আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!!

আমরা কোন স্প্যাম পাঠাবোনা। ওয়াদা।

মহাকাশযান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মহাকাশযান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, অক্টোবর ০১, ২০১৩

নতুন ৫০৩টি সম্ভাব্য পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান লাভ .................

নাসা'র কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ আরও ৫০৩টি নতুন সম্ভাব্য পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান দিয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৩ হাজার ২ শ ১৬টি এমন গ্রহের সন্ধান দিয়েছে কেপলার। কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র ১৩২টির ব্যাপারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা আশা প্র
কাশ করেছেন এক সময় তারা এই বিশাল সংখ্যক গ্রহের অন্তত ৯০ শতাংশের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন।

সদ্য সনাক্ত গ্রহগুলোর ব্যাপারে কেপলার মিশনের ম্যানেজার রজার হান্টার বলেন, "এই গ্রহগুলো আকারে ছোট এবং তাদের তারার বসবাস যোগ্য সীমার মধ্যে অবস্থিত। কিন্তু তবুও আমাদেরকে আরও অনেক হিসেব-নিকেশের জন্যে অপেক্ষা করতে হবে।"

কেপলার মিশন শুরু হবার তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৯ সালের মে মাস থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত কেপলার যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে সেগুলো থেকেই এই নতুন ৫০৩টি গ্রহকে বেছে নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত মাস থেকে কেপলার তার সাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছে না। অর্থাৎ পৃথিবীসদৃশ গ্রহ খুঁজার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। অরিয়েন্টেশান মেইন্টেইনিং সিস্টেমে গোলযোগের কারণে এ সমস্যাটি দেখা দিয়েছে।

উৎক্ষেপণের সময় কেপলারের ৪টি ফাংশানিং রিএকশান হুইল ছিল। এদের ৩টি নিয়মিত ব্যবহারের জন্যে এবং একটি জরুরী ব্যবহারের জন্যে। ২০১২ সালের জুলাইয়ে দ্বিতীয় হুইলটি বিকল হয়ে যাওয়ায় বাড়তি হুইলটি অর্থাৎ চতুর্থটি ব্যবহার করা শুরু হয়। কিন্তু গত মাসে সেই চতুর্থ হুইলটিও অকেজো হয়ে যায়। আর এই সমস্যার সমাধান না করতে পারলে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের কেপলার মিশনের এখানেই সমাপ্তি অবধারিত।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা অভয় দিয়ে বলছেন তারা খুব দ্রুতই বিকল হুইলটির জায়গায় একটি সচল হুইল প্রতিস্থাপনের কাজে নাম্বেন। আর অন্য দিকে কেপলার মিশনের প্রধান পরিদর্শক, নাসা'র বিজ্ঞানী বিল বরুকি উদ্ভূত সমস্যাটিকে একে বারেই পাত্তা না দিয়ে বলেন, "আমাদের কাছে কেপলারের উপহার হিসেবে এখনও এত বেশি তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষিত আছে যে ওগুলোর রহস্য সমাধান এবং বিশ্লেষণ করতে আগামী ২ বছর পর্যন্ত গবেষনা চালিয়ে যেতে হবে।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমি নিশ্চিত আগামী দুই বছরে চমৎকার এবং অবশ্যই বিস্ময়কর কিছু আবিষ্কার দেখবে পৃথিবী।"

বলা বাহুল্য গোটা পৃথিবী, কিংবা বলা যায় অন্তত মহাকাশপ্রেমী মানুষেরা সেই বিস্ময়কর আবিষ্কারগুলোর জন্যেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ স্পেস ডট কম

রবিবার, আগস্ট ১৮, ২০১৩

ফিনিক্স (নভোযান)

ফিনিক্স একটি রোবট নিয়ন্ত্রিত নভোযান যাকে মঙ্গল গ্রহে একটি বিশেষ অভিযানে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি মার্স ফিনিক্স প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত।

কোন নভোযানের নির্জীব যাত্রীদের সাধারণত পেলোড বলা হয়। তাই মঙ্গল গবেষণার জন্য প্রেরিত এই যন্ত্রপাতিগুলোকেও পেলোড বলা যায়। ফিনিক্সের পেলোডগুলো হচ্ছে:
  • রোবোটিক বাহু - ভূপৃষ্ঠের ০.৫ মিটার পর্যন্ত খনন করতে পারে। এর কাজ মাটি ও ধূলির নমুনা সংগ্রহ করা।
  • রোবোটিক বাহুর ক্যামেরা - রোবোটিক বাহুর হাতার সাথে যুক্ত। এটা দিয়ে প্রথমেই নমুনা সংগ্রহের অঞ্চলের ছবি তোলা হয়, সেখান থেকে কি ধরণের নমুনা পাওয়া যাবে তা এই ছবির মাধ্যমেই বিশ্লেষণ করা হয়।
  • সার্ফেস স্টেরিও ইমেজার - নভোযানের মূল ক্যামেরা। পাথফাইন্ডারের সাথে যুক্ত ক্যামেরার চেয়ে এর রিজলিউশন অনেক বেশী। এর মাধ্যমে মঙ্গলের আর্কটিক অঞ্চলের উচ্চ রিজলিউশন ছবি তোলা হয়।
  • থার্মাল অ্যান্ড ইভল্‌ভ্‌ড গ্যাস অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম টেগা (TEGA)। এতে উচ্চ তাপমাত্রার চুল্লীর সাথে ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্র যুক্ত আছে। এরকম আটটি ওভেন আছে। প্রতিটি ওভেন একটি করে নমুনা বিশ্লেষণ করতে পারে। বুঝতেই পারছেন, এর মাধ্যমে সংগৃহীত নমুনায় কি কি পদার্থ আছে তা খতিয়ে দেখা যাবে।
  • মার্স ডিসেন্ট ইমেজার - সংক্ষিপ্ত নাম মার্ডি (MARDI)। এর মাধ্যমে অবতরণের সময় মঙ্গল পৃষ্ঠের ছবি তোলার কথা ছিল। কিন্তু কিছু তথ্য হারিয়ে যাওয়ার কারণে অবতরণের সাত মিনিটে সে কোন ছবিই তুলতে পারেনি।
  • মাইক্রোস্কপি, ইলেকট্রোকেমিস্ট্রি অ্যান্ড কন্ডাক্টিভিটি অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম মেকা (MECA)। এর মধ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র আছে:
    • আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র: এর কাজ মঙ্গল থেকে সংগৃহীত নমুনায় উপস্থিত রেগোলিথের ছবি তোলা। ভূপৃষ্ঠে মৃত্তিকা স্তরের নিচেই রেগোলিথ স্তর থাকে, রেগোলিথ স্তরের নিচে থাকে অধিশিলার স্তর। তাই অধিশিলার উপরে অবস্থিত আলগা শিলাবস্তুর আচ্ছাদনকেই রেগোলিথ বলা যায়।
    • পারমাণবিক বল অণুবীক্ষণ যন্ত্র: আলোক অণুবীক্ষণের কাছে প্রেরিত নমুনার সামান্য অংশ নিয়ে কাজ করতে পারে। সে আট সিলিকনের টিপ দিয়ে এই নমুনা স্ক্যান করে এবং সিলিকন টিপ থেকে নমুনার বিকর্ষণের পরিমাণ নির্ণয় করে।
    • ওয়েট কেমিস্ট্রি গবেষণাগার: এখানে চারটি প্রকোষ্ঠে আছে। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে মঙ্গলের নমুনার সাথে পৃথিবীর পানির মিশ্রণ ঘটানো হয়। এর ফলে মঙ্গলের মাটিতে উপস্থিত দ্রবণীয় উপাদানগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রধানত ক্ষার ধাতুর আয়নগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়। এর মাধ্যমে মঙ্গল জীবন বিস্তারের জন্য কতটা সহায়ক হতে পারে তা নির্ণয় করা সম্ভব।
    • স্যাম্প্‌ল হুইল ও ট্রান্সলেশন স্টেজ: ৬৯টি নমুনা ধারকের মধ্যে ৬টি এখানে অবস্থিত। এগুলোর মাধ্যমে রোবটিক বাহুর কাছ থেকে নমুনা নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর কাছে পাঠানো হয়।
  • থার্মাল অ্যান্ড ইলেকট্রিকেল কন্ডাক্টিভিটি প্রোব - সংক্ষিপ্ত নাম টিইসিপি (TECP)। এতে পাঁচটি সন্ধানী যন্ত্র আছে যা দিয়ে নিম্নলিখিত পরিমাপগুলো করা হয়:
    • মঙ্গলীয় মাটির (রেগোলিথ) তাপমাত্রা
    • তাপীয় পরিবাহিতা
    • তড়িৎ পরিবাহিতা
    • পরাবৈদ্যুতিক প্রবেশ্যতা (dielectric permittivity)
    • বায়ুর দ্রুতি
    • পরিবেশের তাপমাত্রা
  • আবহাওয়বিজ্ঞান স্টেশন - নাম থেকেই এর কাজ বোঝা যাচ্ছে। এর সাথে বায়ু নির্দেশক এবং চাপ ও তাপ সেন্সর যুক্ত আছে। এগুলোর মাধ্যমে সে মঙ্গলের আবহাওয়া বিশ্লেষণ করে চলে।

