত আছে। এরকম আটটি ওভেন আছে। প্রতিটি ওভেন একটি করে নমুনা বিশ্লেষণ করতে পারে। বুঝতেই পারছেন, এর মাধ্যমে সংগৃহীত নমুনায় কি কি পদার্থ আছে তা খতিয়ে দেখা যাবে।
  • মার্স ডিসেন্ট ইমেজার - সংক্ষিপ্ত নাম মার্ডি (MARDI)। এর মাধ্যমে অবতরণের সময় মঙ্গল পৃষ্ঠের ছবি তোলার কথা ছিল। কিন্তু কিছু তথ্য হারিয়ে যাওয়ার কারণে অবতরণের সাত মিনিটে সে কোন ছবিই তুলতে পারেনি।
  • মাইক্রোস্কপি, ইলেকট্রোকেমিস্ট্রি অ্যান্ড কন্ডাক্টিভিটি অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম মেকা (MECA)। এর মধ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র আছে:
    • আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র: এর কাজ মঙ্গল থেকে সংগৃহীত নমুনায় উপস্থিত রেগোলিথের ছবি তোলা। ভূপৃষ্ঠে মৃত্তিকা স্তরের নিচেই রেগোলিথ স্তর থাকে, রেগোলিথ স্তরের নিচে থাকে অধিশিলার স্তর। তাই অধিশিলার উপরে অবস্থিত আলগা শিলাবস্তুর আচ্ছাদনকেই রেগোলিথ বলা যায়।
    • পারমাণবিক বল অণুবীক্ষণ যন্ত্র: আলোক অণুবীক্ষণের কাছে প্রেরিত নমুনার সামান্য অংশ নিয়ে কাজ করতে পারে। সে আট সিলিকনের টিপ দিয়ে এই নমুনা স্ক্যান করে এবং সিলিকন টিপ থেকে নমুনার বিকর্ষণের পরিমাণ নির্ণয় করে।
    • ওয়েট কেমিস্ট্রি গবেষণাগার: এখানে চারটি প্রকোষ্ঠে আছে। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে মঙ্গলের নমুনার সাথে পৃথিবীর পানির মিশ্রণ ঘটানো হয়। এর ফলে মঙ্গলের মাটিতে উপস্থিত দ্রবণীয় উপাদানগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রধানত ক্ষার ধাতুর আয়নগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়। এর মাধ্যমে মঙ্গল জীবন বিস্তারের জন্য কতটা সহায়ক হতে পারে তা নির্ণয় করা সম্ভব।
    • স্যাম্প্‌ল হুইল ও ট্রান্সলেশন স্টেজ: ৬৯টি নমুনা ধারকের মধ্যে ৬টি এখানে অবস্থিত। এগুলোর মাধ্যমে রোবটিক বাহুর কাছ থেকে নমুনা নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর কাছে পাঠানো হয়।
  • থার্মাল অ্যান্ড ইলেকট্রিকেল কন্ডাক্টিভিটি প্রোব - সংক্ষিপ্ত নাম টিইসিপি (TECP)। এতে পাঁচটি সন্ধানী যন্ত্র আছে যা দিয়ে নিম্নলিখিত পরিমাপগুলো করা হয়:
    • মঙ্গলীয় মাটির (রেগোলিথ) তাপমাত্রা
    • তাপীয় পরিবাহিতা
    • তড়িৎ পরিবাহিতা
    • পরাবৈদ্যুতিক প্রবেশ্যতা (dielectric permittivity)
    • বায়ুর দ্রুতি
    • পরিবেশের তাপমাত্রা
  • আবহাওয়বিজ্ঞান স্টেশন - নাম থেকেই এর কাজ বোঝা যাচ্ছে। এর সাথে বায়ু নির্দেশক এবং চাপ ও তাপ সেন্সর যুক্ত আছে। এগুলোর মাধ্যমে সে মঙ্গলের আবহাওয়া বিশ্লেষণ করে চলে।

সৌরজগতের জন্ম ও বিবর্তন

আমাদের এই সৌরজগতের জন্ম ও বিবর্তন আনুমানিক ৪৫০ কোটি বছর পূর্বে কোন বিরাট আণবিক মেঘের একটি ছোট অংশের মহাকর্ষীয় ধ্বসের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।[১] ধ্বসে পড়া অংশের অধিকাংশ ভরই কেন্দ্রের একটি ছোট স্থানে কেন্দ্রীভূত হয়ে সূর্য গঠন করে, বাকি অংশগুলো চ্যাপ্টা হয়ে জন্ম দেয় একটি ভ্রূণগ্রহীয় চাকতির যা থেকে সৌরজগতের সকল গ্রহপ্রাকৃতিক উপগ্রহগ্রহাণু এবং অন্যান্য ছোট ছোট বস্তু গঠিত হয়।
নীহারিকা অনুকল্প নামের এই বহুল পরিচিত ও সর্বজনগৃহীত মডেলটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন Emanuel Swedenborg, ইমানুয়েল কান্ট এবং পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস, সেই উনবিংশ শতাব্দীতে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার সক্রিয় অংশগ্রহণে মডেলটির উন্নতি ঘটেছে যার মধ্যে রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানপদার্থবিজ্ঞানভূতত্ত্ব এবং গ্রহ বিজ্ঞান। ১৯৫০-এর দশকে মহাকাশ যুগের সূচনা ঘটা এবং ১৯৯০-এর দশকে বহির্গ্রহ আবিষ্কৃত হতে শুরু হওয়ার পর অনেকেই এই মডেলের পুনর্বিশ্লেষণ বা সমালোচনা করছেন। নতুন আবিষ্কারগুলোকেও এই অনুকল্পের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় কিনা সেটিই তাদের প্রশ্ন।
প্রাথমিক অবস্থা থেকে সৌরজগৎ অনেক বিবর্তিত হয়েছে। কোন গ্রহের চারদিকে আবর্তনরত গ্যাস ও ধূলিকনার চাকতি থেকে তার উপগ্রহ তৈরি হয়ে থাকতে পারে, আবার কিছু উপগ্রহ ভিন্ন জায়গায় উৎপন্ন হয়ে পরবর্তীতে গ্রহের মহাকর্ষীয় বন্ধনে ধরা দিতে পারে। কিছু উপগ্রহ আবার হতে পারে বিশাল কোন সংঘর্ষের ফল, যেমন পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ সংঘর্ষের ফলে জন্ম নিয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। সৌরজগতের বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষ একটি স্বাভাবিক ঘটনা যা এখনও বিভিন্ন স্থানে ও সময়ে ঘটে চলেছে, এসব সংঘর্ষ সৌরজগতের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হয়। অনেক সময় গ্রহের অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে, এক গ্রহ আরেক গ্রহের সাথে স্থান বদল করেও থাকতে পারে।[২] সৌরজগতের আদি বিবর্তনের অন্যতম কারণ হিসেবে বর্তমানে এই গ্রহীয় অভিপ্রয়াণকেই দায়ী করা হয়।

আজ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি বছর পর সূর্য শীতল হয়ে যাবে, তার এনভেলপ তথা বহিরাংশ বহুগুণ সম্প্রসারিত হওয়ায় ব্যাস বর্তমানের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে এবং সে একটি লোহিত দানবে পরিণত হবে। একসময় বহিরাংশটি সূর্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি গ্রহ নীহারিকা তৈরি করবে এবং কেন্দ্রভাগটি শ্বেত বামন নামক এক ধরণের নাক্ষত্রিক অবশিষ্টাংশে পরিণত হবে। সুদূর ভবিষ্যতে সূর্যের কাছ দিয়ে অতিক্রমকারী তারাগুলো তার সাথে তার ভ্রমণসঙ্গী গ্রহগুলোর বন্ধনকে কমিয়ে দেবে। এর ফলে কিছু গ্রহ ধ্বংস হয়ে যাবে, কিছু আবার আন্তঃনাক্ষত্রিক মাধ্যমে ছিটকে পড়বে। ধারণা করা হয় কয়েক ট্রিলিয়ন বছর পর সূর্যের অবশিষ্টাংশের চারদিকে আর কোন গ্রহই থাকবে না।[৩]                                               


