আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!!

আমরা কোন স্প্যাম পাঠাবোনা। ওয়াদা।

বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৭, ২০১৪

দেখতে চান মহাকাশ ষ্টেশন কখন আপনার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাবে? এদিকে আসুন পথ বাতলে দেই।



আমাদের মাথার উপর দিয়ে মহাশূন্যে পৃথিবী প্রদক্ষিন রত  কোন স্যাটেলাইট কিংবা আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশন উড়ে গেলে সাধারনত আমরা না খেয়াল করার কারনে দেখতে পাইনা। আমরা কখনো জানতেই পারি না যে এই মুহুর্তে কিংবা একটু পরে বা কয়েক ঘন্টা আগে একটা আস্ত আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশন উড়ে গেল বা যাবে। কিছুক্ষন আগেও আমি জানতাম না। নেটে ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম একটা উপায়। বিষয়টি শেয়ার করতে টেকটিউনে আসলাম। চলুন প্রথমে দেখে নিই গুগোলের সাহায্যে পাওয়া সেই মহাকাশ স্টেশনের কিছু ছবি।
 মহাকাশে নিরন্তর ছুটন্ত ভাসমান আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশন।
 মহাকাশে নিরন্তর ছুটন্ত ভাসমান আর্ন্তজাতিক মহাকাশ ‌স্টেশন।‌ (ছবি সুত্র)
‌আর্ন্তজাতিক মহাকাশ ‌স্টেশনে ভেড়ানো একটি স্পেস সাটল। (ছবি সুত্র)
‌আর্ন্তজাতিক মহাকাশ‌ স্টেশনে ভেড়ানো একটি স্পেস সাটল। (ছবি সুত্র)
‌আর্ন্তজাতিক মহাকাশ ‌স্টেশনে ভেড়ানো একটি স্পেস সাটল। (ছবি সুত্র)
‌আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভেড়ানো একটি স্পেস সাটল। (ছবি সুত্র)
‌স্পেসওয়াকের সময় নভোচারীর চোখে মহাকাশ স্টেশন  ও পার্শ্বে ভেড়ানো একটি স্পেস সাটল। (ছবি সুত্র)
আমেরিকান সংস্থা নাসার একটি সার্ভিসের কল্যানে আপনার এলাকার উপর দিয়ে  উড়ে যাওয়া সেই আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশনের অরবিটাল গতিপথের সময় ও গতিপথ জানতে পারবেন। এবং সম্ভাব্য সময়ে কোন টেলিস্কোপ ছাড়াই খালি চোখেই দেখতে পারেন যে  আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশন আপনার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। হতে পারে সেটা আপনার জন্য এক মনোরম দৃশ্য।
এবার আমরা দেখবো, কিভাবে আমরা জানতে পারব যে কখন সেই আর্ন্তজাতিক মহাকাশ স্টেশন আপনার এলাকার উপর দিয়ে উড়ে যাবে। এজন্যে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে এই লিংকে। এখানে আপনাকে আপনার ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে নাসার সেই সার্ভিস সাইটে রেজিস্ট্রেশন  করতে হবে। এই সার্ভিস এক বছরের জন্য ফ্রি। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া নিম্নে ক্রমানুযায়ী দেয়া হল।
ছবি নং ০১.
 ‌ছবি নং ০২.
ছবি নং ০৩.
‌ছবি নং ০৪.
এর পর আপনার মেইলের ইনবক্সে সাইট থেকে পাঠানো রেজিস্ট্রেশন কোড টি কপি -পেষ্ট করুন এবং আপনার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। সবশেষে নিচের ছবির মত আসলে আপনার কাজ শেষ।
ছবি নং ০৫.
এখন থেকে নিয়মিত আপনার এলাকার উপর দিয়ে যাওয়া মহাকাশ স্টেশনের গতিপথ এবং সময় আপনার ইমেইলে চলে আসবে। আপনাকে শুধু মেইল চেক করতে হবে আর নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট এলাকায় নজর করতে হবে। চাইলে আপনার বন্ধু -বান্ধব কে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অবাক করে দিতে পারেন!! যে আপনি আগে থেকে বলতে পারেন কখন মহাকাশ স্টেশন আপনার এলাকা দিয়ে যাবে!!!!
আপনাদের ভাল লাগা বা এই বিষয়ে সাহায্য করার জন্যই এই টিউনের অবতারনা। জানিনা কতটুকু বোঝাতে পারলাম। কারও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্টস করুন আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনাদেরকে সাহায্য করতে। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন এই কামনায় ..........


আইনস্টাইন ভুল!? কি কি প্রভাব পড়তে পারে? টাইম ট্রাভেল সম্ভব!






আইনস্টাইন, বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলা হয় তাঁকে। বিখ্যাত তাঁর special theory of relativity এর জন্য। গাণিতিকভাবে e=mc^2 যেটা কোন বস্তুর ভরের সাথে শক্তির সম্পর্ক তুলে ধরছে। এ সূত্রের উল্লেখযোগ্য একটা property বা limitation হল কোন বস্তু যার ভর আছে তা কখনই আলোর বেগ বা এর চেয়ে বেশি বেগে যেতে পারবে না। এখন চলে যাচ্ছি modern physics বা আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানে। এর মূল কথা হল কোন কিছুই constant না। সবকিছুই relative বা আপেক্ষিক। আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞান এর মূল ভিত্তি হিসেবে যা প্রথমে পড়ানো হয় তা হল লরেঞ্জ রূপান্তর(Lorentz Transformation). এর তিনটি সূত্র আছে। কোন বস্তু যার ভর আছে তার ক্ষেত্রে এই তিনটি সূত্র প্রযোজ্য। এখানে শুধুমাত্র x axis এর ক্ষেত্রে আলোচনা করা হল। সূত্রগুলো হল:

এ তিনটি ফরমুলা থেকে দেখা যায়,
১) স্থির প্রসঙ্গ কাঠামোতে যে সময় মাপা হয় তা গতিশীল প্রসঙ্গ কাঠামোর তুলনায় বেশি হয়। অর্থাৎ কালের দীর্ঘায়ন হয়।
২) একটি প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে আরেকটি প্রসঙ্গ কাঠামোতে অবস্থিত কোন বস্তুর বেগ যত বৃদ্ধি পেতে থাকে তার দৈর্ঘ্য তত সংকোচন হতে থাকে।
৩) কোন বস্তুর বেগ বাড়তে থাকলে তার ভর বৃদ্ধি পায়।
ফর্মুলাতে v(velocity of the particle) এবং m(mass of the particle) এর মান বসালে ফরমুলা অনুযায়ী কতটুকু change হয়েছে তা পাওয়া যায়। এরও limitation ছিল কখনই কোন বস্তুর বেগ আলোর সমান অথবা এর চেয়ে বেশি হতে পারবে না। আসুন দেখি যদি বস্তুটির বেগ আলোর সমান হয় তাহলে কি কি ঘটতে পারে।
প্রথম ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বস্তুর বেগ যদি আলোর সমান হয় তাহলে আমরা পাচ্ছি সময়= ∞ অর্থাৎ সময় স্থির হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি ভবিষ্যতে যাওয়া অর্থাৎ time travel to the future সম্ভব??????
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বস্তুর বেগ যদি আলোর সমান হয় তাহলে বস্তুর দৈর্ঘ্য হয়ে যায় শূন্য। অর্থাৎ বস্তুর কোন দৈর্ঘ্য থাকে না!
তৃতীয় ক্ষেত্রে ভর হয়ে যাচ্ছে infinity.
কিছু দিন আগে একটি পরীক্ষা করা হয়েছে। নিউট্রিনো নামক অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণাকে নিয়ে। কোটি কোটি নিউট্রিনো এক স্থান বিপুল পরিমাণ শক্তিতে ছাড়া হয়েছে এবং আরেক স্থানে Giant Receiver দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে। তাতে যা সময় লেগেছে তা সবাইকে চমকে দিয়েছে। কারণ তা ছিল আলোর বেগের চেয়ে প্রায় ৩ গুন বেশি! বিজ্ঞানীরা হাজার বারেরও বেশি এ পরীক্ষা করে দেখেছেন। কিন্তু প্রত্যেক বার এ একই ফলাফল পেয়েছেন। তাহলে কি আইনস্টাইন এর সূত্র ভুল????? হতে পারে, নাও হতে পারে। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম বিজ্ঞানীদের পরীক্ষার ফলাফল সঠিক। সেক্ষেত্রে আমরা কি পাচ্ছি লরেঞ্জ রূপান্তর থেকে?
আমি পরিপূর্ণ ব্যাখ্যায় গেলাম না। কারণ এক্ষেত্রে root এর ভিতরে minus চলে আসে। ফলে জটিল সংখ্যার গাণিতিক টার্ম হয়ে যায়। তবে এর ব্যাখ্যাও বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন। তারা বলেছেন যদি পরীক্ষার ফলাফল ঠিক থাকে তাহলে হয়তো বা মানুষের পক্ষে টাইম ট্রাভেল সম্ভব! অর্থাৎ মানুষ ইচ্ছা করলে শুধু ভবিষ্যতে না অতিতেও যেতে পারবে! তবে এভাবে যদি ব্যাখ্যা করি তাহলে বাকি দুইটা postulates থেকে কি দেখা যায়? ভর হয়ে যাচ্ছে infinity+ এবং দৈর্ঘ্য হয়ে যাচ্ছে ঋণাত্মক। বিজ্ঞানীদের পরীক্ষার নির্ভুলতার উপর এখন নির্ভর করছে আধুনিক ফিজিক্স এর মূল ভিত্তি সঠিক নাকি ভুল। কারণ এর মূল property ছিল
1. The velocity of light is constant in any inertial frame of reference(আলোর বেগ সকল প্রসঙ্গ কাঠামোতে স্থির)
2. Nothing can travel faster than the velocity of light(আলোর চেয়ে কোন কিছুই বেশি বেগে যেতে পারে না)
পুরা জিনিশটা complex হয়ে গেল। এত দিন তেমন কোন সমস্যা হয়নি কারন এখন পর্যন্ত কোন কিছু এত বেগে পরিভ্রমন করতে পারে নি।
এখন আসি আরেকটা বিষয়ে। যারা পদার্থ বিজ্ঞানে একটু দুর্বল তারা এ জায়গাটুকু বাদ দিতে পারেন। এখানে আলোচনা করব time travel এর future এবং মাত্রা নিয়ে।
আমরা এখন আছি ত্রিমাত্রিক জগতে। তিনটি মাত্রা হল দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও বেধ(Length, width & depth)। আমরা একি সাথে দ্বিমাত্রিক এবং চতুর্মাত্রিক জগতের সাথে সংযুক্ত। example হিসেবে বলা যায় দ্বিমাত্রিক এর ক্ষেত্রে শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে। অর্থাৎ x & y axis. মূলত আমরা যা কিছু দেখি, বিশেষ করে TV অথবা কাগজে সব কিছুই দ্বিমাত্রিক। math করি x & y axis এ। পরে আমাদের ব্রেন এটাকে ত্রিমাত্রিক করে নেয়। আর চতুর্মাত্রিক এর ক্ষেত্রে আরেকটি মাত্রা যুক্ত হয়েছে। ত্রিমাত্রিক এ আমরা কোন কিছুর দৈর্ঘ্য অথবা প্রস্থ অথবা বেধ change/edit করতে পারি। কিন্তু সময় পারি না। কারণ ত্রিমাত্রিকের ক্ষেত্রে আমরা সময় অতিক্রম করছি। চতুর্মাত্রায় এই সময়টাও একটি মাত্রা হিসেবে যুক্ত হয়। অর্থাৎ আমরা যখন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও বেধ এর সাথে সময় যুক্ত করতে পারব তখন আমরা চতুর্থ মাত্রায় পদার্পণ করব। এর ফলাফল কি হতে পারে তার একটা example দেই।
প্রথমে দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে: ধরে নেই একটা বৃত্ত আছে, তার মাঝখানে একটা ডট। আমরা যেহেতু ত্রিমাত্রিক জগতে আছি আমরা খুব সহজে বৃত্তটি না ভেঙ্গে ওই ডটটি মুছে দিতে পারব। কিন্তু দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। এটা করতে চাইলে প্রথমে বৃত্তটি ভাঙতে হবে। তারপর তার ভিতরে ঢুকে মুছতে হবে। এই example থেকে একটা জিনিস clear দ্বিমাত্রিক কোন কিছুর ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক কোন কিছু ঈশ্বরের সমতুল্য। এখন যদি আমরা ত্রিমাত্রিক এবং চতুর্মাত্রিক এ প্রবেশ করি তাহলে কি দেখা যাবে? আগের example এর মত এক্ষেত্রেও দেখা যাবে চতুর্মাত্রিক কোন কিছু ইচ্ছা মত ত্রিমাত্রিক জিনিস change/edit করতে পারবে। ধরে নিলাম চতুর্মাত্রায় কোন প্রাণী আছে। তারা যদি friendly হয় :-) তাহলে আমাদের কারও যদি কোন কিছু হয় ইচ্ছা করলেই তারা সেটা ঠিক করে দিতে পারবে। যেমন আমাদের পাকস্থলী থেকে খাবার ইচ্ছা করলেই তারা বের করে নিতে পারবে without any kind of tearing. অর্থাৎ তারা আমাদেরকে আমাদের চেয়েও অনেক বেশি ভাল করে দেখবে। আমদের ইচ্ছা মত control করতে পারবে। অর্থাৎ তারাও আমাদের কাছে ঈশ্বরের সমতুল্য হবে! যদি কখনও সত্যি সত্যি টাইম ট্রাভেল সম্ভব হয় অর্থাৎ সময় নিয়ন্ত্রন সম্ভব হয় তাহলে এটাও হতে পারে আমদের ফিউচার। আমরা হয়তও পদার্পণ করতে পারব চতুর্মাত্রিক জগতে। তবে এ বিষয়ে গ্যারান্টি দিতে পারি আমার বা আপনার নাতি পুতির জীবনে হয়ত বা সেটা দেখা সম্ভব হবে না :'(
যাইহোক এবার ফিরে আসি আগের টপিক এ। বাস্তব ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োগ আলোচনা করি। দেখা গেছে কোন বস্তুর বেগ যত বাড়তে থাকে তাতে সময় তত ধীর হতে থাকে। বাস্তব পরীক্ষা লব্ধ একটা উদাহরণ দেই। সুইডেন এর জেনেভায় অবস্থিত একটা গবেষণাগারে অতি ক্ষুদ্র এক ধরনের কণা(দুঃখিত নামটা মনে নেই) এর উপর এ পরীক্ষা চালান হয়েছিল। প্রচণ্ড বেগে(আলোর বেগের প্রায় ৯৯%) underground tunnel এর মধ্য দিয়ে এ কণা চালনা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা গেছে এ কণাটি কিছুটা ভবিষ্যতে ট্রাভেল করেছে। সাধারণ পদার্থ বিজ্ঞান থেকে আমরা জানি প্রত্যেকটা বস্তুর নির্দিষ্ট আয়ু থাকে। এ কণার ক্ষেত্রে আয়ু অনেক কম। এক সেকেন্ড এর এক হাজার ভাগের এক ভাগের মত। স্বাভাবিক ভাবে এ কণাটির খুব অল্প সময় এ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যখন এটি দ্রুত বেগে চালনা করা হয়েছে তখন দেখা গেছে এর আয়ু প্রায় ৩০ গুন বেড়ে গিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে কি হয়েছে এখানে? প্রকৃত পক্ষে কণাটির আয়ু বারে নি। কণাটির কাছে তার আয়ু সমানই আছে। কিন্তু আমাদের কাছে এর আয়ু বেড়ে গিয়েছে। কারণ কণার বেগের কারণে আমাদের কাছে সময় বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ কণাটি কিছুটি হলেও ভবিষ্যতে ভ্রমণ করেছে। এবার আসি এ পরীক্ষা থেকে বিজ্ঞানীদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে। বিজ্ঞানীরা চিন্তা ভাবনা করছেন বিশাল আকারের একটা মহাকাশ যান বানাবেন যেটি প্রচণ্ড বেগে চলতে পারবে(প্রায় আলোর বেগের কাছাকাছি)। পুরা মহাকাশ যান থাকবে জ্বালানী পূর্ণ। আস্তে আস্তে প্রায় চার বছরে এর বেগ উঠবে প্রায় আলোর বেগের কাছাকাছি। এবং আরও চার বছরে অর্থাৎ মোট আট বছর সময় এ যানটি পৃথিবীতে ফিরে আসবে। বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এই আট বছর সময়ে পৃথিবীতে পার হয়ে যাবে ১৬ বছর! অর্থাৎ যানটি প্রায় আট বছর ভবিষ্যতে ভ্রমণ করবে! শেষের অংশে যা বললাম তার পুরাটাই বাস্তব।
এবার আসি একটু ভিন্ন রূপের টাইম ট্রাভেল। আইনস্টাইন এর সূত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য property ছিল। বিশ্লেষণ করলে মূল ভাব দাঁড়ায় কোন ভারী বস্তুর কাছে সময় কোন হালকা বস্তুর চেয়ে ধীরে চলে। example: কোন মহাকাশ যানে সময় পৃথিবীর চেয়ে দ্রুত চলে। কারণ পৃথিবীর ভর মহাকাশ যানের চেয়ে অনেক বেশি। দেখা গিয়েছে difference প্রায় ১০ হাজার ভাগের তিন ভাগ। হয়তও খুব একটা বেশি না কিন্তু চমক প্রদক। অর্থাৎ কোন অনেক ভারী বস্তুর নিকটে থাকলে সময় ধীর হয়ে যাবে। কিন্তু এত ভারী বস্তু পাব কোথায়?????
এখানে এন্ট্রি করছে Blackhole. Blackhole এর নাম আমরা বেশিরভাগই শুনেছি। অনেকেই যদিও জানেন না জিনিসটা আসলে কি। কলেজে থাকতে আমি এ সম্পর্কে কলেজ এর একটা ম্যাগাজিন এ article লিখেছিলাম। যদিও ছাপা হয় নি কারণ এ বিষয়ে একজন স্যারও লিখেছিলেন। যদিও আমারটায় আরও detailed information ছিল। যাইহোক সংক্ষেপে আমি এটা সম্পর্কে বলছি। Blackhole হল এমন এক স্থান বা বস্তু বা কিছু একটা যেটার ভর অসীমের কাছাকাছি, আকর্ষণ শক্তি প্রচণ্ড, এবং তা এতই বেশি যে সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। এখন বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যদি কোন মহাকাশ যান পাঠানো যায় সেখানে যেটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে blackhole কে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকবে তাহলে সেটি সম্ভবত টাইম ট্রাভেল করবে। ওই মহাকাশ যানের ৫০ বছর সময়ে পৃথিবীতে পার হয়ে যাবে ১০০ বছর! অর্থাৎ মহাকাশ যানটি ভবিষ্যতে পরিভ্রমণ করবে। তবে জিনিসটি এখনও theoretical পর্যায়ে আছে। কারণ মানুষের প্রযুক্তি এখনও এত উন্নত হয় নি যে এমন মহাকাশযান আবিষ্কার করবে জেটি Blackhole এর আকর্ষণ থেকে মুক্ত থেকে ভ্রমণ করতে পারবে।
যাইহোক অনেক কথা লিখলাম আজকে। চিন্তা করতে করতে আর লিখতে লিখতে আমার মাথা ঘুরানো শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার গত টিউন "এন্টিভাইরাস রিভিউ: Microsoft Security Essential এবং আমার একটি সমস্যা" এর পর থেকে শুরু করে প্রায় পাঁচ দিন লাগিয়ে এগুলা লিখলাম। বাংলা তেমন ভাল লিখতে পারি না। অনেক বানান ভুল হয়েছিল। শেষে Avro Spell Checker ব্যাবহার করে ঠিক করলাম। তাছাড়া এ টিউন এর জন্য resource সংগ্রহ করতে অনেক website, channel, book ঘাটাঘাটি করতে হয়েছে। কল্পনা ব্যাবহার করতে হয়েছে। প্রথম অংশে যা লিখেছি তার নির্ভুলতা depend করে বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফলের উপর। কিন্তু দ্বিতীয় অংশে যা লিখেছি তা বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে লেখা। আজকে হয়তও সম্ভব নয়, কিন্তু technology যেভাবে exponential(e^x)
হারে উন্নত হচ্ছে, এখন থেকে একশ কিংবা দুইশ বছর পরে হয়তও টাইম ট্রাভেল সম্ভব হলেও হতে পারে! দুঃখের বিষয় এটাই যে দেখার জন্য তত দিন বেঁচে থাকব না.....
আজকে এখানেই শেষ করছি। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।





পৃথিবীর অদৃশ্য ছাদ!



চির-অন্ধকার মহাসমুদ্রে ভাসমান মুক্তোদানার তুল্য নয়নাভিরাম উজ্জ্বল নীল গ্রহ আমাদের এই পৃথিবী। আমাদের এই পৃথিবীতেই রয়েছে স্রষ্টার এক অনন্য কীর্তি বিষ্ময়কর জীবন। যার অনুরুপতা আমাদের এই মহাবিশ্বে বড়ই দুর্লভ। মৃত্যুময় শীতল অন্ধকারাচ্ছন্ন শুন্যতার মহাসমুদ্রে প্রতি সেকেন্ডে ৩০ কিঃ মিঃ তীব্র গতিবেগ নিয়ে ধাবমান এই পৃথিবীর জীবনের প্রবাহকে অটুট রাখার জন্য মহান স্রষ্টা সৃষ্টি করে রেখেছেন হাজারো বিষ্ময়কর ব্যবস্থা। এমনি একটি জীবন রক্ষাকারী সৃষ্টি উপাদান হল আমাদের বায়ুমন্ডল। পৃথিবীর বায়ুমন্ডল, এর জীবমন্ডলের জন্য এক বিষ্ময়কর কৃপা। বায়ুমন্ডল জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে এক অপূর্ব মহিমায়। আসুন আমরা দেখি কিভাবে বায়ুমন্ডল এক অদৃশ্য ছাদ হয়ে আমাদেরই অজ্ঞাতে আমাদেরকে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা করে যাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে, যার ফলশ্রুতিতে এই পৃথিবীতে জীবন বয়ে চলছে অতি স্বাচ্ছন্দে!
আপনারা জানেন প্রতি মুহূর্তে সূর্যে হাজার হাজার বিস্ফোরণ সংগঠিত হয়। এই বিস্ফোরণগুলি হয় প্রচন্ড শক্তি সম্পন্ন। এক একটি বিস্ফোরণ প্রায় এক বিলিয়ন হাইড্রোজেন বোমার শক্তিতে উৎক্ষিপ্ত হয়ে সৌর গ্যাস ও ধুলিকণাকে প্রচন্ডবেগে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়, যা অতি অল্প সময়েই সৌর করণাতে* পৌঁছে যায়¹। এই ধাবমান গ্যাস ও ধুলিকণাকে সৌর বায়ু বা Solar wind বলে। সৌর বায়ু প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ মাইল বেগে ধাবিত হয়ে পৃথিবী এবং সূর্য দূরত্বের ৪০ গুন দুরত্বে অবস্থিত প্লুটো পর্যন্ত খুব স্বাচ্ছন্দে পৌঁছে যায়। একটি সৌর বিস্ফোরণের কমবেশি ১০ দিনের মধ্যে সৌর বায়ু পৃথিবী এলাকায় আঘাত হানে। এই সৌর বায়ু জীবদেহের জন্য অত্যান্ত ধ্বংসাত্বক। জীবদেহের সংস্পর্শে আসার আসার সাথে সাথেই এই সৌর বায়ু দেহ-কোষের অনিবার্য মৃত্যু কিংবা বিকৃতি ঘটাতে সক্ষম, যার ফলশ্রুতিতে ক্যান্সার অবশ্যম্ভাবী। এই সৌর বায়ু পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকে আঘাত করে প্রচন্ড শক্তিতে; আমাদের জানার বাইরে থেকে বায়ুমন্ডল এ সৌরবায়ুকে প্রচন্ড প্রতাপে ফিরিয়ে দেয়, যারফলে অভিশপ্ত এ বায়ু জীবমন্ডলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না। নিশ্চিত মৃত্যু প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ পৃথিবীর চারপাশে খেলে যায়, খেলতে থাকে! মহাকল্যানকর এ বায়ুমন্ডল আমাদের তা এতটুকুও বুঝতে দেয় না। বেঁচে থাকে জীবন!!!
আপনারা কি উল্কা পতনের দৃশ্য দেখেছেন? আহ! কতই না নানয়নাভিরাম সে দৃশ্য! রাতের আকাশে উল্কা পতনের দৃশ্য দেখে আমরা আনন্দিত হই। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন এরই মাঝে লুকিয়ে আছে আমাদের জন্য এক মহা-ভয়ংকর দুঃসংবাদ! যা বিজ্ঞানকে ভাবিয়ে তুলেছে গোটা জীবমন্ডলের অস্তিত্ব সম্পর্কে!!Earth
মহাশুন্য হতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ লাখ উল্কপিন্ড পৃথিবী পৃষ্ঠের দিকে বিপুল গতিতে ছুটে আসে। এরা যখন পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ বলয়ে আটকে যায় তখনই তারা বায়ুমন্ডলের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। সেখানে বাতাসের কণাদের সাথে ঘর্ষনের ফলে জ্বলে উঠে উল্কাপিন্ডগুলি। বায়ুমন্ডলের গভিরতা বাড়ার সাথে সাথে এদের উপর ঘর্ষনের প্রচন্ড চাপ পড়ে এর ফলে তীব্র উত্তাপে বেশিরভাগ উল্কাপিন্ডগুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়, পৃথিবীর মাটিতে শুধু এদের ছাই-ভষ্ম গুলি পতিত হয়। এভাবেই প্রতিনিয়ত বায়ুমন্ডলের প্রতিরোধ্যতার মুখে পরাজিত হতে থাকে পৃথিবীবাসির আতংক উল্কাপিন্ডরা।
মহাশুন্যকে যদি শুধু শুন্য ধারণা করা হয় তাহলে করা হবে এক মারাত্মক ভুল। মহাশুন্য মূলতঃ অসংখ্য শক্তিকণা বা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার এক মহা-বিশাল সমুদ্র। আপনি যদি কখনো বায়ুমন্ডলের শক্তিশালী আবরণকে ভেদ করে কখনো বেরিয়ে যেতে পারেন, তবে সেখানে আপনার দেহের প্রতি বর্গইঞ্চিতে প্রতি সেকেন্ডে ৪ থেকে ৫ টি তেজকণা আঘাত হানবে। তীব্র গতিবেগ ও তেজস্ক্রিয়তার গুণে তারা দেহের কোষগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবে। জীবদেহে এমন মহাজাগতিক রশ্মির সরাসরি আপাতন দেহকোষ-কলায় অযুথ লক্ষ ক্যান্সার কোষ তৈরী করে ফেলবে অতিঅল্প সময়েই। পৃথিবী যদি কোন কারণে এই জীবনঘাতী মহাজাগতিক রশ্মিদের প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত হত, তাহলে এই পৃথিবীর জীবমন্ডল অনেক আগেই ঘুমিয়ে পড়ত চিরন্তন মৃত্যু শয্যায়।
আমরা এ পর্যায়ে মহাজাগতিক রশ্মিদের কিছু রহস্যজনক গুণাগুণের বিশ্লেষন করতে পারি। বায়ুমন্ডলের গুণাগুণ, পৃথিবীর চৌম্বক গু্ণাগুণ আর মহাজাগতিক রশ্মিদের গুণাগুণে রয়েছে এক আশ্চর্য রকমের সমন্বয়। তীব্র গতিসম্পন্ন (আলোর গতি) অতি সূক্ষ্ম এ সকল চার্জযুক্ত মহাজাগতিক কণিকাগুলো পৃথিবীর চৌম্বক শক্তির আশ্চর্য গুনণাগুণের সংগে অপূর্বভাবে সমন্বিত ও বিসংশ্লিষ্ট। পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি মহাজাগতিক ক্ষতিকর কণিকাগুলোকে বিদ্যুত-চৌম্বকীয় প্রভাবে মানুষ ও জীবমন্ডলীর এলাকা অর্থাৎ নিরক্ষীয় অঞ্চল হতে টেনে ও ছেঁকে নিয়ে যায় মেরু অঞ্চলদ্বয়ের দিকে, যেখানে জীবন নেই। জীবনকে নিরাপদ করার জন্য মহাজাগতিক কণা আর পৃথিবীর চৌম্বকত্বের এ সমন্বয় কত বিস্ময়কর! তারপরেও যে সব শক্তি কণা ভূ-চৌম্বকত্বের প্রভাবকে অগ্রাহ্য করে ছুটে আসে পৃথিবীর দিকে, তাদের জন্যও মহান স্রষ্টার সৃষ্টিতে রয়েছে এক অদৃশ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আপনারা জানেন আমাদের বায়ুমন্ডল স্তরে স্তরে গঠিত। বায়ুমন্ডলের প্রকৃতি এমন যে, তার পুরত্ব ভেদ করে কেবল কল্যাণকর রশ্মি তরঙ্গ পৃথিবী পৃষ্ঠ পর্যন্ত এসে পৌঁছাবে। জীবন রক্ষার জন্য যে রশ্মিগুলো না হলেই নয়, তাদের এ বায়বীয় আস্তরন ভেদ করতে কোন বাধা নেই, কিন্তু মানুষ ও জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর রশ্মিসমূহের কোন প্রবেশ অধিকার নেই! উদাহরণস্বরূপ, দূরবর্তী অতি বেগুনী রশ্মি (ফার আল্ট্রাভায়োলেট রে) বায়ুমন্ডলীয় F-region -এ এসে বায়ুমন্ডল কর্তৃক (ওজন গ্যাস) শোষিত হয়ে যায়। এক্স-রে E-region -এ এসে শোষিত হয় ও মহাজাগতিক রশ্মিসমূহ স্ট্রেটোস্ফিয়ারে এবং ট্রপোপজফিয়ারে এসে নিঃশেষ হয়ে যায়। কোটি কোটি মাইলের মহাযাত্রা মাত্র কয়েক মাইলের পথকে অতিক্রম করতে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, নিঃশেষ হয়ে যায়।
Radiation of atmosphere
লক্ষ লক্ষ উল্কাপতন, জীবন বিঘাতী মহাগাগতিক রশ্মি, সৌর ঝঞ্চা আর সূর্যের অবলোহিত রশ্মির উত্তাপ থেকে জীবনকে অভিনব কৌশলে রক্ষা করে চলছে এই বায়ুমন্ডল। সৃষ্টিতে এর চাইতে সুরক্ষিত ছাদ আর নেই।

আশ্চর্য হবেন যে, প্রাণদানকারী অবলোহিত রশ্মি বা ইনফ্রারেড-রে পৃথিবীতে প্রবেশের জন্য নিরুপিত রয়েছে এক অতি শূক্ষ মাত্রা। এ প্রাণ দানকারী ইনফ্রারেড-রে নিজেও কিন্তু প্রাণ-বিঘাতী। এ সৃষ্টি ব্যবস্থায় একে অপূর্বভাবে ছেঁকে দেয়া হয়, কমিয়ে আনা হয় এক সুনির্দিষ্ট পরিমাপে। Kenth F. Weaver এর লেখা থেকে আমরা তার চিত্রটি পাই - In case of infrared, much of the radiation is blocked by water vapour in the atmosphere, but significant wavelengths in infrared still get through.² জীবনের জন্য যেটুকু প্রয়োজন, কেবল ততটুকু ইনফ্রারেড-রে বায়ুমন্ডলীয় ছাঁকুনি পেরিয়ে আমাদেরকে প্রতিদিন জীবন্ত করে যায়। এ ব্যাবস্থাটি না থাকলে পৃথিবীর জীবমন্ডল সূর্যের অত্যান্ত লয়কারক (lethal) রশ্মির উত্তাপে পুড়ে ছাই হয়ে যেত। আবার যেটুকু রশ্মি আমরা আজ পেয়ে থাকি সেটুকু কমতি হলে জীবন মৃত্যু-শীতলতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকত আস্তে আস্তে, নিরক্ষঈয় অঞ্চল ছাড়া সর্বত্র পানি জমাট বেঁধে বরফ হয়ে যেত; পৃথিবী এমন এক নতুন চেহারা পেত যার সাথে আমরা পরিচিত নই; যার কথা আমরা ভাবতেও পারি না।
দিনের বেলা সূর্যতাপ যে উত্তাপের সঞ্চয় করে পৃথিবীর কোন পৃষ্ঠ রাতের বেলা তা যদি সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলে, তবে সেই পৃষ্ঠটি অতিদ্রুত বরফ জমার তাপাঙ্কে পৌঁছে যাবে। এ ক্ষতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরী না হয় সে জন্য বায়ুমন্ডলকে পালন করতে হয় এক অনন্য সাধারণ ভূমিকা। পৃথিবী হতে বিকরিত তাপমাত্রার ২০% বায়ুমন্ডল ধরে রাখে, আর এ উত্তাপ আমাদের জানার ও বুঝবার অজ্ঞাতে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে। সোলার ঊইন্ড, উল্কা পতন, সৌর ও মহাজাগতিক ক্ষতিকর রশ্মি, মানুষ সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের চাপ ইত্যাদি সবই বায়ুমন্ডলকে একা বইতে হয়। বিজ্ঞান আমাদেরকে আরও জানতে সাহায্য করেছে যে, বায়ুমন্ডল পৃথিবীবাসির জন্য ক্ষতিকর রশ্মি, সৌর-বায়ু কিংবা উল্কা পতন রোধ অথবা জীবনী শক্তি ইনফ্রারেড-রে, দৃশ্য আলো, বেতার তরংগ, ও নিকটবর্তী অতিবেগুনী আলোর অনুমোদন ইত্যাদি কাজ ছাড়াও জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পালন করছে আরও অনেক প্রতিরক্ষা দায়িত্ব। এই মহা-ব্যবস্থার মাঝেই রচিত হয়েছে জীবন রক্ষার এক নিগূঢ় রহস্য।
বায়ুমন্ডলের অপ্রতিরোধ্য নিরাপদ রক্ষাবর্মের আচ্ছাদনের আশ্রয়ে বসবাসকারী পৃথিবীর জীবমন্ডলের সকল প্রাণ, তাদের উপরে ঘটে যাওয়া হাজার হাজার ঝড় ও প্রলয়ঙ্কর মৃত্যর প্রসারিত থাবা থেকে বেখবরই থেকে যায়। এভাবেই বায়ুমন্ডলের অদৃশ্য ছাদের নিচে নিশ্চিন্তে প্রবাহিত হচ্ছে জীবন।
------------------------------------------------------------------------
* সৌর 'করোনা' হল সূর্যের প্রান্তসীমার পর প্রসারিত বিশাল শূন্য, প্লুটো কিংবা তারও পরে যার বিস্তৃতি।
1. Herbert Friedman - National Geographic Vol - 128, No 5, 1965.
2. National Geographic Vol - 145, No-5, May 1974.


একটু খানি ফিজিক্স: ডার্ক মেটার



মহাবিশ্বে ডার্ক ম্যাটারের অবস্হান নিয়ে গবেষনা ১৯৩০ সালের কিছু আগে পরে। তখন থেকেই ধরনা করা হয় মহাকাশে যতটা না বস্তু দৃশ্যমান তার চেয়ে বেশী পরিমানে আছে ডার্ক ম্যাটারের সংখ্যা। তবে মেইন সমস্যা হলো এসব অদৃশ্য বস্তু চোখে না দেখে শুধু এদের থেকে নির্গত রশ্নি বা কণা সমূহের উপর ভরসা করে।
ধরা যাক একটা বিশাল দৈত্যাকৃতির গ্যালাক্সিগুচ্ছ যাদেরকে দেখতে হলে বিশাল একটা অপ্টিক্যাল টেলিস্কোপের সাহায্য নেয়া হলো। এখানে দেখা গেলো গরম, অস্হির প্রকৃতির গ্যাস সমূহ যাদের অবস্হান গ্যালাক্সি গুলোর মধ্যে, তাদেরকে দেখার জন্য নাসার চন্দ্র এক্সরে স্যাটেলাইটের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। কিন্তু বর্তমান রাজত্বে এক গুচ্ছ গ্যালাক্সির তৃতীয় কোনো অদৃশ্য মাত্রা বিদ্যমান থাকতে পারে যেটা হলো সেই রহস্যময় ডার্কম্যাটার যা অশেপাশের গ্রহ বা গ্রহানুগুলোকে শুষে ফেলে। এখানে অনেক প্রশ্ন করতে পারে, এসব পদার্থ গুলোকে গিলে ফেলা হলে এগুলো কোথায় যায়?ইভেন্ট হরাইজনে গিয়ে সিঙ্গুলারিটির পর্যায়ে এসব শুষে ফেলা এলিমেন্ট এর কি অবস্হা হয়, তার ব্যাখ্যা কি? এগুলো আপাতত প্রশ্নই থাক পরে কোনো এক পোস্টে এটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে!
এখানে আমার বিষয়টা হলো এগুলো আমি কিভাবে দেখতে পারি, যে বস্তু আলোর কনাকে পর্যন্ত শুষে নেয় তাদের নির্ণয় করার জন্য কিসের সাহায্য নেয়া যায়!
যাই হোক আমরা হয়তো টাইম ডায়ালেশন সম্পর্কে শুনে থাকবো, যদিবা না শুনি তাহলেও অসুবিধা নাই! ধরা যাক একটা ধাতব বুলেট ছোড়া হলো। স্বাভাবিক ভাবে বিনা বাধায় এটা সোজা পথেই যাবে কিন্তু এটাকে যদি মাঝপথে কোথাও শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ডের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে বুলেটটির গতি পথ একটু বেকে যাবে। এটা ম্যাগনেটিক ফিল্ডের যত কাছ দিয়ে যাবে এর বেকে যাওয়াটা ততটা প্রমিন্যান্ট হবে কেন্দ্রের দিকে। তাহলে এক সাথে অনেক গুলো বুলেট আলাদা আলাদা পিস্তল থেকে একই সাথে ছোড়া হলে দেখা যাবে ঐ ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কাছে দিয়ে যাবার সময় কিছুটা বাক নেবে এবং বুলেটের গতিপথ গুলো কেন্দ্রের দিকে ঝুকে যাবে। ডার্ক ম্যাটারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে যখন বুলেটের গতিপথকে আমরা আলোর সাথে তুলনা করি। তাহলে ডার্কম্যাটার সনাক্ত করার একটা উপায় পাওয়া যেতে পারে যখন দেখা যাবে তার পিছনে থাকা নক্ষত্র গুলোর আলো গুলো খুব কাছাকাছি দেখা যাবে যেটাকে আমরা অপ্টিক্যাল ইলউশন বলতে পারি!
এটাকে আসলে "উইক লেন্সিং" হিসেবে বলা যেতে পারে যা এখন খুব উন্নততর টেক হিসেবে ধরা যায়!


বুধ গ্রহ, সৌর জগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ!



বুধগ্রহ (Mercury):  বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের এবং আমাদের সৌর জগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ। বুধের কথা মানুষ বহুকাল আগে থেকেই জানে।
বুধ এর ছবি।
সৌর জগতে বুধ এর অবস্থান।
সূর্য থেকে এটি প্রায় ৫.৭৯ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আর পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫.৫ কোটি কিলোমিটার দূরে। এর ভর পৃথিবীর ০.০৬ গুণ আর ব্যাস ০.৩৮ গুণ। এর গড় ঘনত্ব পানির ৫.৪ গুণ। সূর্যের চারপাশে আবর্তন করতে এর সময় লাগে ৮৮ দিন। Mariner 10 নামে একটি spacecraft  1974 থেকে 1975 সালে এর ভূপৃষ্টের ৪৫% পর্যন্ত ম্যাপ করতে পারে।
চিত্রঃ Mariner 10 spacecraft
আরেকটি spacecraft হচ্ছে MESSENGER spacecraft যেটি January 14, 2008 তার প্রথম উড্ডয়েনে বাকি ৩০% ম্যাপ করছে।
চিত্রঃ MESSENGER Spacecraft
এটি এখনো বুধ এর কক্ষপথে রয়েছে এর গ্রহটির বিভিন্ন অংশ ম্যপিং করার জন্য এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত থাকবে।
এর উপরিভাগের তাপমাত্রা -১৮৩ থেকে ৪২৭ সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত হয়ে থাকে।  এর বায়ুমণ্ডলে প্রধানত সোডিয়াম, হিলিয়াম, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন দ্বারা গঠিত।
চিত্রঃ বুধ এর গঠন।
এটির কেন্দ্রে একটি বিশাল লোহার মজ্জা রয়েছে। যার জন্য এর চৌম্বক শক্তি পৃথিবী থেকে ১% বেশি। এর এই লোহার মজ্জার কারনে আয়তনের তুলনায় এর গ্র্যভিটি একটু বেশি। এটির নামটি আসছে রোম থেকে  তাদের God Mercury এর নামে বুধ গ্রহের নাম Mercury।  Mercury মানে পারদ নামে একটি ধাতুর নাম। আর তারা  Mercury বলতে বুঝে গ্রীকদেবতাদের বার্তাবাহী দেবতা।
এর গঠনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
1.     Crust(ভূত্বক) —100–300 কিলো মিটার পুরু
2.     Mantle(মধ্য ভাগ)—600 কিলো মিটার পুরু
3.     Core(মর্জ্জা)—1,800 কিলো মিটার হচ্ছে এর ব্যসার্ধ।
বুধ দেখতে কিছুটা চাঁদ এর মত। এটি প্রতিদিন সকালে এবং চাঁদ রাতে দেখা যায়।


শুক্র গ্রহ-পৃথিবীর জমজ ও সৌরজগতের দ্বিতীয় গ্রহ



শুক্রগ্রহ (Venus): শুক্রগ্রহ সৌর জগতের দ্বিতীয় গ্রহ। এটি  224.7 দিনে সূর্যকে একবার প্রদিক্ষন করে। সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশে এবং ভোরের পূর্ব আকাশে আমরা শুক্রগ্রহকে তারার মতো দেখি। কিন্তু এটি একটি গ্রহ।
চিত্রঃসত্যিকারের শুক্র গ্রহ।
এটি সূর্য উঠার সময় এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় বেশি উজ্জ্বলতা পায়। তখন একে আমরা দেখি। তাই একে Morning Star বা Evening Star বা শুক তারা বলা হয়।
যারা কম্পিউটাররে সামনে থেকে উঠে বা কাজ পেলে রেখে  এ সব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পারেন  না তারা উপরের চিত্র দেখে একটু মনের স্বাদ মেটান। চাদের পাশে দেখুন ছোট্ট একটি বিন্দু এটি ই শুক্র গ্রহ।
রাতের আকাশে চাদের উজ্জ্বলের পর এর উজ্জল্য বেশি। এটি সূর্য থেকে ১০.৮২ কোটি কিলোমিটার আর পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
শুক্র পৃষ্ঠের কাছাকাছি চাপ ও তাপ অনেক বেশি  এর তাপমাত্রা 47.8
Venus মানে হলো ভালোবাসার দেবী। তবে শুক্র হলো গ্রহ বিপর্যয়ের একটি উদাহরণ। প্রচণ্ড তাপ, আবহমণ্ডলের চাপ, ক্ষতিকর গ্যাস, আতঙ্কজনক বর্ষণ, লালাভ উজ্জ্বলতাসহ শুক্রকে দেখলে ভালোবাসার দেবী মনে না হয়ে বরং নরকই মনে হয়।শুক্রগ্রহ বাইরের জগতের কাছে পুরু মেঘের ও বিষাক্ত আবহমণ্ডল দ্বারা সম্পূর্ণভাবে ঢাকা।
রাডারে দেখা শুক্র গ্রহ।
গবেষণায় জানা গেছে, শুক্রগ্রহের পাহাড়-পর্বত থেকে এক ধরনের রাডার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়, যা কোনোক্রমে শিলারাশি থেকে প্রতিফলিত হওয়া সম্ভব নয়। এ ধরনের রাডার তরঙ্গ কেবল বরফাবৃত্ত বা ধাতব পদার্থে মোড়ানো ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত হওয়া সম্ভব। কিন্তু শুক্রগ্রহে প্রচণ্ড তাপের কারণে বরফের অস্তিত্ব অকল্পনীয়।
এছাড়াও গ্রহের ভূমি সমতল থেকে ৩ মাইল উঁচু পাহাড়-পর্বত থেকে প্রতিফলিত রাডার তরঙ্গ বেশি শক্তিশালী। এসব তথ্য বিশেল্গষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন শুক্রগ্রহের এসব পাহাড়-পর্বত ধাতব পদার্থে আবৃত। শুক্রগ্রহের ওপর তোলা ছবি দেখলেও ধাতবপৃষ্ঠে আবৃত পাহাড়-পর্বতের ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করেন, শুক্র গ্রহেও নাকি এক সময় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল।  পৃথিবীর মতো শুক্র গ্রহে ও  সমুদ্র ও নদী ছিলো। ১৯৯০ সালে মহাকাশে পাঠানো নাসার মহাকাশ যান “Magellan”' শুক্রগ্রহ পৃষ্ঠের যে সব ছবি পাঠিয়েছিল সেই ছবিগুলোতে নদীর প্রবহমান খাদের মতো অসংখ্য শুকনো ও মরা চ্যানেল লক্ষ্য করা যায়।
ছবিগুলো দেখে প্রাথমিক ভাবে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছিল আজ থেকে ৫ লক্ষ বছর আগে শুক্র গ্রহ পৃষ্ঠে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে যে বিপুল পরিমাণে লাভার উদীরণ ঘটে ঐ লাভা স্রোতের ফলেই চ্যানেলগুলোর সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানীদের এই ধারণার পক্ষে আরও যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো হচ্ছে সালফিউরিক এসিড যুক্ত ঘন বায়ু মণ্ডলের এই গ্রহের বর্তমান তাপমাত্রা ৪০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা প্রাণ সৃষ্টি বা প্রাণধারণের ও বিকাশের কোন সম্ভাবনাই নাই। কিন্তু কম্পিউটার প্রযুক্তির বিকাশ ও উন্নতির কারণে শুক্রগ্রহ পৃষ্ঠর ছবিগুলো নতুন করে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। নতুন পর্যালোচনায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, শুক্রগ্রহ পৃষ্ঠে যে মরা বা শুকনো চ্যানেলগুলো রয়েছে সেগুলো খুবই দীর্ঘ। বিজ্ঞানীদের ধারণা লাভা স্রোতের কারণে এত দীর্ঘ চ্যানেল হওয়া সম্ভব নয়। তবে পানি প্রবাহ বা নদী প্রবাহের জন্য এত দীর্ঘ ও লম্বা চ্যানেল হওয়া সম্ভব। তাই বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন শুক্রগ্রহেও এক সময় প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল। তবে শুক্রগ্রহ পৃষ্ঠ খুবি শুষ্ক।
Project Magellan   দ্বারা ১৯৯০-১১৯১ শুক্র গ্রহ পূর্ণ ভাবে ম্যাপিং হয়। শুক্র গ্রহ পৃথিবীর মত স্থলজ গ্রহ। এটির দৈহিক গঠন পৃথবীর মত শক্ত ।এর ভর পৃথিবীর ০.৮২ গুণ আর ব্যাস পৃথিবীর ০.৯৫ গুণ। এর গড় ঘনত্ব ৫.১ যা পৃথিবীর ঘনত্বের চেয়ে সামান্য কম। এটি গঠন পৃথিবীর গঠনের মত।এটাকে অনেক সময় পৃথিবীর বোন বা যমজ বলা হয়। এর বায়ুমণ্ডল প্রধানত কার্বনডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন দিয়ে গঠিত।কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ শতকরা ৯৬.৫% আর নাইট্রোজেনের পরিমাণ শতকরা ৩.৫% মাত্র। এতে অতি সামান্য পরিমাপ জলীয়বাষ্প, আর্গন, কার্বন মনোক্সাইড প্রভৃতি আছে।কার্বনডাই-অক্সাইড ও জলীয়বাষ্প থাকার দরুন শুক্রের মতো পৃথিবীরও একটি গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া আছে।


ভীন্য গ্রহের প্রাণী এলিয়েন এদের সম্পর্কে আমরা কতটুকো জানি, আসুন জানি এলিয়েন কি?



এলিয়েন কি ?

মহাবিশ্বের তুলনায় সৌরজগৎ কিছুই নয়, একেবারে বালির মতো। আর সে তুলনায় পৃথিবী তো অনেক ছোট। এই মহাকাশের অনেক কিছুই এখনও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। অধরা রয়ে গেছে মহাবিশ্বের অনেক রহস্যও। আমাদের জানার সীমাবদ্ধতায় হয়তো অচেনা রয়ে গেছে নানা বিস্ময়কর জগৎ। কতটা জানি আমরা? আরও কত কোটি কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা তো কেবল চাঁদে পা দিলাম, মঙ্গলে যান প্রেরণ শুরু হয়েছে। কিন্তু এর বাইরে প্রায় সবই আমাদের অজানা। অজানা সেই জগতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা অস্বাভাবিক নয়। অস্বাভাবিক নয় পৃথিবী ছাড়া বসবাসযোগ্য কোনো গ্রহের অস্তিত্বও। আর সেই অচীন গ্রহের বাসিন্দাদেরই আমরা এলিয়েন বলি। অর্থাৎ এলিয়েন বলতে এমন জীবকে বোঝায় যাদের উদ্ভব পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বের অন্য কোথাও। আর সেখানেই এদের বসবাস। এলিয়েন দেখতে কেমন হবে তার কোনো ঠিক নেই। তারা দেখতে পৃথিবীর প্রাণীদের কাছাকাছিও হতে পারে, আবার এ ধারণা থেকে সম্পূর্ণ আলাদাও হতে পারে। আবার সত্যি সত্যি মহাবিশ্বে এলিয়েনের কোনো অস্তিত্ব আছে কিনা এ নিয়েও দ্বিধার অন্ত নেই। তবে এলিয়েন আসলেই রয়েছে_ এরকম বিশ্বাসীদের সংখ্যাই বেশি। এলিয়েনরা দেখতে কেমন? আমাদের চেয়ে পিছিয়ে নাকি অনেক এগিয়ে? তাদের ভাষা কি?
এলিয়েনদের এসব বিষয় সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাদের অস্তিত্ব রয়েছে_ এ ধারণার পিছনে যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণ খুঁজে পাওয়া গেছে।

সাম্প্রতিক জরিপের ভাষ্য

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষই এলিয়েনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। আর তাদের ধারণা এলিয়েন আমাদের মাঝেই হেঁটে বেড়াচ্ছে। ভিনগ্রহের প্রাণী বা 'এলিয়েন' আছে এবং তারা আমাদের মধ্যেই মানুষের ছদ্মবেশে হাঁটছে, চলছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাস্তবে তার প্রমাণ মিলুক বা না মিলুক অন্ততপক্ষে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ এমনটাই বিশ্বাস করে।
এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে কি নেই থাকলে তারা কোথায় কিভাবে রয়েছে এ নিয়ে 'রয়টার্স বিসিএমএম'-এর এক বিশ্ব জরিপের ফলাফলে মানুষের এই বিশ্বাস প্রতিফলিত হয়েছে। ২২টি দেশের ২৩ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, ভারত এবং চীনে এ বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি। সেখানে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করে এলিয়েনরা মানুষের ছদ্মবেশে আমাদের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অবশ্য, বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ মানুষই এলিয়েনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। বাজার গবেষণা সংস্থা ইপসস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জন রাইট বলেন, 'জরিপের ফলাফলে এটা মনে হচ্ছে যে, জনসংখ্যা বেশি হওয়ার সঙ্গে এলিয়েনে বিশ্বাস বেশি থাকার হয়তো একটা সম্পর্ক আছে। কেননা, কম জনসংখ্যার দেশের মানুষের মধ্যে এবিশ্বাস তুলনামূলকভাবে কম।'
এছাড়া দেখা গেছে, এলিয়েনে বিশ্বাস নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি। পুরুষদের মধ্যে এ বিশ্বাস ২২ শতাংশ হলেও নারীদের মধ্যে তা ১৭ শতাংশ। আর ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ৩৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে এলিয়েনে বিশ্বাস বেশি।

থাকা না থাকার দ্বন্দ্ব

পৃথিবী ব্যতীত অন্য কোনো গ্রহে অন্য কোনো প্রাণী আছে কিনা সেই তর্ক-বিতর্ক চলছে এখনও। মহাশূন্যে কোথাও কেউ আছে কিনা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য চলছে বিরামহীন প্রচেষ্টা। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো রিসার্চ প্রজেক্টের পিছনে ব্যয় করছে কোটি কোটি ডলার। আমেরিকান জ্যোতিবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে সৌরজগতের বাইরের কোনো সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে একটি প্রজেক্ট চালু করেন, যার নাম ছিল প্রজেক্ট ওজমা। এখন ১০টিরও বেশি দেশে সেটি অনুসন্ধান কাজ চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বর্হিবিশ্ব থেকে বিচ্ছুরিত কোনো সঙ্কেত ধরা পড়েনি। বিশাল মহাশূন্যে এই খোঁজার শুরু আর শেষ কোথায় সেটা নির্ণয় করাই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের পৃথিবী যে গ্যালাক্সির বাসিন্দা তার নাম হলো মিল্কিওয়ে। অন্য হাজার কোটি গ্যালাক্সির কথা বাদই দিলাম, শুধু মিল্কিওয়ে ছায়াপথেই রয়েছে ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র। আবার এই নক্ষত্র পরিভ্রমণরত প্রাণের উপযোগী কোনো গ্রহ খুঁজে ফেরা অনেকটা পাগলামোই মনে হতে পারে। এরপরও বিজ্ঞানীরা এলিয়েন রহস্যের মোড়ক উন্মোচনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর বিশ্বের অধিকাংশ বিজ্ঞানীর ধারণা, এই মহাবিশ্বে আমরা মোটেও একা নই। আমাদের মতো আরও অনেক বুদ্ধিমান প্রাণীই নাকি ছড়িয়ে আছে মহাবিশ্বে। আর এদেরই আমরা এলিয়েন নাম দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এরকম কিছু যদি থেকেই থাকে, তাহলে এরা কেমন? তারা খায়ই বা কি? তাদের কি আমাদের মতোই বুদ্ধি আছে, নাকি স্রেফ পোকামাকড়ের মতো বোকাসোকা। তবে অধিকাংশেরই অভিমত, এরা আমাদের থেকেও অনেক বেশি বুদ্ধিসম্পন্ন। আজকের সভ্যতা যতটুকু এগিয়েছে, সে তুলনায় এলিয়েনরা নিশ্চয়ই আরও অনেক অগ্রগামী। আমাদের সভ্যতার শুরু থেকেই যদি তারা ভিন্ন গ্রহ থেকে এখানে আসতে পারে, তাহলে এতদিনে তাদের উন্নতি কতটুকু হতে পারে তা কেবল কল্পনা করা যায়। কে জানে তারা হয়তো নিয়মিতভাবেই পৃথিবী পর্যবেক্ষণ করে চলেছে! আর এ কারণেই হয়তো পৃথিবীতে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় কিছু অদ্ভুত চেহারার জীব। চোখের পলকেই আবার তারা মিলিয়েও যায়। তারাই কি তবে ভিনগ্রহের বাসিন্দা, এলিয়েন?

বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ধারণা

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ধারণা, এলিয়েন আছে, অবশ্যই আছে। এত বড় মহাবিশ্ব আর এত গ্রহ-নক্ষত্র-ছায়াপথ, এদের মধ্যে কি কোথাও নেই এলিয়েন! তিনি বিশ্বাস করেন, অবশ্যই এলিয়েন আছে। শুধু আমরাই তাদের খুঁজে পাচ্ছি না। তবে একদিন তাদের খোঁজ পাওয়া যাবেই।

দ্বিধা-দ্বন্দ্বের বেড়াজালে অস্তিত্ব

এলিয়েনের অস্তিত্ব নিয়ে কল্পনাবিলাসীদের যেমন আগ্রহের শেষ নেই, তেমনি দ্বিধা-দ্বন্দ্বেরও কমতি নেই। এলিয়েনরা যদি থেকেই থাকে তাহলে ওরা কী পৃথিবীতে আসে না। অনেকেই বিচিত্র প্রাণী, বিচিত্র আকারের সসার আর নভোযান দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। আবার কেউ এসব ঘটনাকে নেহাতই দৃষ্টিভ্রম বা মতিভ্রম বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এলিয়েনরা যদি পৃথিবীতে এসেই থাকে, তাহলে ওরা কেন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে না? বিজ্ঞানীদের ধারণা, তারা হয়তো আমাদের ভাষা বুঝতে পারে না বা আমরা তাদের ভাষা বুঝি না। কিন্তু তাদের তো নিশ্চয়ই ভাষা পরিবর্তন করে নেওয়ার ক্ষমতা থাকে। কারণ এলিয়েনদের আমরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা সভ্যতার বাসিন্দা বলেই জানি। তাছাড়া সিনেমায় তাদেরকে সে রকম করেই দেখানো হয়। তবে এগুলো সবই কল্পনা। বিশেষ করে যারা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখেন, সেসব লেখকদের কল্পনা। আর বিভিন্ন সিনেমায় তাদের বিভিন্ন রূপে পরিচালকরা তুলে ধরেন।

এলিয়েনরা কিসে চড়ে পৃথিবীতে আসে ?

প্রশ্ন আসে এলিয়েনরা কিসে চড়ে পৃথিবীতে আসে? অনেক সিনেমায় দেখা গেছে, এলিয়েনরা বিশাল বিশাল মহাকাশযানে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। এ মহাকাশযানগুলো নিয়েও গবেষণার শেষ নেই। কেউ এদেরকে বলে ফ্লাইং সসার বা উড়ন্ত চাকতি, আবার কেউ বলে আন-আইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট সংক্ষেপে ইউএফও। এই ফ্লাইং সসারে করে এলিয়েনরা দূর কোনো গ্রহ থেকে চোখের পলকে পৃথিবীতে আসে এবং আবার চলেও যায়। তাদের গতির কাছে আমরা হার মেনে যাই। অর্থাৎ আমাদের বিজ্ঞান হার মেনে যায়। যে কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় এই সসার দেখতে পেয়েও তাকে শনাক্ত করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই সেটি অশনাক্তই থেকে গেছে। আবার জোর করে কেউ বলতেও পারছে না যে এগুলো সব মিথ্যা। কারণ হিসেবে অনেক প্রমাণও রয়েছে সবার সামনে, যাতে এলিয়েনদের যান বলেই তাদেরকে শনাক্ত করা যায়।

টাইটানে এলিয়েন !

কিছুদিন আগে নাসার গবেষকদের এক দাবিতে এলিয়েনের অস্তিত্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া গেছে। নাসার গবেষকরা নাকি শনির সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটানে এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণী থাকার প্রমাণ পেয়েছেন। নাসার ক্যাসিনি থেকে পাঠানো ডেটা বিশ্লেষণ করেই গবেষকরা টাইটানে এ সূত্র খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকদের বরাতে টেলিগ্রাফ অনলাইনে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, শনির অনেকগুলো চাঁদের মধ্যে একমাত্র টাইটানের আবহাওয়াই প্রাণ ধারণের উপযোগী। আর চাঁদের এই আবহাওয়ায় জীবনের উৎপত্তি হয়েছে এবং তারা শ্বাস নিতে পারছে। আরো জানা গেছে, এ ভূপৃষ্ঠের জ্বালানি খেয়েই নাকি বেঁচে আছে টাইটানের এসব এলিয়েন।

কি ভাবে শ্বাস নেয়

অবশ্য এর আগে জ্যোতির্বিদরা দাবি করেছিলেন, টাইটানের আবহাওয়া প্রাণ ধারণের পক্ষে অসম্ভব শীতল। এ গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে 'ইকারাস' এবং 'জিওফিজিক্যাল রিসার্চ' সাময়িকীতে। এদিকে ইকারাস সাময়িকীর বরাতে জানা গেছে, টাইটানের হাইড্রোজেন গ্যাস গ্রহটির আবহাওয়া মণ্ডলে প্রবাহিত হচ্ছে, কিন্তু পৃষ্ঠদেশে এসে এটি হারিয়ে যাচ্ছে। হাইড্রোজেন গ্যাসের এই প্রবাহ থেকেই প্রমাণিত হয় টাইটানে বসবাসরত এলিয়েনরা শ্বাস নিতে সক্ষম। অন্যদিকে গবেষকরা জানিয়েছেন, টাইটানের আবহাওয়ায় প্রাণ ধারণ সম্ভব। সূর্যরশ্মির সঙ্গে এ গ্রহের বায়ুমণ্ডলে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলো বিক্রিয়া করে অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি করে বলে গবেষকরা ধারণা করছেন। যদিও ক্যাসিনির পাঠানো ডেটা থেকে এ ধরনের কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
মানুষ যেভাবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস নিতে অক্সিজেন ব্যবহার করে তেমনি টাইটানের এলিয়েনরা হাইড্রোজেনে শ্বাস নিয়ে টিকে আছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, আগামী ৪০০ কোটি বছর পরে সূর্য যখন লাল বামন দৈত্যের আকার ধারণ করবে, তখন টাইটানে বাস করাটাই হবে উপযুক্ত। কারণ তখন এটিই হবে স্বর্গতুল্য।

দেখতে কেমন বুদ্ধিমানরা

বিতর্ক থাকলেও যেহেতু এলিয়েন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আর কৌতূহলের কোনো শেষ নেই, তাই ধরে নেওয়া যায় সত্যিই হয়তো ভিনগ্রহের কিছু একটা আছে। যদি থেকেই থাকে তাহলে ওদের আকৃতি কেমন? এই বুদ্ধিমান প্রাণীরা দেখতে ঠিক কী রকম হবে তা নিখুঁতভাবে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু এদের চেহারায় কী কী থাকতে পারে, তা অন্তত বলা যায়। কারণ, বিজ্ঞানের প্রাথমিক নিয়মগুলোকে কোনো ক্ষেত্রেই উতরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিশ্বজগতের সব জায়গাতেই বিজ্ঞানের কিছু মৌলিক নিয়ম মোটামুটি একই রকম।

কি পরে

আমরা প্যান্ট, শার্ট, জুতা, হাতঘড়ি কতো কিছুই তো পরি, কিন্তু এলিয়েনরা কি পরে? যারা এলিয়েন দেখেছেন তাদের ভাষ্য, এলিয়েনরা নাকি কিছুই পরে না। ব্যাপারটা একটু খাপছাড়া মনে হতে পারে। প্রশ্ন জাগে, তবে কি ওরা এখনও কাপড় আবিষ্কার করতে পারেনি? এলিয়েনরা কি আমাদের চেয়ে বুদ্ধিতে এখনও পিছিয়ে আছে? বিষয়টি আসলে এমন নয়। কাপড় না পরলেও ওরা এক ধরনের হুড ব্যবহার করে। সম্ভবত আমাদের মতো স্পেস স্যুট টাইপের কিছু একটা। যেহেতু বুদ্ধিতে ওরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে তাই কাপড়-চোপড়ের ব্যাপারে ওদের অতি আধুনিকায়ন একেবারে অবাস্তব নয়।
এলিয়েন দেখেছেন এমন মানুষদের দাবি_এলিয়েনরা লম্বা লম্বা জোব্বা পরে থাকে। তাদের মুখ ঢাকা থাকে লম্বা হুডে। আর আকৃতিতে অনেকটা মানুষের মতো হলেও তারা দেখতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এলিয়েনরা ক্লোজ ফিটিং জাম্পস্যুট পরে থাকে। অনেকটা সুপারম্যানের মতো। আবার রোবটের মতো বিভিন্ন পদার্থের আবরণও নাকি পরে থাকতে দেখা গেছে।

এলিয়েন কি স্কুলে যায় ?

মজার ব্যাপার হলো_ এলিয়েনদের স্কুলে যাওয়ার ব্যবস্থাও নাকি আছে। তবে সবাই কিন্তু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না। কেবল যেসব এলিয়েন লম্বা তারাই পড়াশোনা করার সুযোগ পায়! আর এমনই একদল ছাত্র এলিয়েন নাকি পৃথিবীতে পড়তে এসেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কোনো এক বনের মধ্যে এই এলিয়েন দলকে পড়াচ্ছিলেন তাদেরই এক শিক্ষক। আর এই ঘটনা দেখে ফেলেন বিখ্যাত লেখক হোয়াইটি স্ট্রেইকার। তিনি তার 'সিক্রেট স্কুল : প্রিপারেশন ফর কন্ট্রাট' বইতে এদের কথা লিখেছেন। এ নিয়ে অবশ্য বিতর্কও কম হয়নি।
টিভি পর্দায় নাটক কিংবা সিরিয়ালে অথবা মুভিতে আমরা বিচিত্র আকৃতির সব এলিয়েনদের দেখে থাকি। 'দি ব্লব' সিনেমার নায়ক স্টিভ ম্যাকুইন যাদের সঙ্গে লড়াই করলেন, সেই গ্রহান্তরের বুদ্ধিমানরা জেলির মতো থকথকে এক ধরনের প্রাণী। এরা এককোষী প্রাণী অথচ মাংসাশী! একেকোষী প্রাণীর মাংস গিলে খাওয়া যে কত হাস্যকর, তা জীববিজ্ঞানের প্রথম পড়ুয়ারাও জানে। কারণ, একটি কোষ যদি বিশাল আকৃতির হয় তা হলে তার প্রোটোপ্লাজমের কেন্দ্রস্থল হবে পরিধির থেকে অনেকটা দূরে। ফলে তার মধ্যে খাদ্য-নির্যাস ও গ্যাসীয় পদার্থের চলাচল হবে এত ধীরে যে, তার অস্তিত্ব রক্ষাই সম্ভব নয়।
উল্টো দিকে আবার একটা গল্পে দেখা যাচ্ছে যে, গ্রহান্তরের প্রাণীগুলো মসুর ডালের চেয়ে ছোট। এর লেখক হয়তো 'মাইকোপ্লাজমা' নামক ব্যাকটেরিয়ার কথা জেনে উৎসাহিত হয়েছিলেন। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার দৈর্ঘ্য এক ইঞ্চির এক কোটি ভাগের এক ভাগ। প্রাণীদের ছোট হওয়ার সীমা নেই বটে। তবে তারা বুদ্ধিমান হবেই না। কারণ বুদ্ধির জন্য যে কয়েক কোটি জটিল কোষ সমন্বিত মস্তিষ্ক দরকার, তা ওইটুকু মাথায় ধরবে না। তাই বুদ্ধিমান হওয়ার জন্য আকৃতির একটা সীমা আছে। একটা জন্তুর আকৃতিকে যদি কোনো উপায়ে অর্ধেক করে দেওয়া যায়, তাহলে জ্যামিতিক নিয়মে তার উপরতলের ত্বক ও অভ্যন্তরীণ কলকব্জার অনুপাত হয়ে যাবে চার গুণ। ফলে তখন তার দেহের তাপ ছড়িয়ে পড়বে অনেক তাড়াতাড়ি। অর্থাৎ শরীরটা দ্রুত ঠাণ্ডা হতে থাকবে। এ কারণে তাকে ঘনঘন খাবার গ্রহণ করে দেহের তাপ ঠিক রাখতে হবে। এই ব্যাপারটাই ঘটে ছোট্ট হামিং বার্ডের ক্ষেত্রে। তাই গ্রহান্তরের বুদ্ধিমান প্রাণীরা এত ছোট হতে পারে না যে, তাদের খাওযা-দাওয়াতেই সময় চলে যাবে।

এলিয়েনদের কি ডানা আছে ?

এলিয়েন নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন সবার মধ্যে গাঢ় আকারে রয়েছে। আর তা হলো এলিয়েনের কি ডানা থাকতে পারে। বিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ এমনটি মোটেও সম্ভব নয়। কেননা, আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যেসব প্রাণীকে উড়তে দেখা গেছে, তাদের ওজন খুব বেশি হলে ২০ পাউন্ড। তার চেয়ে বেশি ওজনের কোনো প্রাণীকে উড়তে হলে ধড়ের চেয়ে মাথাটাকে হতে হবে অনেক বেশি হাল্কা। এটুকু মাথায় ঘিলু আর কতটুকু থাকবে! বুদ্ধিমান হওয়ার জন্য অসংখ্য জটিল সেল থাকতে হয়। ছোট মাথায় তা কি করে সম্ভব? তবে আরেকটি যুক্তি রয়েছে। গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব যদি খুব বেশি হয় বা গ্রহটার মাধ্যাকর্ষণ খুব কম হয় তা হলে ভারী মাথার প্রাণীদেরও ওড়ার সুবিধা হতেও পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আবার ব্যাপারটা হয়ে যায় সোনার পাথরের মতো। কারণ মাধ্যাকর্ষণের টান কম হলে ঘন বায়ুমণ্ডল থাকা খুব অস্বাভাবিক। আবার ঠিক তেমনই ঘন বায়ুমণ্ডল থাকা মানে মাধ্যাকর্ষণের টানও খুব বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। তাই গ্রহান্তরের উড়ন্ত বুদ্ধিমানের কল্পনা বাস্তবায়িত হওয়া খুব মুশকিল।

এলিয়েনদের পা কয়টি ?


আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, পায়ে চাকা লাগানো থাকলে চলাফেরা বা দৌড়ানোর খুব সুবিধা হতো। তাই গ্রহান্থরের কিছু রোবট জাতীয় জীবকে চাকার সাহায্য দৌড়তে দেখানো হয়। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, খুব মসৃণ রাস্তা বা রেললাইনের ওপর চাকার যে সুবিধা তা এবড়োথেবড়ো জায়গায় কখনোই পাওয়া যায় না। যদি সেটা হতো, তাহলে বিবর্তনের দয়ায় পৃথিবীতে কারও না কারও শরীরে একটু আধটু চাকা গজাবার লক্ষণ দেখা দিতই! কিন্তু চাকা না হোক, অনেকেরই প্রশ্ন এলিয়েনেরও কি দুটি করে পা থাকে? নাকি দুটোর বেশি পা রয়েছে? যদি সত্য জীবের দুটোর বেশি পা থাকত, তা হলে সুবিধা কি হতো? বিজ্ঞানীদের যুক্তি, মাথাটাকে উপরে তুলে শরীরটাকে খাড়া করে রাখার জন্য দুটো পা-ই সবচেয়ে আদর্শ। কারণ এর বেশি পা হলে জন্তুদের মতো দেহটাকে অনুভূমিক রাখতে হবে পায়ের ওপর ভর দিয়ে। এতে জন্তুদের মতো দৌড়ার জোর হবে বটে, কিন্তু তা হলে পেশি স্নায়ুর মধ্যে সামঞ্জস্য করার জন্য মস্তিষ্কেও স্নায়ুকেন্দ্রের কোষগুলোকে নতুনভাবে বিন্যস্ত করে অনেক বেশি শক্তি ক্ষয় করতে হবে। ফলে মস্তিষ্কের এই অঞ্চলটুকুর ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অন্য অঞ্চলগুলো হয়ে পড়বে দুর্বল। আবার অন্যদিক দিয়ে বলতে গেলে, পৃথিবীতে ৬ পা বা তার বেশি পা ওয়ালা পোকামাকড়ের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু কেউই বুদ্ধিমান নয়। চার পাখনা ওয়ালা আদিম মাছ 'ইউস্থেনোপ্টেরন' থেকে যেসব চার পা ওয়ালা জন্তু বিবর্তিত হয়েছে, তাদের বুদ্ধি বেড়েছে বেশি কিন্তু পায়ের সংখ্যা বাড়েনি। মানুষও এই বংশধারার উত্তরপুরুষ, তবে তার দুটো পা বদলে দিয়ে দুটো হাত হয়েছে বুদ্ধিপ্রয়োগের জন্য। আর তাই গ্রহান্তরের বুদ্ধমানদেরও এর চেয়ে বেশি হাত-পা থাকার কথা নয়।

এলিয়েনদের চোখ কেমন ?

চোখ সম্পর্কে ও একই কথা বলা যায়। সারা গায়ে গাদা গাদা চোখ থাকা মানে মস্তিষ্কেও গাদা গাদা দৃষ্টিকেন্দ্র থাকা বা একটা দৃষ্টিকেন্দ্রের মধ্যে জটিলতা বাড়ানো। আমরা যখন দেখি, তখন একটা জিনিসেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করি, দুটো জিনিসে একসঙ্গে দৃষ্টি দেয়া যায় না। বস্তু থেকে আলোক রশ্মি্ন দুটো চোখে পড়লেও চোখের লেন্স তাকে মস্তিষ্কের ভেতর একই বিন্দুতে মিলিত করে। অনেক চোখ থাকলে সবকিছু গুলিয়ে যাবে। সৃষ্টির আদি থেকে আজ পর্যন্ত যত প্রাণীর চোখ ফুটেছে, তাদের দুটো চোখের জায়গা থেকেছে একদম কাছাকাছি, এমনকি কিছু কিছু কীট পতঙ্গের পুঞ্জাক্ষিও তৈরি হয়েছে ঘেঁষাঘেঁষি করে। একটা বড় চোখ বা অনেক চোখ থাকলে জীবন সংগ্রাম যদি সামান্যও সুবিধা হতো তা হলে প্রকৃতি একবার অন্তত কোনো জীবের ক্ষেত্রে তা পরীক্ষা করে দেখত। তাই গ্রহান্তরের বুদ্ধিমানদের সামনে-পেছনে চোখ থাকতে পারে না, এটা নিশ্চিত। শুধু চোখ নয়, কান ও নাকের অবস্থান হবে মস্তিষ্কের একদম কাছে। এই ইন্দ্রিয়গুলো যদি দূরে থাকে, তা হলে সংবেদন অনুভূত হতে সময় লাগবে বেশি, ফলে প্রাণীরা চটপটে হবে না, প্রতিক্রিয়া হবে দেরিতে। তাই গ্রহান্তরের কোনো বুদ্ধিমানের মস্তিষ্ক যদি থাকে পেটের কাছে, তা হলে ওই ইন্দ্রিয়গুলোও থাকবে তার কাছাকাছি। কিন্তু সেটাও সম্ভ নয়। কারণ সবচেয়ে দরকারি নিয়ম হচ্ছে মস্তিষ্কে থাকতে হবে এমন জায়গায়, যাতে তা মাটি থেকে সবচেয়ে উঁচুতে উঠতে পারে। রেডিওর 'এরিয়াল' বা টিভির 'অ্যান্টেনা' যেমন উঁচু করে রাখতে হবে ভালোভাবে সংকেত পাওয়ার জন্য, তেমনি চোখ কান-নাকও যথাসম্ভব উঁচুতে রাখতে হবে পরিবেশ থেকে আলো-শব্দ-গন্ধের সংকেত গ্রহণ করার জন্য। তবে এ ধরনের ভুল অনেক কম হবে, যদি মনে করা যায় সেই গ্রহের পরিবেশ অনুযায়ী তাদের বিবর্তন হয়েছে। সে পরিবেশ যদি একদম পৃথিবীর মতো হয়, তা হলে বিবর্তনও হবে পৃথিবীর মতো। কিন্তু সে গ্রহের পরিবেশ যদি পৃথিবীর চেয়ে একদম আলাদা হয় তাহলে তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে নতুন রকম চেহারা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতেই পারে। কিন্তু সেই শরীর নিয়ে পৃথিবীতে এসে লড়াই করা কখনোই সম্ভব নয়, পৃথিবীর পরিবেশই তাদের ধ্বংস করে দেবে। এমনকি, কৃত্রিম স্পেস স্যুট পরিধান করেও তারা এখানে আসার ঝুঁকি নেবে না, কৌতূহল মেটানোর জন্য তারা নিদেনপক্ষে স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযান পাঠাতে পারে। তাই এ পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে হাত মেলানো বা হাতাহাতি করা কোনো দিনই হয়তো সম্ভ্ব হবে না।

এলিয়েনের প্রকার ভেদ ?

যাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তাদের আবার রকম কি? অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য, অনিশ্চিত এই প্রাণীদের মধ্যেও বিজ্ঞানীরা প্রকারভেদ করেছেন। তাদের মতে, এলিয়েন প্রায় ৬০ রকমের হতে পারে। স্টার কিডজ প্রজেক্টের পরিচালক রিচার্ড বয়লান এই এলিয়েনদের বিভিন্ন ভাগের কথা বলেছেন। আমাদের মধ্যে যেমন মানুষ-পশুপাখি ইত্যাদি প্রজাতি রয়েছে, ঠিক তেমনি এলিয়েনদের মধ্যেও নাকি বিভিন্ন ধরনের প্রজাতির অস্তিত্ব রয়েছে। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে দেখা যাওয়া এলিয়েনের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। যদিও এরকম অনেক ঘটনা নিয়েই সন্দেহ রয়ে গেছে, তবু বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনে কিম্ভূতকিমাকার প্রাণীর ছবি-চিত্র, এ যাবৎকালে ধারণা করা এলিয়েনদের মধ্যে বিজ্ঞানীরা প্রকার করেছেন। সে অনুসারে পৃথিবীতে যতগুলো এলিয়েন দেখা গেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে জেটাস গোত্রের এলিয়েনদের। আর তাদের সম্পর্কেই বিজ্ঞানীদের ধারণা কিছুটা বিস্তৃত। তবে জেটাসদের মধ্যে প্রকার রয়েছে। একেক জেটাস একেক রকম। তবে কোনটি কোন গ্রহের জেটাস তার ওপর ভিত্তি করে এদের ভাগ করা হয়।

গ্রে এলিয়েন

জেটাসের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো গ্রে এলিয়েন। এ জাতের এলিয়েনরা মোটামুটি মানুষের মতোই। তবে এরা কিছুটা ছোটখাটো গড়নের, মানুষের সমান লম্বা হতে পারে না। 'কোই মিল গ্যায়া' সিনেমার জাদু দেখতে যে রকম ছিল, গ্রে এলিয়েনরা দেখতে সেরকম। এদের গায়ের রং হয় ধূসর সাদা, মাথাটা বেশ বড়। তবে কোনো চুল থাকে না। চোখ টানা টানা, মাথার দিকে আড়াআড়ি, ভ্রু নেই। আর এদের চিবুক ঠিক ইংরেজি অক্ষর ভি-এর মতো। গ্রে এলিয়েনদের মুখ থাকলেও কোনো ঠোঁট থাকে না। এদের হাত খুব শক্ত এবং প্রায় হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হয়। হাতে মাত্র তিনটি আঙ্গুল থাকে। এ আঙ্গুলে কোনো গিঁট কিংবা নখ থাকে না। এরকম ছোট জেটাস ছাড়াও প্রায় মানুষের সমান লম্বা জেটাস এলিয়েনও আছে। তারা কেউ কেউ মাশরুমের মতো সাদা, বাদামি, কালো, চোখ লম্বা, নীল চোখও হয়ে থাকে। এদের গঠন সাধারণত কোন গ্রহে বাস করে তার ওপর নির্ভর করে।

রেপটেলিয়ানস

আরেক জাতের এলিয়েন হলো 'রেপটেলিয়ানস বা রেপটোডিস'। এরা দেখতে অনেকটা কুমিরের মতো। আবার কখনও কখনও ড্রাগনের মতোও হয়ে থাকে। মুখের আকার অনেকটা ডিম্বাকৃতির হতে পারে। রেপটেলিয়ানসদের চামড়া অত্যন্ত রুক্ষ হয়। অনেকটা পাথুরে পাথুরে। এদের চোখ হলদে-নীল এবং ডিম্বাকৃতির হতে পারে। এই প্রজাতির এলিয়েনদের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এরা মনের ভাষা পড়তে পারে। রেপটেলিয়ানসদের সামনে যে যাই ভাবুক না কেন, তারা সেটা আগেভাগে বুঝে ফেলার ক্ষমতা রাখে।