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৫, ২০১৩

ভারতের মঙ্গল অভিযানের উচ্চবিলাসী পরিকল্পনা



marsউদীয়মান অর্থনীতির দেশ ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ISRO (ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন) আগামী অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ মঙ্গল গ্রহ অভিযানের এক উচ্চবিলাসী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। লাল গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ISRO এর ব্রান্ডিং প্রসারের লক্ষেই অনুসন্ধানী স্যাটেলাইট পাঠানোর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পুরো এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিগ ব্যাং’।
PSLV-XL (পোলার স্যাটেলাইট লাঞ্চ ভেইকল) নামের একটি উৎক্ষেপন সিষ্টেম হতে ‘মার্স অরবিটার মিশন (MOM)’ নামের মহাকাশযানে সওয়ার করে স্যাটেলাইটটি পাঠানো হবে। এটাই হবে সৌরজগতের কোন গ্রহে ভারতের পাঠানো প্রথম মহাকাশ যান। নির্ধারিত সময়ে উৎক্ষেপিত হলে, আগামী ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মহাকাশ যানটি মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছাবে।
ISRO অফিসিয়াল সূত্রে জানা গেছে, এই স্যাটেলাইটটিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মোট ১৫ কেজি ওজনের ৫ টি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামাদি থাকবে। এই ৫ টি যন্ত্রের মধ্যে, লিম্যান অলফা ফটোমিটার(LAP), মঙ্গলের ডিউটেরিয়াম/হাইড্রোজেন সম্বৃদ্ধ ঊর্ধ বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজবে। মিথেন সেন্সর ফর মার্স (MSM) মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের এক্সোস্ফিয়ার স্তরে মিথেন গ্যাসের অনুসন্ধান করবে। বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ স্তরে নিরপেক্ষ সংমিশ্রনের তথ্য জানার কাজ করবে মার্সিয়ান এক্সোস্ফিরিক কম্পজিশন এক্সপ্লোরার (MENCA)। মার্স কালার ক্যামেরা (MCC) ছবি তোলা কাজ করবে। আর টিআইআর ইমেজিং স্পেকট্রোমিটার (TIS) মঙ্গলপৃষ্ঠের গঠন ও খনিজ সম্পদের হদিস বের করবে।
এত বড় রকমের একটি অভিযানে কিরকম প্রযুক্তিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়, এই মিশনটি ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে তা বুঝতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।