বিশ্বজগতের উদ্ভব এবং পরিণতি নিয়ে বহুকাল পূর্বের অনেক রচনাতেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনাগুলোকে সৌরজগতের একটি মডেলের সাথে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা প্রাচীন কালে কখনোই করা হয়নি, কারণ বর্তমানে আমরা সৌরজগৎ বলতে যা বুঝি সেটির অস্তিত্বই তখন মানুষের জানা ছিল না। সৌরজগতের জন্ম ও বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে প্রথম বড় পদক্ষেপ ছিল সৌরকেন্দ্রিক মতবাদের প্রতিষ্ঠা যাতে বলা হয়েছিল, সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত যাকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘোরে। গ্রিক দার্শনিক আরিস্তারকোস এ ধরণের একটি ধারণা আনুমানিক ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উত্থাপন করলেও ধারণাটি গ্রহণযোগ্যতা পেতে শুরু করে মাত্র অষ্টাদশ শতকে। Solar System শব্দ দুটো প্রথম কোন রচনায় ব্যবহার করা হয়েছিল ১৭০৪ সালে।[৪]
সৌরজগতের উৎপত্তি বিষয়ে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব হচ্ছে নীহারিকা অনুকল্প যা উনবিংশ শতকে Emanuel Swedenborg, ইমানুয়েল কান্ট এবং পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস পরষ্পর স্বাধীনভাবে প্রস্তাব করেছিলেন। কখনো এটি বিপুল সমর্থন পেয়েছে, কখনো আবার হয়েছে তীব্র সমালোচিত। সবচেয়ে বড় সমালোচনা ছিল, গ্রহদের তুলনায় সূর্যের কৌণিক ভরবেগ এতো কম কেন তা অনুকল্পটি ব্যাখ্যা করতে পারে বলে মনে হতো না।[৫] কিন্তু ১৯৮০-র দশকে এমন সব নবীন তারা পর্যবেক্ষণ করা গেছে যারা ঠিক নীহারিকা অনুকল্পের বর্ণনা মতোই ধূলো ও গ্যাসের একটি শীতল চাকতি দিয়ে ঘেরা। এতে অনুকল্পটির গ্রহণযোগ্যতা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে।[৬]
সূর্য ভবিষ্যতে কিভাবে বিবর্তিত হবে তা জানতে হলে তার শক্তির উৎস সম্পর্কে জানা প্রয়োজন ছিল। আর্থার স্ট্যানলি এডিংটন প্রথম ধারণা করতে পেরেছিলেন যে সূর্যের শক্তি কেন্দ্রীণ সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন হতে পারে।[৭] ১৯৩৫ সালে তিনি আরও বলেন, অন্যান্য মৌলিক পদার্থগুলোও তারার অভ্যন্তরে উৎপন্ন হতে পারে।[৮] ফ্রেড হয়েল এই গবেষণাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে বলেন, লোহিত দানব তারার অভ্যন্তরে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের চেয়ে ভারী মৌল উৎপন্ন হয়। লোহিত দানব যখন তার বহিরাংশ ছুঁড়ে ফেলে তখন অভ্যন্তরের ভারী মৌলগুলো আন্তঃনাক্ষত্রিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য তারা জগৎ গঠনে ভূমিকা রাখে।

বিশেষ আপেক্ষিকতা

বিশেষ আপেক্ষিকতা (ইংরেজিSpecial relativity)১৯০৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন "On the Electrodynamics of Moving Bodies"পেপারে এই সর্বপ্রথম তত্ত্বটি উপস্থাপন করেন। এটি আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব (ইংরেজি ভাষায়: Special Theory of Relativity, সংক্ষেপে STR) নামেও পরিচিত। এই তত্ত্বে কেবল পরস্পরের সাপেক্ষে সমান বেগে গতিশীল বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। বিশেষ আপেক্ষিকতাকে সাধারণ আপেক্ষিকতার একটি বিশেষ রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয় । মাইকেলসন এবং মর্লি তাঁদের পরীক্ষণের মাধ্যমে তিনটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তগুলোর প্রেক্ষিতেই আইনস্টাইন তাঁর এই তত্ত্ব প্রণয়ন করেন। তত্ত্বটি দুইটি মৌলিক স্বীকার্যের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছিল।
স্বীকার্যসমূহ ১। পদার্থবিজ্ঞানের সুত্রসমূহ সকল জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে একই রূপে বলবৎ থাকবে।
২।আলোর গতিবেগ সকল জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে একই রূপে বলবৎ থাকবে।
শক্তি-ভর সমতুল্যঃ
আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব থেকে পদার্থবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি সূচীত হয়।আর সেটি হলঃশক্তি ও ভর সমতুল্য।এই উপলব্ধিটি এসেছে আইনস্টাইনের বিখ্যাত E = mc2 সূত্র থেকে।এই সূত্র অনুসারে m ভরের কোন বস্তুতে সঞ্চিত শক্তির পরিমাণ ঐ ভরের সাথে আলোর বেগ(c) এর বর্গের গুনফল এর সমান।অর্থাৎ ১ কেজি ভরের কোন বস্তুতে সঞ্চিত শক্তির পরিমাণ ৯০০০০০০০০০০০০০০০০ জুল।এই অবিশ্বাস্য পরিমাণ শক্তি আমেরিকার মত একটি দেশের ?? দিনের বৈদ্যুতিক শক্তির যোগান দিতে পারে!
E=mc2 সমীকরণটি শক্তির সাথে ভরের একটি চমৎকার সম্পর্ক নির্দেশ করে।এটি থেকে বোঝা যায় যে, শক্তি এবং ভর আসলে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।ভর থেকে শক্তি পাওয়া যায় এবং শক্তি থেকেও ভর পাওয়া যেতে পারে।অর্থাৎ শক্তি এবং ভর পরস্পর সমতুল্য।
ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হবার সবচাইতে পরিচিত এবং বেদনাদায়ক উদাহরণটি হল হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৮ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা।পারমানবিক বোমাতে একটি বড় মৌলের পরমাণুকে(যেমনঃইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়াম) নিউট্রন দ্বারা আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলা হয়।ফলে বড় পরমাণুটি ভেঙ্গে দুইটি নতুন পরমাণুতে বিভক্ত হয় এবং কিছু ভর পরিণত হয় শক্তিতে।
পেয়ার প্রোডাকশন শক্তি থেকেও ভরে রূপান্তরের উদাহরণ।এ প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী একটা গামা রশ্মি(যার ভর নেই কিন্তু শক্তি আছে) একটি ইলেকট্রন এবং একটি পজিট্রনে পরিণত হয়।উল্লেখ্য যে,ইলেকট্রন এবং পজিট্রন উভয়ের ভর রয়েছে।

রংধনু


রংধনু সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে সূর্যের বিপরীত দিকে দেখা যায়। রংধনুতে সাতটি রঙের সমাহার দেখা যায়। দেখতে ধনুকের মতো বাঁকা হওয়ায় এটির নাম রংধনু। একে রামধনুও বলা হয়।বৃষ্টির কণা বা জলীয় বাষ্প-মিশ্রিত বাতাসের মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো যাবার সময় আলোর প্রতিসরণের কারণে বর্ণালীর সৃষ্টি হয়। এই বর্ণালীতে আলো সাতটি রঙে ভাগ হয়ে যায়। এই সাতটি রঙ হচ্ছে বেগুনী (violet), নীল (indigo), আসমানী (blue), সবুজ (green), হলুদ (yellow), কমলা (orange) ও লাল (red); বাংলাতে এই রংগুলোকে তাদের আদ্যক্ষর নিয়ে সংক্ষেপে বলা হয়: বেনীআসহকলা আর ইংরেজিতে VIBGYOR। এই সাতটি রঙের আলোর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কারণে এদের বেঁকে যাওয়ার পরিমাণে তারতম্য দেখা যায়। যেমন লাল রঙের আলোকরশ্মি ৪২° কোণে বাঁকা হয়ে যায়। অন্যদিকে বেগুনী রঙের আলোকরশ্মি ৪০° কোণে বাঁকা হয়ে যায়। অন্যান্য রঙের আলোক রশ্মি ৪০° থেকে ৪২°'র মধ্যেকার বিভিন্ন কোণে বাঁকা হয়। এই কারণে রংধনুকে রঙগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সারিতে সবসময় দেখা যায়।
 প্রাথমিক উজ্জ্বল রংধনুর একটু উপরে কম উজ্জ্বল আরেকটি গৌণ রংধনু দেখা যায়, যাতে রংগুলি বিপরীত পরিক্রমে থাকে। এই দুই ধনুর মধ্যবর্তী আকাশ (আলেক্সান্ডারের গাঢ় অঞ্চল) বাকি আকাশের থেকে একটু অন্ধকার হয়, তবে ভালো করে লক্ষ না করলে এই তারতম্য নজর এড়িয়ে যেতে পারে।


পিঞ্চ ক্রিয়া

দুটি সমান্তরাল পরিবাহকের মধ্য দিয়ে একই দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটলে পরিবাহকযুগলের মধ্যে যে চৌম্বকীয় আকর্ষণ দেখা যায়, তাকেই পিঞ্চ ক্রিয়া বলে।
এই বল প্রথমদিককার আবেশ চুল্লী-গুলিতেই দেখা গিয়েছিল। ১৯৪০ সাল থেকে শুরু করে তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়ক-এর মধ্যে উত্তপ্ত প্লাজমাকে সংঘবদ্ধ রাখার উপায় হিসেবে এই ক্রিয়ার উপর আজতক ব্যাপক গবেষণা হয়ে আসছে। পরীক্ষামূলক টরয়েডীয় তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়কে তাড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে প্লাজমায় বিপুল তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি করা হয়; এই তড়িৎপ্রবাহ প্লাজমাকে একাধারে যেমন উত্তপ্ত করে তোলে তেমনি পিঞ্চ ক্রিয়ার মাধ্যমে(প্লাজমা মেঘকে কতগুলি সমাক্ষ সিলিন্ডার চিন্তা করলে, পরপর দুটি সিলিন্ডারকে মনে হবে সমান্তরাল দুটি পরিবাহক যাদের মধ্য দিয়ে একই দিকে তড়িৎ প্রবাহিত হওয়ায় তারা পরস্পরকে আকর্ষণ করবে) টিউবের দেয়াল থেকে প্লাজমাকে দূরে রাখে।