প্রেয়িং মেন্টিস

এ জাতের এলিয়েনরা লম্বাটে সরু মুখওয়ালা হয়ে থাকে। প্রেয়িং মেন্টিসদের চোখও জেটাসদের মতো লম্বা সরু। তবে প্রেয়িং মেন্টিসদের চোখ অনেকটা ইংরেজি ভি অক্ষরের মতো, ওঠানামা করে। এদের হাত-পাগুলো খুবই সরু হয়। ফলে এদেরকে দেখতে অনেকটা পোকার মতো লাগে। ঠিক কোমরের কাছ থেকে পোকার মতো হাত-পা গজায় এদের। দেখতে পোকার মতো হলেও মাথায় অনেক বুদ্ধি রাখে এরা। প্রেয়িং মেন্টিসদের পোশাক অনেক উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এমনকি সেটি সূর্যের মতো উজ্জ্বলও হতে পারে।

জাওয়াস


স্টার ওয়ার্স সিনেমায় দেখা চরিত্রগুলোর মতো যেসব এলিয়েন, তারাই জাওয়াস নামে পরিচিত। এদের কাপড়-চোপড় পরার ধরনটাই আলাদা, মাথায় হুড এবং মুখে পর্দা লাগিয়ে চলাফেরা করে। লম্বায় বেশ খাটো, মাত্র সাড়ে চার ফুটের মতো। জাওয়াসদের মুখ দেখা যায় না। কারণ যে হুড এরা পরে থাকে সেটির ছায়া এদের মুখকে অন্ধকার করে রাখে। এই এলিয়েনদের বিশেষত্ব হলো এরা টেলিপ্যাথি জানে। রেপটালিয়ানসদের মতো একজন কি ভাবছে তা এরা বুঝে নিতে পারে। এরা নাকি টেলিপ্যাথির মাধ্যমে মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। এভাবে জাওয়াসদের সঙ্গে দেখা করার কথা অনেকেই বলে থাকেন।

টল হোয়াইটস

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এক পাইলট চার্লস হল, 'টল হোয়াইটস' নামের এক ধরনের এলিয়েনের বর্ণনা দিয়েছেন। এই এলিয়েনরা নাকি বাস করে আর্কাটারাস নামের একটি নক্ষত্রের কাছাকাছি কোথাও। লম্বায় ৬ ফুট এই এলিয়েনরা দেখতে অনেকটা মানুষের মতোই। তবে মানুষের চেয়ে বড় নীল রংয়ের চোখ এদের। চুল রাখে বড় বড়, আর এই চুলেরই পোশাক পরে থাকে। অনেকটা অ্যাভাটার সিনেমার দেখা এলিয়েনদের মতোই এদের গড়ন। তবে টল হোয়াইটসদের দেহের রং নীল না হয়ে সাদাটে হয়ে থাকে। হাতে থাকে ৪টি আঙ্গুল। এই আঙ্গুলে আবার খুবই শক্ত নখ থাকে। এদের কেউ কেউ আবার জাম্প স্যুট পরে। যেসব মহাকাশযানের গল্প আমরা হরহামেশাই শুনি, এরা সেইরকম মহাকাশযান নিয়েই ঘোরে। দ্রুতগামী নিজস্ব মহাকাশযানে তারা যে কোনো দূরত্ব নিমিষেই পার হয়ে যায়।

রোবট

আরেক ধরনের এলিয়েন হচ্ছে রোবট এলিয়েন। তবে যেসব রোবট এলিয়েন পৃথিবীতে এসেছে তারা নাকি ঠিক এলিয়েন নয়। কেবল দূর কোনো গ্রহে বাস করা এলিয়েনদের পাঠানো দূত এরা। আমরা যেমন পৃথিবী থেকে অনেক রোবট বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি, ব্যাপারটা অনেকটা সে রকমই।

এরিয়া ৫১ এ এলিয়েনের সম্পর্ক

পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন স্থান হিসেবে চিহ্নিত আমেরিকার নেভাদা অঙ্গরাজ্যের সামরিক ঘাঁটি এরিয়া ৫১। আজ পর্যন্ত কোনো বেসামরিক লোক এখানে ঢুকতে পারেনি। দুর্ভেদ্য বেষ্টনী ঘেরা এ ঘাঁটির প্রবেশপথে লেখা আছে 'অনধিকার প্রবেশকারীকে গুলি করা হতে পারে'। তাই কেউ যদি এখানে ঢুকেও থাকেন তাহলে তিনি হয়তো আর জীবিত থাকতে পারেননি। লাসভেগাস থেকে ৯৫ কিমি দূরে গ্রুমলেকের পাশে অবস্থিত এ জায়গাটি নানা কারণে বিতর্কিত। তবে এলাকাটিকে বিতর্কিত ও রহস্যময় করে তোলার পেছনে এর আশপাশের বাসিন্দারাই দায়ী। তাদের অনেকের দাবি, এরিয়া ৫১ এর আকাশে ফ্লাইং সসারের মতো কিছু উড়তে দেখেছেন তারা। আবার অনেকেই নাকি এমন দ্রুতগতির বিমান উড়তে দেখেছেন। যার গতি সাধারণ বিমান বা যুদ্ধবিমান কোনোটার সঙ্গেই মিলে না। এরিয়া ৫১ নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত বিতর্ক হচ্ছে মানুষের চন্দ্রাভিযানের নাটক। অ্যাপোলো-১১ এর চন্দ্রবিজয়ের ঘটনা নিয়ে সন্দেহবাদীদের সংখ্যা অনেক। তাদের ধারণা, মানুষ আসলে চাঁদে যেতে পারেনি। পুরো নাটকটি সাজানো হয়েছে এই এরিয়া ৫১ এর ভেতর। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত বিতর্ক চললেও আমেরিকান সরকার এসব কোনো কিছুই স্বীকার করেনি। তাতে সন্দেহ না কমে বরং আরও বেড়েছে।
এসব সত্য-মিথ্যা নিয়ে সমগ্র বিশ্ব যখন দ্বিধাবিভক্ত, তখন বোমা ফাটান এরিয়া ৫১ এ কর্মরত পদার্থবিজ্ঞানী বব লেজার। এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন এরিয়া ৫১ এ এমন কিছু মৌলিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা করা হয় যা এখনো আবিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে তার বক্তব্যকে অনেকেই ধোঁয়াটে বলে বর্ণনা করেছেন। তার মতে সুপারনোভা বা বাইনারি স্টার সিস্টেম থেকেই সম্ভবত একটি মৌল সংগ্রহ করা হয়েছে। যেটি ৪৭টি ১০ মেগাটন হাইড্রোজেন বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। ওখানে নাকি চাকতি আর বল দিয়ে তৈরি একটি সরল যন্ত্র আছে। যন্ত্রের বলের চিপে ওই মৌলটি রাখা হলে নাকি সময় স্থির হয়ে যায়। তারা নাকি সময় স্থির করে রাখার পরীক্ষা চালিয়ে সফলও হয়েছেন। তার মতে, ওই মৌল পদার্থটি বলের চিপে রাখামাত্র তা কোনো একভাবে অ্যান্টিম্যাটার তৈরি করে এবং তার ফলে বিপুল শক্তি উৎপাদিত হয়। অ্যান্টিম্যাটার রিয়েক্টরে শক্তি উৎপাদনের ফলে বস্তুর নিজস্ব মহাকর্ষ বলের সৃষ্টি হয় এবং নিজস্ব শক্তিতে তা বিদ্যুৎ বেগে ছুটতে পারে। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চগতিসম্পন্ন ফ্লাইং সসার তৈরির গবেষণা চলছে।
তবে বিজ্ঞানী বব সবচেয়ে বড় বোমা ফাটান এলিয়েন প্রসঙ্গে। তিনি বলেন সেখানে নাকি এলিয়েনদের নিয়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক ফ্লাইং সসার আছে। সেই সঙ্গে রয়েছে এলিয়েনের দেহাবশেষও। সেই এলিয়েনটির ব্যবচ্ছেদ করে নাকি জানা গেছে, ওই প্রাণীটি রেটিকুলাম-৪ নামক জ্যোতিষ্ক থেকে এসেছে। প্রাণীটির উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট। শরীর লোমহীন। কালো বড় বড় চোখ এবং শরীর কৃষ্ণকায়। এর দেহব্যবচ্ছেদ করে নাকি ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডের বদলে বিশাল এক পতঙ্গ পাওয়া গেছে। সার্চ ইঞ্জিন গুগলে এ সংক্রান্ত ছবি ও ডেটার অসংখ্য লিংক পাওয়া গেছে। তবে যেহেতু এরিয়া ৫১ সংক্রান্ত কোনো বিষয়েরই সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা যাচাই-বাছাই সম্ভব নয়, তাই এসব বিতর্কেরও কোনো সমাধান খুঁজে বের করা যায়নি। আর বরাবরের মতো উড়ন্ত সসার আর এলিয়েন প্রসঙ্গেও আমেরিকা সরকার ও আমেরিকা সেনাবাহিনী নিশ্চুপ রয়ে গেছে। আর তাই এরিয়া ৫১ এ সত্যি কোনো এলিয়েন কানেকশন আছে কিনা সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা যা রটে তা কিছুটা হলেও বটে। এরিয়া ৫১ এ এলিয়েন সংশ্লিষ্টতা থাকলেও থাকতে পারে।
এরিয়া ৫১ এর এই ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে পাওয়া। তবে এলিয়েনের দেহবশেষের ছবিগুলো নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

সব শেষে মজার একটি তথ্য......

এলিয়েন নিয়ে কত মাতামাতি। বিজ্ঞানীরাও হন্যে হয়ে খুঁজছেন এলিয়েনের অস্তিত্ব। কেউ কেউ আবার এমনটিও বলছেন, পৃথিবীর ভেতরেই নাকি এলিয়েন পাওয়া যাবে খুব শিগগিরই। তবে এখন পর্যন্ত সত্যিকার এলিয়েন পাওয়া না গেলেও চীনের গুয়াংজি অঞ্চলের ডালু নামের একটি গ্রামে এলিয়েনের মতো মাছ দেখতে পাওয়া যায়। পাহাড়ের গুহায় থাকা লেকের তলদেশ থেকে ওটা পেয়েছেন চীনের প্রাণিবিদরা। মাটির প্রায় এক কিলোমিটার নিচেই সেটার বাস। অনেকটা হাঁসের মতো লম্বাটে মুখ আর লাল রঙের ঠোঁট। লম্বা ও পাতলা মাছটির মুখের বেশ কাছাকাছি চোখ। ঠোঁটের কাছে আছে লম্বা গোঁফ! ডালু গ্রামের বৃদ্ধ লি জুনেং জানান, 'স্থানীয়রা এ রকম মাছের কথা বড়দের মুখে অনেক শুনেছে।' মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফু ইয়ান ডং নামের যে গুহার লেক থেকে মাছটি পাওয়া গেছে, তাকে স্থানীয়রা 'সৌভাগ্যের গুহা' বলে ডাকে। এই গুহার লেকের পানিই গ্রামের পানির মূল উৎস। মনে করা হয়, এই লেকের পানি পান করেই গ্রামের মানুষ শত বছরের বেশি আয়ু পায়।