ফিনিক্স একটি রোবট নিয়ন্ত্রিত নভোযান যাকে মঙ্গল গ্রহে একটি বিশেষ অভিযানে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি মার্স ফিনিক্স প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত।
কোন নভোযানের নির্জীব যাত্রীদের সাধারণত পেলোড বলা হয়। তাই মঙ্গল গবেষণার জন্য প্রেরিত এই যন্ত্রপাতিগুলোকেও পেলোড বলা যায়। ফিনিক্সের পেলোডগুলো হচ্ছে:
কোন নভোযানের নির্জীব যাত্রীদের সাধারণত পেলোড বলা হয়। তাই মঙ্গল গবেষণার জন্য প্রেরিত এই যন্ত্রপাতিগুলোকেও পেলোড বলা যায়। ফিনিক্সের পেলোডগুলো হচ্ছে:
- রোবোটিক বাহু - ভূপৃষ্ঠের ০.৫ মিটার পর্যন্ত খনন করতে পারে। এর কাজ মাটি ও ধূলির নমুনা সংগ্রহ করা।
- রোবোটিক বাহুর ক্যামেরা - রোবোটিক বাহুর হাতার সাথে যুক্ত। এটা দিয়ে প্রথমেই নমুনা সংগ্রহের অঞ্চলের ছবি তোলা হয়, সেখান থেকে কি ধরণের নমুনা পাওয়া যাবে তা এই ছবির মাধ্যমেই বিশ্লেষণ করা হয়।
- সার্ফেস স্টেরিও ইমেজার - নভোযানের মূল ক্যামেরা। পাথফাইন্ডারের সাথে যুক্ত ক্যামেরার চেয়ে এর রিজলিউশন অনেক বেশী। এর মাধ্যমে মঙ্গলের আর্কটিক অঞ্চলের উচ্চ রিজলিউশন ছবি তোলা হয়।
- থার্মাল অ্যান্ড ইভল্ভ্ড গ্যাস অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম টেগা (TEGA)। এতে উচ্চ তাপমাত্রার চুল্লীর সাথে ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্র যুক্ত আছে। এরকম আটটি ওভেন আছে। প্রতিটি ওভেন একটি করে নমুনা বিশ্লেষণ করতে পারে। বুঝতেই পারছেন, এর মাধ্যমে সংগৃহীত নমুনায় কি কি পদার্থ আছে তা খতিয়ে দেখা যাবে।
- মার্স ডিসেন্ট ইমেজার - সংক্ষিপ্ত নাম মার্ডি (MARDI)। এর মাধ্যমে অবতরণের সময় মঙ্গল পৃষ্ঠের ছবি তোলার কথা ছিল। কিন্তু কিছু তথ্য হারিয়ে যাওয়ার কারণে অবতরণের সাত মিনিটে সে কোন ছবিই তুলতে পারেনি।
- মাইক্রোস্কপি, ইলেকট্রোকেমিস্ট্রি অ্যান্ড কন্ডাক্টিভিটি অ্যানালাইজার - সংক্ষিপ্ত নাম মেকা (MECA)। এর মধ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র আছে:
- আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র: এর কাজ মঙ্গল থেকে সংগৃহীত নমুনায় উপস্থিত রেগোলিথের ছবি তোলা। ভূপৃষ্ঠে মৃত্তিকা স্তরের নিচেই রেগোলিথ স্তর থাকে, রেগোলিথ স্তরের নিচে থাকে অধিশিলার স্তর। তাই অধিশিলার উপরে অবস্থিত আলগা শিলাবস্তুর আচ্ছাদনকেই রেগোলিথ বলা যায়।
- পারমাণবিক বল অণুবীক্ষণ যন্ত্র: আলোক অণুবীক্ষণের কাছে প্রেরিত নমুনার সামান্য অংশ নিয়ে কাজ করতে পারে। সে আট সিলিকনের টিপ দিয়ে এই নমুনা স্ক্যান করে এবং সিলিকন টিপ থেকে নমুনার বিকর্ষণের পরিমাণ নির্ণয় করে।
- ওয়েট কেমিস্ট্রি গবেষণাগার: এখানে চারটি প্রকোষ্ঠে আছে। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে মঙ্গলের নমুনার সাথে পৃথিবীর পানির মিশ্রণ ঘটানো হয়। এর ফলে মঙ্গলের মাটিতে উপস্থিত দ্রবণীয় উপাদানগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রধানত ক্ষার ধাতুর আয়নগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়। এর মাধ্যমে মঙ্গল জীবন বিস্তারের জন্য কতটা সহায়ক হতে পারে তা নির্ণয় করা সম্ভব।
- স্যাম্প্ল হুইল ও ট্রান্সলেশন স্টেজ: ৬৯টি নমুনা ধারকের মধ্যে ৬টি এখানে অবস্থিত। এগুলোর মাধ্যমে রোবটিক বাহুর কাছ থেকে নমুনা নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর কাছে পাঠানো হয়।
- থার্মাল অ্যান্ড ইলেকট্রিকেল কন্ডাক্টিভিটি প্রোব - সংক্ষিপ্ত নাম টিইসিপি (TECP)। এতে পাঁচটি সন্ধানী যন্ত্র আছে যা দিয়ে নিম্নলিখিত পরিমাপগুলো করা হয়:
- মঙ্গলীয় মাটির (রেগোলিথ) তাপমাত্রা
- তাপীয় পরিবাহিতা
- তড়িৎ পরিবাহিতা
- পরাবৈদ্যুতিক প্রবেশ্যতা (dielectric permittivity)
- বায়ুর দ্রুতি
- পরিবেশের তাপমাত্রা
- আবহাওয়বিজ্ঞান স্টেশন - নাম থেকেই এর কাজ বোঝা যাচ্ছে। এর সাথে বায়ু নির্দেশক এবং চাপ ও তাপ সেন্সর যুক্ত আছে। এগুলোর মাধ্যমে সে মঙ্গলের আবহাওয়া বিশ্লেষণ করে চলে।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন